আওয়ামী নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় বৈঠকে বংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
আজ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাদেক আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
যৌথ এ বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে একটি আদর্শিক, সুসংগঠিত ও নিয়মতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের প্রচলিত সংবিধান মেনে শান্তিপূর্ণ উপায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও করে যাবে, ইনশাআল্লাহ। জাতীয় উন্নয়ন-অগ্রগতি ও ছাত্রবান্ধব সংগঠন হিসেবে দেশের ছাত্রসমাজ ও আপামর জনগণের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে এ সংগঠন। সুতরাং ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার যে আওয়ামী সিদ্ধান্ত তা সম্পূর্ণ বেআইনি, জাতি বিধ্বংসী, এখতিয়ার বহির্ভূত ও সংবিধান পরিপন্থি। একই সঙ্গে এটা ছাত্রসমাজের সঙ্গে স্রেফ প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা তাদের এই হঠকারি ও এখতিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে অবৈধ সরকার আজ দিশাহারা। তারা এই আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে এমন পাশবিক গণহত্যার নজির পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষ ও বিশ্ববিবেক তাদের এই গণহত্যার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের দৃষ্টি ও প্রেক্ষাপট ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে সরকার শুরু থেকেই ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিরোধীদলের ওপর ক্রমাগত দোষারোপ করে যাচ্ছে। তাদের এই অপপ্রচার জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা না পেলে তারা এবার ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। তাদের হঠকারি সিদ্ধান্ত গণমানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়। এটা দেশকে পর্যায়ক্রমে একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়ার শামিল।
এতে আরও বলা হয়, গণভবন কোনো রাজনৈতিক কার্যালয় নয়। এটি জনগণের টেক্সের অর্থে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। অথচ সেটাকে রাজনৈতিক কার্যালয়ে পরিণত করে সেখানে বসে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন ১৪ দল অন্য একটি বৈধ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, এটা নিতান্তই হাস্যকর। কোনো রাজনৈতিক দল অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে পারে না। এটা সংবিধান পরিপন্থি। একটি দল আর একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার সংস্কৃতি কোনো গণতান্ত্রিক দেশের নিয়ম হতে পারে না। স্পষ্টতই এটা স্বৈরাচারী আচরণের বহিঃপ্রকাশ। এটা একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। দেশবাসী তাদের এই বেআইনি, আত্মঘাতী ও হঠকারি সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না।
ছাত্রশিবিরকে নিয়ে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ছাত্রসমাজসহ দেশের সব মানুষ এগিয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সত্য ও সুন্দরের পথে ছাত্রশিবিরের যে পথচলা তা অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন