সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে মাঠে নামাটা এখন প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক কর্তব্য। তাদের প্রতিহত করতে না পারলে সন্ত্রাস আর মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘নিজেদের সীমাহীন ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এখন মিথ্যার বাড়াবাড়ি তাদের একমাত্র সম্বল। মিথ্যা দিয়েই তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে বলে একটা অযৌক্তিক ধারণা পোষণ করে। তাদের সব কলাকৌশল এখন কাজে লাগছে না। লজ্জা শরম হারিয়ে রাজনেতা থাকার দিন শেষ হয়ে এসেছে।’
শুক্রবার (২৮ জুলাই) রাতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: শনিবার ঢাকার যেসব পয়েন্টে অবস্থান নেবে বিএনপি
রিজভী বলেন, ‘আগামীকাল ঢাকার ৫টি প্রবেশপথে বিএনপি অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। আজকের সমাবেশ থেকে ঘোষিত বিএনপির উদ্যোগে আগামীকাল শনিবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার প্রবেশপথে বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি সফল করার জন্য ঢাকাবাসীসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব নেতাকর্মীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
আগামীকাল যেসব পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে তার বিবরণ- গাবতলী, উত্তরা, নয়াবাজার ইউসুফ মার্কেট, শনিরআখড়া, মুক্তি সরণি।
রিজভী আরও বলেন, ‘জনসাধারণের স্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এক চরম দুঃসময়ের সৃষ্টি করেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করে বিত্ত-বৈভবের বিলাসের মধ্যে আওয়ামী নেতাদের ব্যক্তিগত কল্পস্বর্গ ভেঙে পড়ার সম্ভাবনায় তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। এখন অবৈধ ক্ষমতাকে জোর করে আঁকড়ে রাখার জন্য হত্যা ও সহিংসতার পথই অবলম্বন করেছে ক্ষমতাসীন গুম-খুনের হোতারা।’
তিনি বলেন, ‘হিমঠান্ডা ত্রাস আর আতঙ্কের পরিবেশে গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু ভোটের আওয়াজকে স্তিমিত করার পুরোনো পরিকল্পনায় মেতে আছে অবৈধ সরকার। কিন্তু দেশের জনগণ অপমানিত, লাঞ্ছিত, নিপীড়িত এবং দমনের নিষ্ঠুর যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে এখন চূড়ান্ত প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। হাজারো সন্ত্রাসের বেড়াজাল ছিন্ন করে জনগণ স্থিতি, শান্তি ও নির্ভয়ে কথা বলাসহ সব মৌলিক মানবাধিকার ফিরিয়ে আনার দুর্বার সংগ্রামে শামিল হতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের মহাসমাবেশ অধিকার ফেরানোর আন্দোলনের নবতরঙ্গের এক অনন্য ছবি। দুঃশাসন আর দুঃসময়ের স্রষ্টা শেখ হাসিনার পদত্যাগেই নিশ্চিত হবে মৃত গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হলেই মানুষের ভোটাধিকার ফিরে আসবে, বহুদলীয়-বহুমাত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। জনগণ তাদের মালিকানা ফিরে পাবে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শুক্রবারের মহাসমাবেশ ছিল ঐতিহাসিক এবং সাম্প্রতিককালের এক অবিস্মরণীয় জমায়েত। এই জমায়েতকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ঢাকাসহ দেশব্যাপী মহাতাণ্ডব শুরু করে। ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে, যানবাহন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, পকেট তল্লাশি করা হয়েছে, মোবাইল ফোন চেক করা হয়েছে, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন বন্ধ করার পরেও মানুষের ধাবমান স্রোতকে রুদ্ধ করা যায়নি। হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতিকে মানুষ যে ঘৃণা করে, আজকের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করে এটিরই জবাব দিয়েছে বিপুল মানুষ।’
মন্তব্য করুন