শিক্ষক ও ছাত্রদের আন্দোলনের দিকে ইঙ্গিত করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, রাজপথ আবার সরগরম হচ্ছে। আবারও বিরোধী দল মাঠে নামছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অষ্টম সংসদের বিরোধীদলের প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে পুলিশি হামলায় ১৪ বছরেও দোষীদের বিচার না হওয়ার প্রতিবাদে জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে জয়নুল আবদিন ফারুক উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকারকে যেতে হবে। কারণ, এটা কোনো সরকারই নয়। সামনে আমরা এমন আন্দোলন গড়ে তুলবার চেষ্টা করছি, যাতে এই সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হয়। একটা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে- সেই দাবিতে আমরা আন্দোলন করব ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, একটা সরকারের আমলে যাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছে সেই সরকারই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দিয়েছে, যাকে প্রধান সেনাপতি বানানো হয়েছে তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিয়েছে, যিনি পুলিশ বাহিনীর প্রধান ছিলেন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কাহিনি এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এটা একটা সরকার হলো? জিনিসপত্রের দাম কমাতে পারে না, আমার-আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারে না। কিন্তু কোর্টকে দিয়ে কোটা তুলে দিতে পারে, কোর্টকে দিয়ে এমন এমন কাজ করে যাতে জনগণের অধিকার খর্ব হয়।
পেনশন নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা নতুন পেনশন স্কিম করেছে সেটা মানে না, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ। কোনো মন্ত্রী কোনো কথা বলছেন না। পত্রিকায় দেখলাম, আজকে না কি সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাদের সঙ্গে বসবেন, কিন্তু পরে শুনলাম তা স্থগিত করা হয়েছে। কোটা বাতিল করবার পরে গতকালকের (বুধবার) মিছিল দেখেন, শিক্ষকদের ধর্মঘট দেখেন- রাজপথ আবার সরগরম হচ্ছে।
সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকসমূহ প্রসঙ্গে মান্না বলেন, সরকার সামগ্রিকভাবে বলছেন এটা চুক্তি নয়। কিন্তু যখন সমঝোতা স্মারক করা হয়- তার মানে বুঝানো হয়, এটা চুক্তিতে গড়াবে। আমরা বলছি, এসব বাতিল করেন। অন্যথায় সরকারের পরিণতি খারাপ হবে এককথায়।
মান্না আরও বলেন, এই সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারে না। জিনিসের দাম কমাতে পারে না, জনগণের ভরণ-পোষণ দিতে পারে না। এরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় না, মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করে। এখন পর্যন্ত জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর হামলার বিচার করা হয়নি। এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।
সংগঠনের সভাপতি মনজুর রহমান ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মন্তব্য করুন