কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:১২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আদালতকে দিয়ে জনগণের অধিকার খর্ব করছে সরকার : মান্না

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি : কালবেলা
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি : কালবেলা

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, জনগণের অধিকার খর্ব করতে সরকার আদালতকে ব্যবহার করছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, একটা সরকারের আমলে যাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছে এ সরকারই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দিয়েছে, যাকে প্রধান সেনাপতি বানানো হয়েছে তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিয়েছে, যিনি পুলিশ বাহিনীর প্রধান ছিলেন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কাহিনি এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এটা একটা সরকার হলো? জিনিসের দাম কমাতে পারে না, আমার-আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারে না। কিন্তু কোর্টকে দিয়ে কোটা তুলে দিতে পারে। কোর্টকে দিয়ে এমন এমন কাজ করে যাতে জনগণের অধিকার খর্ব হয়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে অষ্টম সংসদের বিরোধীদলের প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে পুলিশি হামলায় ১৪ বছরেও দোষীদের বিচার না হওয়ার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।

২০১১ সালে সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে মানিক মিয়া এভিনিউতে বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপের নেতৃত্বে বিএনপির সংসদ সদস্যের মিছিলে পুলিশের ন্যক্কারজনকভাবে হামলায় বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ গুরুতর আহত হন।

সংগঠনের সভাপতি মনজুর রহমান ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পেনশন নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা নতুন পেনশন স্কিম করেছে সেটা মানে না, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ। কোনো মন্ত্রী কোনো কথা বলছেন না। আমি পত্রিকায় দেখলাম, আজকে না কি সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাদের সঙ্গে বসবেন কিন্তু পরে শুনলাম তা স্থগিত করা হয়েছে। তার মানে আমরা মাঝে মাঝে বলি না, একটা ফ্যারিঙ্গা বাজানো তৈরি করতে পারে। কোঠা বাতিল করার পরে গতকালকের মিছিল দেখেন, শিক্ষকদের ধর্মঘট দেখেন, রাজপথ আবার সরগরম হচ্ছে। আবারও বিরোধী দল মাঠে নামছে। আমি আপনাদের বলি, কেউ কেউ বলেন, ভাই আগেও বলেছেন, কিন্তু সরকার তো যাইনি। আমি মানি যায়নি, কিন্তু যাবে। সরকারকে যেতে হবে। এ সরকার থাকার সরকার নয়। এটা কোনো সরকারই নয়।

ট্রানজিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন, ট্রানজিট দিয়েছি তাতে ক্ষতি কি? আরে ট্রানজিট তো দেননি, করিডোর দিয়েছেন। আপনার দেশ দিয়ে ট্রেন ঢুকবে, সেই ট্রেন আবার তাদের দেশেই ঢুকবে। এই ট্রেন মালবাহীও হতে পারে, এই মালগাড়ির মধ্যে কী থাকতে পারে তা আমরা জানি না। কোনো দেশ যদি মনে করে, মালগাড়ির মধ্যে অস্ত্র আছে, আপনাদের চতুর্দিকে সেভেন সিস্টার্সের মধ্যে গোলমালগুলো চলছে, তারা যদি মনে করে এর মধ্যে অস্ত্র আছে আমরা বাধা দেব। তার মানে হচ্ছে, বাংলাদেশকে আপনারা একদিকে চীন এবং ভারতের মধ্যে যে করিডোর তাদের মধ্যে সমস্যা করে তার জায়গা তৈরি করেছেন, আরেকদিকে আপনি ওইসব এলাকায় যত সব বিদ্রোহী আছেন তাদের উসকে দিচ্ছেন। দেশের স্বাধীনতার ওপরে এটা একটা বিপদ হতে পারে।

তিনি বলেন, একইভাবে ট্রানজিটের পাশাপাশি যেরকম করে স্যাটেলাইট চুক্তি করা হয়েছে, আমার দেশের মধ্যকার সব গোপন তথ্য ভারতের কাছে চলে যাবে। কেন তার সঙ্গে চুক্তি করতে হবে? একই প্রশ্ন করি, আমাদের আনবিক শক্তি বিকাশের জন্য ভারতের সঙ্গে কাজ করতে হবে কেন? সামগ্রিকভাবে বলছেন- এটা চুক্তি নয়, কিন্তু যখন সমঝোতা স্মারক করা হয় তার মানে বুঝানো হয়, এটা চুক্তিতে গড়াবে। আমরা বলছি, এসব বাতিল করেন। পরিণতি খারাপ হবে, এক কথায় সেই পরিণতি বিবেচনা করেই আমরা বলছি, এই সমঝোতা স্মারকের পরে এগুলো আর চলবে না।

মান্না আরও বলেন, এক কথায় এই সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারে না। এই সরকার জিনিসের দাম কমাতে পারে না, জনগণের ভরণপোষণ দিতে পারে না, ভোট দেয় না, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় না, মানুষের ওপর অত্যাচার করে, নির্যাতন করে, এখন পর্যন্ত জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর হামলার বিচার করা হয়নি। এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে। ভরসা রাখেন, আজ হোক, কাল হোক এর বিরুদ্ধে সেরকম আন্দোলনই গড়ে তুলবার চেষ্টা করছি। আমাদের যে দাবি আছে ‘তাকে চলে যেতে হবে, একটা অন্তর্বতী সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে’ সেই দাবিতে আমরা আন্দোলন করব ইনশাআল্লাহ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অসুস্থ কারারক্ষীর সঙ্গে জেলারের অমানবিক আচরণ

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদে এনআরবিসি ব্যাংকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

ইইউভুক্তির চেষ্টায় তুরস্ক / হাঙ্গেরি ঘিরে যে আশায় এরদোয়ান

কোটা আন্দোলন নেতাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠক 

পুলিশ না পারলেও মালিককে চিনে নিল মহিষ

কাল থেকে টিসিবির পণ্য পাবেন ফ্যামিলি কার্ডধারীরা

কোটা-পেনশন স্কিম বাতিলের আন্দোলন নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাল জামায়াত

বিক্ষোভে উত্তাল ইসরায়েল, অবরুদ্ধ রাজধানী

সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দিলেন আ.লীগ নেত্রী রানী

সাপের কামড়ে শিক্ষার্থীসহ দুজনের মৃত্যু

১০

মিডিয়া কি তবে আত্মহত্যায় প্ররোচনা জোগাচ্ছে!

১১

জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় শেখ হাসিনার ভূমিকা বিশ্বে অন্যতম : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

১২

রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে ৫ জনের মৃত্যু

১৩

বাবার স্বাধীন করা দেশ ব্যর্থ হতে পারে না : প্রধানমন্ত্রী 

১৪

এইচএসসি পরীক্ষায় দায়িত্বে অবহেলা, তিন শিক্ষককে অব্যাহতি

১৫

কোচের সঙ্গে সংঘর্ষে কেইনকে নিয়ে সংশয়

১৬

দেশের ১২ জেলায় নিয়োগ দেবে ইউএস-বাংলা

১৭

বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি কমলেও বাড়ছে বন্যার্তদের দুর্ভোগ

১৮

বিশ্বসেরা গোলকিপারকে চায় না ম্যানইউ

১৯

ঢাবির হলে ছাদের পলেস্তারা খসে আহত শিক্ষার্থী 

২০
X