কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:১৬ পিএম
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আওয়ামী লীগ নয়, জিয়া, খালেদা, এরশাদ দেশ বিক্রি করেছেন : প্রধানমন্ত্রী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশকে বিক্রি করে না বরং খালেদা জিয়া, এরশাদ ও জিয়াউর রহমান সেটা করেছেন।

তিনি বলেন, কারা দেশ বিক্রি করেছেন? এটা খালেদা জিয়া, এরশাদ ও জিয়াউর রহমান করেছেন। তারা দেশ বিক্রি করেছে। আওয়ামী লীগ দেশ বিক্রী করে না।

এই বিষয়ে, তিনি এই ত্রয়ীর আমলের বেশ কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করেন যার মধ্যে রয়েছে ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার দ্বারা ভারতের কাছে বাংলাদেশের গ্যাস বিক্রির জন্য মুচলেকা প্রদান।

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বুধবার (৩ জুলাই) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী তার সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময় কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য কোনো কোনো বিরোধী রাজনৈতিক মহলের ভারতের কাছে দেশ বিক্রীর অভিযোগের কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, আমরা ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। কারণ আমাদের গ্যাস আমেরিকান কোম্পানি উত্তোলন করছে, সেই গ্যাস তারা বিক্রি করতে চায় ভারতের কাছে। আমি সেটা আপত্তি করেছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের আগে অনেক কিছু হয়। যাই হোক খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হয়ে যায় এবং সেভাবে মুচলেকা দেয়। আমরা ভোট বেশি পেয়েছিলাম কিন্তু সিট আর পেলাম না, সরকার গঠন করতে পারলাম না। কারণ আমি গ্যাস বিক্রি করতে চাইনি। তো বিক্রিটা করে কে দেশকে। করে গেছে তো খালেদা জিয়া, করেছে এরশাদ, করেছে জিয়াউর রহমান, এরাই করে গেছেন। আওয়ামী লীগ করে না।

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে পৃথিবীটা গ্লোবাল ভিলেজ, একে অপরের ওপর ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, প্রভৃতির ওপর নির্ভরশীল। এগুলো দরজা বন্ধ করে থাকা যায় না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ট্রান্স-এশিয়া হাইওয়ে, ট্রান্স-এশিয়া রেলের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। আজকে ভারতকে আমরা ট্রানজিট দিলাম কেন? এটা নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া। আমাদের ট্রানজিট তো আছেই। ত্রিপুরা থেকে বাস চলে আসে ঢাকায়, ঢাকা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত তো যাচ্ছে। এতে ক্ষতিটা কি হচ্ছে। বরং আমরা রাস্তার ভাড়া পাচ্ছি। সুবিধা পাচ্ছে আমাদের দেশের মানুষ। অনেকে অর্থ উপার্জনও করছে।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বের সঙ্গে একটা যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা নেপাল-ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট করেছি ভারতের মধ্য দিয়ে। এটাতো কোনো একটা দেশ না, আঞ্চলিক ট্রানজিট সুবিধা এবং যোগাযোগ সুবিধার জন্য করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা নেপাল, ভুটান, ভারত, বাংলাদেশ এই চারটি দেশ নিয়ে প্রত্যেকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ট্রানজিটের ব্যবস্থা। আজকে নেপাল থেকে আমরা জলবিদ্যুৎ কেনা শুরু করতে যাচ্ছি, সেখানে গ্রিড লাইন করা, আমরা সেই চুক্তি করেছি, সেটা আমরা কার্যকরও করছি। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর যেসব রেলপথ, নৌপথ যোগাযোগ বন্ধ ছিল সেগুলো আমরা উন্মুক্ত করে দিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ভুটান থেকে একটি রাস্তা যাচ্ছে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড পর্যন্ত। অথচ সেই রাস্তাটা যাচ্ছে বাংলাদেশকে বাইপাস করে। যে রোড হচ্ছে তা থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন, কেন আমরা বিচ্ছিন্ন থাকব। ভারত চাচ্ছিল ভুটান থেকে এই রাস্তাটা বাংলাদেশ হয়ে, ভারত হয়ে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড যাবে। আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ সব কিছু কত সুবিধা হতো।

তিনি বলেন, সেটাও খালেদা জিয়া নাকচ করে দিয়েছিল। এই হলো অবস্থা। আমি প্রথম বার সরকারে এসে অনেকবার চেষ্টা করেছি কিন্তু আমরা যুক্ত হতে পারিনি।

ভারত থেকে পাইপ লাইনে তেল নিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা আসামের রুমালিগড় থেকে পাইপলাইনে তেল নিয়ে এসেছি। পার্বতীপুর ডিপোতে সেই তেল আসছে। ক্ষতিটা কি হয়েছে। বরং আমরাই কিন্তু সস্তায় কিনতে পারছি। আমাদের দেশের জন্য, ওই অঞ্চলের মানুষের চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারি। উত্তরাঞ্চলে কোনো শিল্পায়ন হয়নি, এখন শিল্পায়নে আমরা যেতে পারি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও আমরা নির্মাণ করেছি।

খালেদা জিয়া মিয়ানমার থেকে গ্যাস আনার সুযোগ নষ্ট করেছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কী সমস্যা দেশের জন্য করেছে দেখেন, মিয়ানমারের গ্যাস ফিল্ডের গ্যাস, ভারত, চীন, জাপান চাচ্ছে। এই গ্যাসকে বাংলাদেশের ভেতর থেকে ভারতে নিয়ে যাবে, এই নিয়ে যাওয়ার সময় এই গ্যাস থেকে আমরা একটা ভাগ নেবো। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামসহ ওই এলাকায় আমাদের গ্যাসের কোনো অভাবই হতো না। খালেদা জিয়া সেটা নিতে দেয়নি। কেন দেয়নি?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে সেই গ্যাস নিচ্ছে চীন। আর কোনো দেশতো নিতে পারছে না। আমরা সরকারে আসার পর কথা বলেছিলাম মিয়ানমারের সঙ্গে, আনতে পারি কি না। কিন্তু সেটা সম্ভব না। তারা এটা অলরেডি দিয়ে দিয়েছে।

-বাসস।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যমুনায় পানি কমায় ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন

আ.লীগ সরকারের কাছে আলেম-ওলামারাও রেহাই পায়নি : টুকু

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বেরোবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

ইউরো ২০২৪ / স্টুটগার্টে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি, পিতা-পুত্রের স্মরণীয় উদযাপন

বেসরকারি সংস্থায় চাকরির সুযোগ, বেতন ৬০ হাজার

তীব্র বৃষ্টি উপেক্ষা করে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ইবি শিক্ষার্থীরা

দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন ডিপজল

বিপৎসীমার ওপরে টাঙ্গাইলের সব নদীর পানি

পিজিআরকে অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

পেট্রোম্যাক্স এলপিজিতে নিয়োগ, পদসংখ্যা অনির্ধারিত

১০

পঞ্চম দিনে কোটাবিরোধী আন্দোলনে জবি শিক্ষার্থীরা

১১

বৃক্ষমেলার আড়ালে বাণিজ্য মেলা!

১২

যমুনার পানি বেড়ে ডুবে যাচ্ছে বসতবাড়ি

১৩

আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু ভারত, উন্নয়নের চীন : কাদের

১৪

ভোটে বিজয়ী পেজেশকিয়ান, এরপর কী?

১৫

তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি, বন্যার আশঙ্কা

১৬

তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, বন্যার কবলে ৫ হাজার পরিবার

১৭

এবার মহাসড়ক অবরোধ করলেন পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

১৮

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও ইরানের প্রেসিডেন্টকে বিএনপির অভিনন্দন

১৯

ফাইনালের আগে আরেক ফাইনালে দুদলের সম্ভাব্য একাদশ

২০
X