অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অবিলম্বে শেখ হাসিনার যে পুলিশ বাহিনী তিনি যেভাবে তৈরি করেছিলেন সেই পুলিশ বাহিনীর মধ্যে যারা দায়ী অপরাধী অতি দ্রুত তাদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আমরা বিএনপির পরিবারের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ছাত্রদের দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা সরকারের মধ্যে থেকে পুলিশ বাহিনীকে মদদ দিয়েছে এই মাসুম বাচ্চাদের হত্যা করার জন্য তাদেরও অতিদ্রুত বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, পুলিশকে আন্দোলনে, বিক্ষোভে শর্টগানের মতো নিষ্ঠুর অস্ত্র নিষিদ্ধ করা এটিও এই সরকারের দায়িত্ব। কারণ এই শিশু-কিশোরদের রক্তে রঞ্জিত পথে আজকের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জনগণের আকাঙ্ক্ষার পরিপূরক হিসেবে সরকারকে কাজ করতে হবে- জনআকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই কাজ করতে হবে।
রিজভী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্র নায়করা বিভিন্ন অর্জন রেখে যায় আর আমরা শেখ হাসিনার অর্জন দেখলাম হাসপাতালে মাসুম বাচ্চারা কাতরাচ্ছে। ঢাকা মহানগরের একটির পর একটি সরকারি হাসপাতালে ১২ বছরের শিশু ১৬ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ২৪ বছরের তরুণরা আজকে শর্টগানের গুলিতে পুলিশের বেদম প্রহারে তারা আজও মূত্যুর সাথে লড়ছে। এই যে বিভীষিকা এই বীভৎষতা এটি হচ্ছে সাবেক অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। তিনি সারা বাংলাদেশকে স্তব্ধ করার জন্য কণ্ঠ রোধ করার জন্য প্রতিবাদী উচ্চারণ না করার জন্য তিনি পুলিশকে অস্ত্রসজ্জিত করে যারা গণতন্ত্রতামী মানুষ তাদের নিপিড়ন নির্যাতন করেছেন।
রিজভী আরও বলেন, এবারের আন্দোলন অভূতপূর্ব আন্দোলন। এই আন্দোলনে আলো পিয়াসী শিশু-কিশোররা তারা তাদের সবকিছু উজার করে দিয়েছে। পায়ে গুলি খাচ্ছে কিন্তু হাত প্রসারিত করে তারা সেই গুলিকে আমন্ত্রণ করেছে। এই অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত আমরা সাঈদের দেখেছি রংপুরের পাশাপাশি ঢাকার রাজপথের অলিতে গলিতে পুলিশ গুলি করে কতজনকে যে হত্যা করেছে তার কোনো শেষ নেই।
রিজভী বলেন, এই ভয়ংকর স্বৈরাচারী সরকার তার পুলিশ বাহিনীকে তৈরি করেছিল গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য। এইরকম পরিস্থিতিতে যাদের অবদানের মধ্য দিয়ে রক্ত স্রোতধারা বইয়ে দিয়ে যারা দেশের মানুষকে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার যারা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন সেই সমস্ত নিহত ছাত্রজনতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। যারা গুরুতর আহত অবস্থায় রয়েছেন ঢাকা মহানগরসহ সারা বাংলাদেশের হাসপাতালে যারা কাতরাচ্ছেন যারা মৃত্যু যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে আছেন আমি তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন