ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেছেন, যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করবে, চাঁদাবাজি করবে, তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরবে। কেউ রেহাই পাবেন না। তারা যদি দলের কেউ হয়, দলও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আতঙ্কিত নাগরিকদের স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে ধারাবাহিক কর্মসূচির আওতায় বায়তুল মোকাররম মার্কেট, ঢাকা স্টেডিয়াম, মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম এলাকায় বসবাসরত সব শ্রেণির নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ছাত্রদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমি তাদের স্যালুট জানাই। এই নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। কেউ যেন কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।
মজনু বলেন, এদেশের হিন্দু ভাইদের আমি সংখ্যালঘু বলতে চাই না। তারাও আমাদেরই মতো আরেকজন। আমার ভাই, আমার বোন, আমার চাচা, তাদেরকেও রক্ষা করতে হবে। কেউ হিন্দুদের বাসাবাড়ি, মন্দির, দোকানপাটে আক্রমণ করবেন না। তাহলে আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো পার্থক্য থাকবে না।
রফিকুল আলম মজনু আরও বলেন, এই বাংলাদেশে কোনো বৈষম্যের ঠাঁই হবে না। প্রত্যেকটা খুন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতি, লুটপাটের বিচার হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ তাদের নেতাকর্মীরা ঢাকাসহ সারা দেশে যত খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি করেছে সব তদন্ত করে সব অপরাধীর বিচার করতে হবে। একই সময়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে তারা হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। অবিলম্বে আটক সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও তাদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের কিছু দুষ্কৃতকারী নিজেদের রক্ষা করতে ‘নব্য’ বিএনপি হতে চেষ্টা করছে। তাদের দুর্নীতি, অনাচার, লুটপাট আর মানুষের ওপর অত্যাচারকে আড়াল করতে তারা এ কৌশল নিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকতে হবে। সাবধানে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মী যাতে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।
মজনু বলেন, এ আওয়ামী লীগ আজ দেশের সবচেয়ে ঘৃণিত দল। ওই দলটির নেতাকর্মীদেরও মানুষ এখন চরম ঘৃণা করে। তারা হচ্ছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে তারা জুলুম করেছে, নির্যাতন করেছে, দখল করেছে, দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে। তবে এ স্বৈরাচারের পতনের মধ্য দিয়ে এখন থেকে দেশে আর কোনো চাঁদাবাজি চলবে না, দখল চলবে না, লুট করা চলবে না।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকারের জুলুম নির্যাতন থেকে বাংলাদেশ আজ মুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। দেশের বীর ছাত্র ও জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার দেশ থেকে পালিয়েছে। দেশের জনগণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা, যে চাওয়া সেটা পূরণে বিএনপি নেতাকর্মীরা আজ বদ্ধপরিকর। এটাই এখন তাদের দায়িত্ব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক হারুন অর রশীদ, এস কে সিকান্দার কাদির, সাবেক সদস্য আব্বাস, কাউন্সিল নাসরিন জাহান পুতুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, শ্রমিকদলের সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজসহ শাহাবাগ থানা, পল্টন থানা ও ওয়ার্ড বিএনপি নেতারা।
মন্তব্য করুন