বিএনপির ঢাকায় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তার ৪৭৩ জন নেতাকর্মীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া চারজনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এদিন ঢাকার মহানগর এলাকার ৪১টি থানায় পুরান বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৩৬৮ জন এবং চারটি থানা থেকে সন্দেহজনক হিসেবে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ও ১৫৪ ধারায় ৯৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন পুলিশ।
এছাড়া ঢাকা জেলার সাতটি থানা থেকে মোট ১৩ জন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এসব নেতাকর্মীর পক্ষে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত ৪৭৩ জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া ঢাকা জেলার দুই থানার মামলায় চারজনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে রাজধানীর রমনায় ৩ জন, শাহবাগে ১০ জন, ধানমণ্ডিতে ৬ জন, হাজারীবাগে ২ জন, যাত্রাবাড়ীতে ৫ জন, ডেমরায় ৮ জন, শ্যামপুরে ১০ জন, কদমতলীতে ৭ জন, মতিঝিলে ৯ জন, পল্টনে ৮ জন, রামপুরায় ২ জন, সবুজবাগে ১ জন, তেজগাঁও, হাতিরঝিল ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ১২ জন, পল্লবীতে ৩০ জন, কাফরুলে ৩৯ জন, মোহাম্মদপুরে ১৫ জন, আদাবরে ২ জন, গুলশানে ১২ জন, বনানীতে ১৫ জন, বাড্ডায় ১৪ জন, ভাটারায় ৩ জন, উত্তরখানে ৬ জন, উত্তরা পশ্চিমে ২ জন, তুরাগে ১০ জন, কোতয়ালীতে ২ জন, বংশালে ৯ জন, লালবাগে ৯ জন, চকবাজারে ১ জন, কামরাঙ্গীরচরে ১৫ জন, কলাবাগানে ৬ জন, নিউমার্কেটে ১ জন, দারুস সালামে ৫৭ জন, খিলগাঁও ৭ জন, ক্যান্টনমেন্টে ৩ জন, খিলক্ষেতে ৩ জন, সূত্রাপুরে ১৫ জন এবং গেন্ডারিয়ায় ২ জন, ওয়ারী থানার মামলায় গ্রেপ্তার ৭ জন কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ও ১৫৪ ধারায় সন্দেহজন হিসেবে ৯৬ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়। যার মধ্যে রাজধানীর পল্টনে ৪৩ জন, বংশালে ১৮ জন, কোতয়ালীতে ২৫ জন ও ধানমণ্ডি থানা থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে রাজধানীর শাহজাহানপুর, রূপনগর, ভাসানটেক, মিরপুর মডেল, শেরে বাংলা নগর, বিমানবন্দর, দক্ষিণখান, উত্তরা পূর্ব, শাহ আলী ও মুগদা থানায় বিএনপির কোনো নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়নি।
মহানগর এলাকার বাইরে ঢাকা জেলার ৭টি থানা থেকে মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। যার মধ্যে ৪ জনকে একদিন করে রিমান্ড এবং বাকি ৯ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবা কালবেলাকে বলেন, ভীতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যা গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছু না। মিছিল, মিটিং সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এ ধরনের ঘটনার দুঃখজনক ছাড়া কিছু না।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আব্দুল্লাহ আবু কালবেলাকে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ তাদেরই গ্রেপ্তার করছে। গ্রেপ্তার করলেই যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হবে যাবে সেটা বলা ঠিক না।
মন্তব্য করুন