রাজধানীতে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিএনপির মহাসমাবেশের দিন ছিল। কিন্তু গতকাল বুধবার রাতে হঠাৎ করেই সমাবেশ একদিন পিছিয়ে দেয় দলটি। তবে ইতোমধ্যে বাইরে থেকে বহু নেতাকর্মী ঢাকায় প্রবেশ করেছেন। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই নয়াপল্টনের দলটির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালে ভিড় বাড়তে থাকে। নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়ায় সড়কের একপাশ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অপরপাশ দিয়ে যান চলাচল করতে হয়।
বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, নয়াপল্টন কার্যালয়ের পশ্চিম পাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন। তাদের সঙ্গে প্রিজনভ্যান ও সাঁজোয়া যান রয়েছে। এ সময় পুলিশকে সহনশীল দেখা যায়।
আরও পড়ুন: একই শর্তে সমাবেশের অনুমতি পাবে দুদল : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
একদিনে পুলিশের উপস্থিতি, অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের স্লোগান চলতে থাকে। সেখানে ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীরাও ছিলেন।
সড়ক ছোট হয়ে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে জানিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ১০ মিনিটের মধ্যে সড়ক ছেড়ে দিতে আলটিমেটাম দেয় পুলিশ।
১০ মিনিটের এই আলটিমেটাম মাত্র ৫ মিনিটেই রক্ষা করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। পুলিশের নির্দেশনার মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যে রাস্তাটি ফাঁকা হয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনিও কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে থাকা নেতাকর্মীদের চলে যেতে বলেন। এ সময় রিজভী বলেন, ‘আপনারা আজ চলে যান। আজ আমাদের কোনো সমাবেশ নেই। আগামীকাল সমাবেশ। বিভিন্ন জেলা থেকে কষ্ট করে এসেছেন, এ জন্য ধন্যবাদ। আগামীকাল আপনারা চলে আসবেন।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে জিজ্ঞেস করা হলেও তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে হেসে চলে যান।
এদিকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কাল সমাবেশের অনুমতি পাবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে বলেন, ‘তাজিয়া মিছিল ও দুটি ভিভিআইপি কর্মসূচি আছে, নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ফোর্স থাকলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে, অন্যথায় না।’
তবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নয়াপল্টনেই হবে বিএনপির মহাসমাবেশ।’ বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সারা দেশের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তার নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের নেতাকর্মীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। হাতের কব্জি কেটে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় অনেক নেতাকর্মীকে ক্ষমতাসীনরা আক্রমণ চালাচ্ছে। তবুও আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। কোনো ধরনের সহিংসতা আমরা বিশ্বাস করি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলব, দমননীতি পরিহার করে বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচি সফলে সহযোগিতা করবেন।’
মন্তব্য করুন