আগামীকাল শুক্রবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। পরে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আগে থেকেই দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা ঢাকায় অবস্থান করার কারণে বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। অন্যদিকে জলকামান, রায়ট কার ও প্রিজনভ্যানসহ রণসজ্জায় প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ। তবে গ্রেপ্তার এড়াতে কৌশলী ভূমিকায় রয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন : ২৩ শর্তে সমাবেশের অনুমতি পেল বিএনপি-আ.লীগ
বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়, জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতারাও তৃণমূল থেকে আসা নেতাকর্মীদের সরে যেতে অনুরোধ করছে। অনুরোধ মেনে তারাও অবস্থান নিচ্ছে নয়াপল্টন এলাকার গাজী ভবনের গলি, ভাসানী হল সংলগ্ন গলী, পল্টন জামে মসজিদ ও সিটি হাট মার্কেট সংলগ্ন গলিতে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা জেলার জীবন নগর থানার সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা শ্রমিক দলের জেলা সহসভাপতি মো. আইয়ুব আলী বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা যে কোনো মূল্যেই হোক গ্রেপ্তার এরিয়ে এখানে সমাবেশে উপস্থিত থাকব। দলীয় নির্দেশনা আছে, সবাই যেন আমরা এক জায়গায় না থাকি। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে আমাদের হাঁটাচলার ওপরে থাকতে বলা হয়েছে। এক জায়গায় থাকলে যে কোনো সময় আমরা গ্রেপ্তার হতে পারি। তাই গ্রেপ্তার এড়াতে পুলিশের কথা মতো আমরা কার্যালয়ের সামনের স্থান থেকে চলে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন : পুলিশের ১০ মিনিটের আলটিমেটাম, ৫ মিনিটে রক্ষা করল বিএনপি নেতাকর্মীরা
শুক্রবারের সমাবেশে যোগ দিতে আসা ভোলার চরফ্যাশন দক্ষিণ আইচা থানা নজরুল নগর ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা এই সরকারের পদত্যাগ চাই। সেটা যে কোনো মূল্যেই হোক। আমরা ঢাকায় এসেছি এই সরকারের পতন না ঘটিয়ে বাড়ি ফিরব না। দেশের মানুষ যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি সেটা আর মেনে নেওয়া যায় না। তিন দিন আগে ঢাকা এসেছি, যত দিন দরকার হয় থাকব।’
এদিকে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে পল্টন এলাকা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সকাল থেকেই ফকিরাপুল থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত নয়াপল্টন ভিআইপি সড়কে কয়েকশত ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পল্টন জামে মসজিদের সামনে একটি রায়ট কার ও জল কামান এবং হোটেল ক্রিস্টাল প্যালেসের সামনে একটি করে রায়ট কার ও জল কামানসহ প্রিজনভ্যান প্রস্তুত রাখতে দেখে গেছে।
আরও পড়ুন : পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে ঘরে বসে থাকবো না : চরমোনাই পীর
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির বিষয়ে ডিএমপি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ‘এটি একটি ব্যস্ততম সড়ক, এখানে যেন পার্টি অফিসের সামনে নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে সড়ক চলাচল বন্ধ না করে দেয় সেটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাইছি। জনদুর্ভোগ এড়াতে এই অবস্থান। তাদের সমাবেশ যখন হবে তখন বিষয়টা দেখা যাবে। এখন তাদের এখানে অবস্থান নিতে দেওয়া হবে না।’
নয়াপল্টন এলাকা, ফকিরাপুল, নাইটিঙ্গেল মোড়, দৈনিক বাংলা, পুরানা পল্টন ও বিজয় নগর এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতিসহ পুলিশি উপস্থিতি যেমন দেখা গেছে তেমন বিএনপি নেতাকর্মীরাও আছেন। খণ্ড খণ্ড দলে বিভক্ত হয়ে এসব নেতাকর্মীরা সরকার পতনের নানা স্লোগান দিচ্ছেন আবার স্থান পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন