ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, এই সরকারের কোনো এমওইউ স্বাক্ষর করার সাংবিধানিক অধিকার নেই। কারণ, তারা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি নয়।
রোববার (৭ জুলাই) রাজধানীর মগবাজারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এলডিপির এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে অলি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেনতেনভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। দেশের এবং জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতার বালাই নেই। তাদের কারণে দেশে ন্যায়বিচার নির্বাসিত, মানবাধিকার পদদলিত। তাদের শুধু চাই, হালুয়া-রুটি আর মসনদ।
অলি আহমদ বলেন, ১৯৯৬ সালে অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমরাও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারতাম। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মতামতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে পুনঃনির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিলেন। আপনারাও ২০১৪ সালে পুনঃনির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দুঃখের বিষয় হলো, আপনাদের কথা এবং কাজের মধ্যে কখনো কোনো মিল নেই। আপনারা সব সময় সুযোগের সন্ধানে থাকেন। দেশের ও জনগণের কথা মোটেও আপনাদের মস্তিষ্কের মধ্যে নেই। শুধু চাই হালুয়া-রুটি আর মসনদ। মনে রাখবেন, সামনে চরম দুঃসময় অপেক্ষা করছে। আল্লাহ এবং রাসুলের বাণী সদা সত্য। এখনো সময় আছে, সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেন।
তিনি বলেন, ইদানিং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধানদের দুর্নীতির ফিরিস্থি ক্রমান্বয়ে বের হয়ে আসছে। এই সরকারের পৃষ্ঠপোষক ব্যবসায়ীরা, কর্মকর্তা/কর্মচারীরা দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে দেশে ও বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করে চলেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- এরা সকলে সরকারের ক্ষমতার ভাগীদার। তাই সরকার দুর্নীতিবাজদেরকে টাকা পাচার ও নিরাপদে দেশ ত্যাগ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। শাসন ব্যবস্থা, ন্যায় বিচার ও দেশের অর্থনীতি বর্তমানে এই লুটেরাদের হাতে জিম্মি। বাস্তবিক পক্ষে তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না, অথচ সাজানো মামলায় জেলে ঢুকানো হচ্ছে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের। সরকারের দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি এবং মদদদাতাদেরও বিচার হওয়া প্রয়োজন।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশ আজ দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে। সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের যেকোনো সময় দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগ রয়েছে। কারণ, দেশ ও প্রশাসন পুরাতন জমিদারি পন্থায় পরিচালিত হচ্ছে। যাকে ইচ্ছা ঋণ দেওয়া হয়, যাকে ইচ্ছা ঋণের সুদ মওকুফ করা হয়, যাকে ইচ্ছা দুর্নীতি করার পর টাকা পাচার করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ও সময় দেওয়া হয়। অথচ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও গরিব কৃষকদের সুদ মওকুফ করা হয় না। প্রত্যেক নাগরিকের জন্য একই ধরনের আইন বা নিয়ম হওয়া উচিত। দেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা আমাদের সকলের কর্তব্য।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার, ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি প্রমুখ।
মন্তব্য করুন