অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার, রাজনৈতিক দমনপীড়ন, গণগ্রেপ্তার অভিযান ও বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপানোর পরিবর্তে ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়ে দেশে শান্তি ও স্বস্তির পরিবেশ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একইসঙ্গে সরকারের জুলুম, নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হওয়ার জন্য সব শ্রেণিপেশা, রাজনৈতিক দলগুলো ও দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সোমবার (২৯ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে জুলুম-নির্যাতন ও গণগ্রেপ্তার চালিয়ে এবং রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে দেশে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির অবতারণা করেছে। দেশের বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা চলমান হত্যার জন্য সরকারের বাড়াবাড়িকে দায়ী করেছেন। তারা সরকারকে দমনপীড়ন বন্ধ করে দেশে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিশিষ্ট নাগরিকরা সরকারের দায়-দায়িত্ব বিরোধীদলের ওপর চাপানোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
জামায়াতের আমির বলেন, আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করার জন্য সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছে। কূটনীতিকরা সরকারকে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন এবং কতজন লোক নিহত হয়েছে তার তথ্য জানতে চান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত রোববার সচিবালয়ে বলেছেন, তিনি ১৪৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাস্তবে নিহতের সংখ্যা শত শত। আর আহতের সংখ্যা হাজার হাজার। পঙ্গুত্ববরণ করেছেন পাঁচ শতাধিক লোক। এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে সরকারের।
তিনি বলেন, যে সরকার নিজেই রক্তাক্ত ঘটনা সংঘটিত করে, তাদের দ্বারা নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার সম্ভব নয়। তাই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করে গণহত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাদের বিচারের মুখে সোপর্দ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশে ইন্টারনেট সেবা নেই। ব্যাংক, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক যোগাযোগ এবং বিদেশগামীদের যাতায়াত সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছেন। একইসঙ্গে জামায়াতের নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, ড. ছামিউল হক ফারুকী, সিলেট মহানগরী আমীর ফখরুল ইসলামসহ সারা দেশে গ্রেপ্তারকৃত সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন