রহমান মৃধা
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
রহমান মৃধার নিবন্ধ

সত্য ঘটনাটি জানার যোগ্যতাটুকু দেশের এলিট শ্রেণির আছে কি?

রহমান মৃধা। ছবি : সৌজন্য
রহমান মৃধা। ছবি : সৌজন্য

পরিবার বা শিক্ষকদের কাছ থেকে শেখা এবং করতে করতে শেখা, সেই সঙ্গে অনুসরণ ও অনুকরণ করা এগুলো মানবজাতির সবচেয়ে বড় অনুশীলন। জন্মের পর বাবা-মা, পরিবার তারপর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি কর্মজীবনের প্রাথমিক পর্যায়েও দরকার অনুকরণ, অনুসরণ, নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রতিফলন ঘটানো। অন্যভাবে বলতে হয়, নেতৃত্ব হচ্ছে সাহায্যের চাবিকাঠি। শিক্ষা প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে যিনি এই প্রশিক্ষণের দায়িত্বে থাকেন তিনি যদি না জানেন কী শিক্ষা? কীভাবে শিক্ষা? তাহলে তো সঠিক এবং সুশিক্ষা হবে না। সঠিক এবং সুশিক্ষার অবনতির প্রতিফলন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা বা ইন্সট্রাকশনের মধ্যে আবির্ভূত হয় তখন দরকার পড়ে নেতৃত্বের। এখন প্রশ্ন সঠিকভাবে এই দিকনির্দেশনা কীভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে?

একজন ভালো ম্যানেজার হতে হলে তাকে প্রথমে একজন ভালো কর্মী হতে হবে। তাকে জানতে হবে কী, কেন, কীভাবে ইত্যাদি। ম্যানেজার ম্যানেজ করেন আর নেতা দেন নেতৃত্ব। যদি কখনও একজন বিশেষজ্ঞ হঠাৎ করে ম্যানেজার বা নেতা হয় তখন সে প্রতিষ্ঠানে সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভবনা খুব বেশি থাকে। কারণ এ ধরনের বিশেষজ্ঞের পক্ষে ম্যানেজ বা নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তারা নিজেদেরকেই সবসময় বেশি পণ্ডিত বলে মনে করেন এবং তাদের আচরণ ও ব্যবহারে তা প্রকাশ পায় বিধায় কর্মচারী আত্মবিশ্বাস এবং অনুপ্রেরণা হারাতে থাকে।

কিন্তু যদি বিশেষজ্ঞ তার ‘লার্নিং ফ্রম লার্নার’ কনসেপ্ট প্রয়োগ করে তখন সে বিশেষজ্ঞ হতে পারে একজন ভালো ম্যানেজার ও ভালো লিডার। একজন ম্যানেজারের প্রথম কাজ হবে সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় নিয়োগ দেওয়া এবং মিশন, ভিশন, গোলস অ্যান্ড অবজেকটিভস তৈরি করে ম্যানেজমেন্ট বাই অবজেক্টিভস কনসেপ্ট ব্যবহার করা। সুশিক্ষিত একজন ভালো ম্যানেজার বা লিডার প্রয়োগ করে ম্যানেজমেন্ট বাই অবজেক্টিভস কনসেপ্ট এবং সব সময় তৈরি করে মানুষ ও মানবতার জন্য আশাব্যঞ্জক মূল্যবোধ। অপরদিকে কুশিক্ষিত একজন ম্যানেজার বা লিডার প্রয়োগ করে ম্যানেজমেন্ট বাই থ্রেটস পদ্ধতি যা শুধু অবনতি ও দুর্নীতির সৃষ্টি করে, অর্থনীতিরও ক্ষতি করে, একই সঙ্গে কলুষিত করে মানুষ, মানবতা ও সমাজকে। সফল ব্যবস্থাপনার মূলনীতি বা চাবিকাঠি হচ্ছে ম্যানেজার ও কর্মীদের মধ্যে সততার মাধ্যমে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা, অর্থাৎ “বিল্ডিং ট্রাস্ট বিল্ডিং গ্রোথ।”

বিশ্ব পুণ্যভূমি আজ রক্তাক্ত ও বিধ্বস্ত। বিশ্বমানবতার প্রার্থনা, আমার প্রার্থনা, পৃথিবীর সকল মানুষকে ঘিরে। অতএব আমি আমার প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে, তাদের ভালোবাসা ও বিশ্বস্ততাকে নিয়ে সুন্দর স্বপ্ন দেখতেই পারি। আমার সেই জেগে জেগে স্বপ্ন দেখা দিনগুলি কিন্তু আমার বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে। যেমন যে ছেলে বা মেয়েটি ক্লাসে বেশি মনোযোগী, নিয়মিত পড়াশুনা করে এবং বাড়িতে এসেও হোমওয়ার্ক করতে ভুলে না, সে সবার কাছে প্রিয় হয়ে বেড়ে ওঠে। সে বছরের পর বছর পরীক্ষার ফলাফল ভালো করে। তাকে সবাই আদর করে এবং সম্মানের চোখে দেখে।

এ ধরনের ছেলেমেয়েরা স্কুলকলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় অবধি সবার প্রিয় হয়ে থাকে। অন্যদিকে যে ছেলে বা মেয়েটি কোনোরকম টেনেটুনে পাশ করে হয়তোবা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছায়, সে লাঞ্চনা-গঞ্জনার মধ্যে দিয়েই কিন্তু তার ছাত্রজীবন শেষ করে।এরা একই সমাজের দুটো ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে। সমাজের পাঠশালা বলতে পুথিগত বিদ্যাকেই বোঝানো হয়। সেক্ষেত্রে এই অভাগা অবহেলিত ছাত্র বা ছাত্রীটির মধ্যে পুথিগত মেধা ছাড়া অন্য কোনো গুণ থাকলেও তা প্রকাশ করার মতো হিম্মত তার হয়ে ওঠে না সমাজ এমনকি বাবা-মা বা বন্ধু-বান্ধবীর কাছে। কোনো এক সময় হয়তোবা সেই পুথিগত বিদ্যাধরী মস্ত বড় ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হয়, অন্যদিকে সেই অবহেলিত শিক্ষার্থী সমাজের ছোটখাটো কাজে যোগদান করে। যখন কিছুই করার থাকে না তখন রাজনীতি করে। এরা কখনও সমাজের চোখে ভালো অ্যাসেট হয়ে স্বীকৃতি পায় না। এরা শুরু থেকেই জানে যে এদের কাজকর্মে কখনও তারা প্রত্যাশিত ফিডব্যাক পাবে না।

সেক্ষেত্রে এদের মধ্যে গড়ে উঠে 'হারাবার কিছুই নেই' ধরনের মনোভাব এবং ভাবতে শেখে, যা কিছুই করিনা কেন সবটাই বেটার দেন নাথিং। স্কুল-কলেজে পিছনের বেঞ্চে বসা সেই শিক্ষার্থী দেখা যায় মন্ত্রী, ইন্ডাস্ট্রি বা ক্লিনিকের মালিক হয়ে শেষে সেই খ্যাতনামা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের হায়ার করে মোটা অঙ্কের টাকা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয় এবং তখনই ওই ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়াররা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যায়।

কোনো একদিন দেখা গেল একটি মডার্ন ক্লিনিকের মালিক ডাক্তারকে ডেকে বলে দিল, — শুনুন ডাক্তার বাবু, আমার এখানে কাজ করছেন ভালো বেতনে। এখন যদি বেতনের টাকাটা না তুলে আনতে পারেন তাহলে তো আপনাকে চাকরিতে রাখা সম্ভব হবে না? ডাক্তার হয়ত বলবেন, তাহলে আমাকে কী করতে হবে? কী করতে হবে মানে বুঝতে পারছেন না? তাহলে শুনুন, গত মাসে ৩০টি ডেলিভারির রোগী এসেছে। তাদেরকে নরমাল ডেলিভারি না করে যদি সিজার করতেন তাহলে আমার ক্লিনিকের যে সমস্ত ইকুইপমেন্ট রয়েছে সেগুলোর সঠিক ব্যবহার হতো, নার্স থেকে শুরু করে সবাই ফুল টাইম কাজ পেতো। আমার যে ইনভেস্ট তা উঠে আসতো, সঙ্গে আপনার বেতনসহ কিছু এক্সট্রা সুবিধা পেতেন।

ডাক্তারের বিষয়টি না বোঝার কোনো কারণ থাকার কথা নয়। সারাজীবন পুথিগত বিদ্যার সঙ্গে যাদের উঠাবসা তারা জানে দুই প্লাস দুই চার হয়। অতএব মালিককে খুশি করতে চিকিৎসাখানা এখন হয়ে গেল কসাইখানা। এমতাবস্থায় রোগীর সঙ্গে ডাক্তারের সম্পর্কটা কখনও মনঃপূত হতে পারে কি? মালিক গড়ছে টাকার প্রাসাদ, রোগী গড়ছে ঘৃণার প্রাসাদ আর ডাক্তার গড়ছে সুচিন্তাহীন নতুন জীবন। প্রতিনিয়ত ভাবছে কেন পুলিশ বা প্রশাসন ক্যাডার হলাম না? কী করলাম লেখাপড়া করে? কী লাভ হলো সারাজীবন ভালো ছাত্র হয়ে ইত্যাদি। এতক্ষণ যা বর্ণনা করলাম এটা বাংলাদেশের বেশিরভাগ ডাক্তারদের বর্তমান অবস্থা। এখন দেখা যাক কেমন চলছে সুইডেনে। এখানেও একই ব্যাপার প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে। ভালো শিক্ষার্থী এখানেও হতে হয় ডাক্তার হতে হলে। বেশ পরিমাণ স্টাডি লোন নিয়ে পুরো প্রশিক্ষণ শেষ করতে হয়, তারপর চাকরি জীবন। শুরু থেকেই ভালো বেতন, ভালো সুযোগ সুবিধা। ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা করে, কখনও ভাবে না মালিক কী ভাবছে বা বলছে। মালিকের কখনও এমন সাহস হবে না ডাক্তারকে বলার যে একজন নরমাল ডেলিভারি রোগীর পেটে ছুরি ঢুকাও।

কী কারণ রয়েছে তাহলে বাংলাদেশ এবং সুইডেনের ভিন্ন ধরনের নিয়ম কানুনের পেছনে? কে এর জন্য দায়ী? সমাজ, রাষ্ট্র, দরিদ্রতা, দুর্নীতি, মরাল ভ্যালুর অবক্ষয়, সিস্টেমের অভাব, নাকি সব কিছুর সমন্বয়? মাটির পৃথিবী তুমিই বলো আমরা তো দেখতে অবিকল একই রকম তা সত্ত্বেও কেন অত বড় ব্যবধান? সব প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। তবে এতটুকু বলতে পারি তা হলো নাগরিকের জন্মের শুরুতে কে ক্লাসে পড়াশোনায় ভালো আর কে খারাপ এটা বিচার না করে সুইডিশ জাতি প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ জায়গা থেকে ব্যক্তির নিজের চিন্তা-চেতনার ওপর গুরুত্ব দেয় এবং সেইভাবে তাকে সম্মানের সঙ্গে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। যার ফলে পরস্পরের মধ্যে ভেদাভেদের পার্থক্যটি বাংলাদেশের মতো হয় না। তাছাড়া সমাজে প্রত্যেকটি কাজের গুরুত্ব অপরিসীম।

মিউচ্যুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইজ মাস্ট, যার কারণে ছোটবেলায় কেউ অবহেলিত হয়ে গড়ে ওঠে না, যা বাংলাদেশে এখনও চলছে। যে কারণে অবহেলিত নাগরিক নিজের অস্তিত্বকে মজবুত করতে অনৈতিক কাজ করতে দ্বিধাবোধ করে না। কারণ ছোটবেলা থেকে লাঞ্ছিত আর বঞ্চিত জীবনে বিবেক কী তা তো তাদের জীবনের অভিধানে কখনও ছিল না। থাকতো, যদি পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র সুইডেনের মতো করে শুরু থেকে তাদেরকেও অবহেলা বা ভেদাভেদ সৃষ্টি না করে বরং একইভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করতো।এখন একটি পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র যদি সুইডেনের মতো না হয় তাহলে কি সম্ভব একটি সুন্দর এবং মার্জিত পরিবেশ গড়ে তোলা? অবশ্যই সম্ভব যদি আমরা আমাদের মনমানসিকতার পরিবর্তন করতে চাই এবং এটা সম্ভব যদি আমরা সমাজের বর্ণবৈষম্য, ধনী-দরিদ্রে ভেদাভেদ কমাতে চেষ্টা করি। মূল কথা, যদি স্যাক্রিফাইস করতে শিখি বা ছাড় দেবার মনমানসিকতা তৈরি করি তবে সব কিছুই সম্ভব। কারণ—Success is no accident. It is hard work, perseverance, learning, studying, sacrifice and most of all, love of what you are doing or learning to do.

পৃথিবীর সেরা স্বাস্থ্য সেবার দেশের হেলথ কেয়ার বা স্বাস্থ্য সেবার সম্পর্কে কিছু বর্ণনা করব। তবে আমার ভাবনায় ঢুকেছে কৌতূহল তা হলো, জানতে ইচ্ছে করছে কী হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে! আসুন জেনে নেই তার আগে সুইডেনের স্বাস্থ্যসেবা সম্বন্ধে। এখানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, সাধারণ হাসপাতাল, বিশেষ হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্র। রুটিনমাফিক চেক-আপ বা সাধারণ অসুস্থতার প্রাথমিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রথম পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। এখানেই সচরাচর সাধারণ চেক-আপ বা কন্ট্রোল হয়ে থাকে এবং চিকিৎসক নির্ধারিত করে রোগীর পরবর্তী স্টেপের ক্ষেত্রে এবং তা নির্ভর করে রোগীর অসুস্থতার কারণের ওপর। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক রেফারেল করে কোথায় বা কী করতে হবে। রোগীর ফি ২৫০ ক্রোনার (২৫০০ টাকা) প্রতিবারের দর্শনে। তবে এই ফি কার্যকরী ১৮ থেকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত রোগীদের বেলায়। ৮০ বছরের বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ফ্রি চিকিৎসা ‘মজার ব্যাপার তা হলো ১৮-৮০ বছর বয়স্কদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ফির ব্যবস্থা রয়েছে, যা ১২০০ ক্রোনার প্রতি ক্যালেন্ডার বছর বা ১২ মাসে, এই ১২ মাসের মধ্যে যদি কেউ ক্রিটিক্যাল বা জরুরি অবস্থার কারণে চার বারের বেশি স্বাস্থ্য সেবাতে যায় সে ক্ষেত্রে বাকি সময়ে ফ্রি চিকিৎসার জন্য ফ্রি-কার্ড দেওয়া হয় যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন ক্যালেন্ডার বছর শুরু না হয়’।

এখন যদি রোগীর এমআরআই (MRI) থেকে শুরু করে মেজর সার্জারি বা পেস মেকারের মতো কোনো ক্রিটিক্যাল অপারেশন করা লাগে বা হেলিকপ্টারে করে অন্য হাসপাতালে রোগীকে নিতে হয়। তার জন্য কোনো অতিরিক্ত খরচ লাগে না। তবে হাসপাতালে যে সমস্ত রোগী ভর্তি থাকে তাদের প্রতিদিনে ১০০ ক্রোনার দিতে হয় এবং এর মধ্যে রোগীর খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে সব দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিয়ে থাকে এবং এখানেও খরচের ব্যাপারে একটি লিমিটেশন রয়েছ। যেমন যাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ভালো না বা বেকার তাদের ক্ষেত্রে সমাজকল্যাণ বিভাগ সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে থাকে। ইমার্জেন্সির ক্ষেত্রে ১১২-তে কল করা মাত্রই অ্যাম্বুলেন্স এসে হাজির হয় এবং নিকটতম চিকিৎসাকেন্দ্র রোগীকে নিয়ে অবিলম্বে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ওষুধের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট দাম নির্ধারিত রয়েছে। প্রতি ক্যালেন্ডার বছরে ১২০০ক্রোনার হলেই ৫০% রিডাকশন এবং ২০০০ ক্রোনার হলেই বাকি ক্যালেন্ডার বছরের শেষ অবধি ফ্রি ওষুধের ব্যবস্থা রয়েছে, কোনো রকম এক্সট্রা খরচ ছাড়া। এখানে ইমার্জেন্সি ছাড়া সবার জন্য চিকিৎসার সমান অধিকার রয়েছে। কোনো রকম দুর্নীতির সুযোগ নেই বা ডাক্তারদের কোনো কমিশন নেই বা তাদের এক্সট্রা ইনকামের কোনো ব্যবস্থা নেই যে তারা তাদের পছন্দের ক্লিনিক বা হাসপাতালে রেফার করলে কমিশন বা অন্য কোনো সুযোগ সুবিধা পাবে।

সুইডেন গণতন্ত্রের বেস্ট প্রাকটিসে বিশ্বের সেরা স্থানটি আগাগোড়াই দখলে রেখেছে যা সত্যি প্রশংসনীয়। সুদীর্ঘ চল্লিশ বছর এমন একটি দেশে আছি, একই সাথে এত বছরের রোজগারের বেশির ভাগ অর্থ যখন বাংলাদেশে পাঠিয়েছি স্বাভাবিকভাবেই মনের মাঝে ভাবনা আসতেই পারে। তাই আমার ভাবনা থেকে কিছু প্রশ্ন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতাল যেগুলোকে মেডিক্যাল হাসপাতাল বলা হয়ে থাকে এবং যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে সেগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে যে ডাক্তার রোগীকে প্রাথমিক পর্যায়ে দেখার পরে সরাসরি বেশিরভাগ সময় রেফার করে বাইরের ক্লিনিকে নানা ধরনের চেক-আপের জন্য।আমার প্রশ্ন এসব মেডিক্যাল হাসপাতালে কী কোনো যন্ত্রপাতি নেই? যদি না থাকে তাহলে ছাত্র-ছাত্রীরা কীভাবে প্রশিক্ষণ পায়?

হাসপাতালের যন্ত্রপাতির মেইনটেন্যান্সই বা কীভাবে করা হয়? হাসপাতাল থেকে কী আদৌ কোনো ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে? কোন ডায়াগনস্টিকের প্রেক্ষিতে প্রেসক্রিপশনে একাধিক ওষুধ লেখা হয়? এটাও বা কীভাবে সম্ভব যে ওষুধ বিক্রেতাও ওষুধ বিক্রি করে প্রেসক্রিপশন ছাড়া? সরকারি হাসপাতাল এবং প্রাইভেট ক্লিনিকের মধ্যে কি কোনো পার্থক্য আছে? যে সমস্ত ডাক্তার সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত তারা কী পরিমাণ সময় ব্যয় করে থাকে সরকারি হাসপাতালে? আর কী পরিমাণ সময় ব্যয় করে প্রাইভেট ক্লিনিকে? এবং কেনই বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত নানা ধরনের টেস্ট করা হয়? কে বা কারা এসব বিষয় ফলো-আপ করে থাকে? যে পরিমাণ সরকারি অর্থ ব্যয় করা হয় দেশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সে পরিমাণ মনঃপূত সেবা দেশের জনগণ কী পেয়ে থাকে? দুর্নীতি কি এখানেও বিরাজ করছে? আমার প্রশ্ন জাতির কাছেও—দুর্নীতি কি নীতির একটি অংশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশে, এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য?

স্বাস্থ্যকেন্দ্র মানবজাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং এটা একটি বিশেষায়িত শিক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। হচ্ছে কি এখানে তেমন প্রশিক্ষণ, যে প্রশিক্ষণে সুশিক্ষার সঙ্গে মুরাল ভ্যালুর ওপরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে? হচ্ছে কি তেমন সুশিক্ষা এখানে? নাকি বাংলার সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিণত হয়েছে কসাইখানাতে? এই কসাইখানা কি দেশের সর্বজনস্বীকৃত? এবং এই জন্যই কী দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত দেশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপর আস্থা হারিয়ে বিদেশি চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকেন? এটাই যদি সত্যি হয় তাহলে কীভাবে বিল্ডিং ট্রাস্ট বিল্ডিং গ্রোথ কনসেপ্টের সমন্বয়ে বাংলাদেশের চিকিৎসার মান বাড়ানো সম্ভব হবে? ওষুধের ক্ষেত্রে বলতে চাই—সারা দেশের সমস্ত ওষুধের দোকানে আছে কি ওষুধের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা? কারণ বিশেষ করে বেশিরভাগ লিকুইড ফর্মের ওষুধের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে সে ওষুধ তো কোনো উপকারে আসবে না বরং শারীরিক ক্ষতির কারণ ঘটাবে বা ঘটায় থাকে। ওষুধ বিক্রেতাদের জানতে হবে এবং মানতে হবে ওষুধের ওপর যে সব নিয়ম কানুন রয়েছে। তা না হলে ওষুধ খাওয়া আর বিষ খাওয়া তো একই কথা?

সোনার বাংলা গড়তে হলে, হেলথ কেয়ার টেকনোলজির ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া দরকার কারণ পুরো জাতি যদি মানসিক অসুস্থতায় জীবনযাপন করতে তাতে হবে কি সোনার বাংলা গড়া?সুস্থ স্বাস্থ্য বা স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপন দিতে পারে সুন্দর মন-মানসিকতা, আর সুন্দর মন-মানসিকতায় পারবে মানবজাতির পরিবর্তন আনতে।এখন আমার প্রশ্ন পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আমরা কী করছি?সদ্য বাংলাদেশ ভ্রমণ করে ফিরেছেন একজন আমেরিকা প্রবাসী তিনি ফ্লোরিডার বাসিন্দা। আমি তার বাংলাদেশ ভ্রমণ সম্পর্কে কিছুটা অবগত ছিলাম। তাকে একটি টেক্সট মেসেজ দিয়ে রেখেছিলাম যেন সময় করে আমাকে নক করে। কিছুক্ষণ যেতেই ভদ্রলোক ফোন করেছেন, জিজ্ঞাসা করলাম বাংলাদেশ কেমন লেগেছে। বললেন এখনও কিছুটা অসুস্থ, শরীরে জ্বর নেই তবে বেশ কাশি, কাশির সাথে বেশ অস্বস্তিকর পরিবেশ মনের মধ্যে দোল দিচ্ছে। কথায় বেশ বিষণ্ন মনে হলো সাথে বেশ অনুশোচনা করছেন কেন তিনি রীতিমতো মাস্ক ব্যবহার করেননি রাস্তা-ঘাটে চলাকালীন!আমি জিজ্ঞেস করলাম পোস্ট কভিড হয়েছে কী-না? উত্তরে বললেন না, তবে কুকুরের গু-মুত, ধুলো এবং বাকি সব আবর্জনা একসঙ্গে পাউডার হয়ে নাকে ঢুকেছে। যার ফলে আমি এখনও কিছুটা অসুস্থ তবে আশা করছি সত্বর সুস্থ হয়ে উঠবো।

ভদ্রলোক বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে পুরো ঘটনাটি জানালেন দেশের শহরগুলোর পরিবেশ। ভদ্রলোক সম্ভবত ঢাকা, দিনাজপুর, যশোর ঘুরেছেন জানতে পারলাম। তার বর্ণনায় বাংলাদেশের দূষণ কিছুটা ভিন্ন বিশ্বের অন্যান্য দূষিত দেশগুলোর তুলনায়। তিনি বললেন— বাংলাদেশের শহরে ভোর রাতে বস্তির মানুষ, দিনমজুর সহ নানা ধরনের পেশার মানুষ ঘুম থেকে উঠে রাস্তার পাশেই মলমূত্র ত্যাগের কাজ সেরে নেয়। পরে শহরের কুকুরগুলো সেগুলো খায় এবং কুকুরও যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করে। এরপর শুরু হলো যানবাহনের চলাচল, শুরু হলো প্রচণ্ড রৌদ্র, মাঝে মধ্যে বৃষ্টি। রিকশা এবং গাড়ির চাকার তলে মানুষ এবং কুকুরের সেই মলমূত্র চাপাচাপির ফলে ছাতুতে পরিণত হয়ে ধুলোর সাথে মিশে নাকে মুখে ঢুকে পড়ে। এটা সবার ক্ষেত্রেই হচ্ছে কিন্তু যারা নিয়মিত শহরে বসবাস করছে তাদের এটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। কিন্তু যেহেতু আমি ছিলাম নতুন তাই অল্প সময়ের মধ্যে সবকিছু মানিয়ে নিতে পারিনি।

ভদ্রলোক গুছিয়ে গাছিয়ে কথাগুলো বললেন আমি নিস্তব্ধ নীরবে তার কথাগুলো শুনলাম এবং আমার ভাবনায় আবারও দোলা দিয়ে গেল উপরের কথাগুলো— নাকের ভেতর দিয়ে যখন ফুসফুসে ঢুকছে তার মানে তখন সেটা সরাসরি রক্তে চলে যাচ্ছে, যা খুবই ভয়ংকর? ও ভালো কথা, ভদ্রলোক আমার ছোটবেলার স্কুলটির পাশ দিয়ে যেতে পথে ছোট্ট একটি ভিডিও করে আমাকে পাঠিয়েছিলেন। আমি বেশ অবাক হয়ে ভাবতে শুরু করি তখন! কী ব্যাপার সে হঠাৎ বাংলাদেশে তাও আমার গ্রামের স্কুলের পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে? গাড়িতে চলন্ত অবস্থায় ছবি তুলেছেন তিনি। কিছুদিন আগে আমি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় আমার সেই স্কুলের শতবর্ষ পূর্ণ হবে ২০২৪ সালে তার উপর একটি প্রতিবেদন লিখেছিলাম। ভদ্রলোক ঘটনাটি জানতেন, হয়ত সেই কারণেই যশোর থেকে ঢাকা যেতে পথে নহাটার (মাগুরা জেলাধীন) পাশ দিয়ে যাবার সময় স্কুলের দৃশ্যটি তুলে ধরেছিলেন। সেই বিষয়টি জানতেই মূলত আমি তাকে নক করেছিলাম।

আমি চল্লিশ বছর দেশ ছেড়েছি, পঁয়তাল্লিশ বছর আগে সেখানে পড়েছি। স্কুলের পাশ দিয়ে চলে গেছে ‘গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড', ষোড়শ শতাব্দীতে সম্রাট শেরশাহ কর্তৃক নির্মিত বাংলার সোনারগাঁও থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত বিস্তৃত সুদীর্ঘ সড়ক। ব্রিটিশ আমলে চলাচলের সুবিধা এবং ডাক বিভাগের উন্নতির উদ্দেশ্য সড়কের সংস্কার করে কলকাতা থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়। এ সময় এই সড়কটির নাম দেওয়া হয় 'গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড'।

ব্রিটিশ শাসনের সময়কালের সেই কাঁচা রাস্তাটি দেশ স্বাধীনের পর পাকা হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ফরিদপুর থেকে যশোর বেনাপোল হয়ে ভারতে ঢুকেছে। নহাটার পাশ দিয়ে চলমান রাস্তাটির নাম তখন ছিল “গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড” যা বর্তমান আমার চাচা বীর প্রতীক মরহুম ইয়াকুব মিয়া রোড নামে পরিচিত। যাইহোক সেই ঐতিহাসিক রাস্তার পাশে বিশিষ্ট জ্ঞানতাপস ও বিদ্যোৎসাহী বাবু শরৎচন্দ্র ভট্টাচার্যের উদ্যোগে স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের দান ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং অক্লান্ত পরিশ্রম, ত্যাগ ও অদম্য প্রচেষ্টার ফলে ১৯২৪ সালে স্থাপিত হয় নবগঙ্গা বিধৌত মাগুরা জেলার প্রত্যন্ত জনপদ নহাটায় মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের একটা উজ্জ্বল বাতিঘর, নহাটা স্কুল, সেখানে আমি পড়েছি।

আমার সময়ে স্কুলটিতে পাঠদান হতো একটি উন্মুক্ত পরিবেশে যা এখন ভিডিওতে দেখে মনে হলো জেলখানায় পরিণত হয়েছে। স্কুলের মধ্যে আদৌ বিশুদ্ধ আলো বাতাস প্রবেশ করে কিনা সেটাও সন্দেহ।শুনেছি দেশের অনেক উন্নতি হয়েছে তবে আমেরিকান প্রবাসীর ভ্রমণের বর্ণনা আর ভিডিওটি দেখার পর মনের মাঝে ফুলে থাকা বেলুনটি মুহূর্তে চুপসে গেল! ঠিক সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পরিচিত ছেলের একটি কমেন্ট নজর কেড়ে নিল। তখন তাকে লিখলাম—তোমার একটা কমেন্ট পড়লাম, লিখেছ “বাংলাদেশের বিমানবন্দরে নতুন থার্ড টার্মিনালের নকশা করেছে রোহানি বাহরিন। এই একটা মেয়ে দেশের ২৪ লক্ষ ইঞ্জিনিয়ারকে হারিয়ে দিয়ে গেল। প্রশ্ন হচ্ছে এতগুলো বুয়েট, রুয়েট, কুয়েট, চুয়েট আপনাদের, এতো টাকা ভর্তুকি দিয়ে জনগণ তাদের আশা নিয়ে পড়াচ্ছে, তারা কই? তারা কী শিখল? একটা মেয়ের সমান বাংলাদেশের ২৪ লাখ ইঞ্জিনিয়ার না পরাজিত হয়ে গেল?

বাংলাদেশের একটা মেগা প্রকল্পের নকশা কিংবা কারিগরিতে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকদের চুল পরিমাণ অবদান নেই। আমরা তাহলে এতদিন ধরে কী বা কাদের তৈরি করেছি? এসব ইঞ্জিনিয়ার আসলে কী কাজ করছে তাও ক্লিয়ার হওয়া উচিত।” তবে অপ্রিয় সত্য কথা যখন তুললেই তবে পুরোটা কেন তুললে না? নাকি ইচ্ছে করে রেখে দিয়েছো ভেবে হয়ত অন্য কেউ বাকি অংশটুকু তুলে ধরবে? এবং এই একই প্রশ্ন যেমন এতগুলো মেডিকেল কলেজ আমাদের, এতো টাকা ভর্তুকি দিয়ে জনগণ তাদের আশা নিয়ে পড়াচ্ছে। তারা কই? তারা কী শিখলো? প্রতিদিন কারো কিছু হলেই ভারতে চিকিৎসার জন্য ধাওয়া করে, বাংলাদেশের লাখো লাখো ডাক্তার এবং শতক খানেক হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও? বাংলাদেশের একটা বড় নেতার চিকিৎসা করার মতো এসব মেডিকেল কলেজের ডাক্তারদের সামান্য পরিমাণ দক্ষতা নেই! তা যদি না থাকে তাহলে এতদিন ধরে আমরা কী বা কাদের তৈরি করেছি?" এটুকু বলে তাকে ধন্যবাদ দিয়ে লেখাটি শেষ করলাম। পরে সে উত্তরে লিখেছে, “বাকিটা আপনি লিখেন ভাই। আমি মানুষের মাথায় প্রশ্ন এঁকে দিই, বিস্তারিত বলি না”।

তার শেষের কথাটি মনে ধরেছে, তাই আমি কুকুরের মলমূত্র নিয়ে যা লিখেছি আশা করি সবার মাথায় প্রশ্ন এঁকে দিতে পেরেছি পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা কত জরুরি। সেইসাথে ভাবছি—হায়রে অভাগা বাংলাদেশ; তোর অর্থে আমেরিকা, কানাডা, ডুবাই, সিঙ্গাপুর, বেগমপাড়া হয় অথচ তুই বেচারা গোধূলির লগনে কুকুরের মলমূত্র মিশিয়ে পর্যটকদের অসুস্থ করে নতুন এক মর্মান্তিক ইতিহাস সৃষ্টি করছিস? আমি তোকে দোষী করছি না, দোষ আমার পোড়া কপালের, তা না হলে আজ তোর এই দশা হবে কেন? আমি হতাশ বা দুঃখ পেলেও খুশি হলাম জেনে তুই এখনও সংগ্রাম করে চলছিস। আমি অভাগা সমালোচক তোর সমালোচনা করছি কারণ সমালোচনার যোগ্যতা তো তুই-ই রাখিস। তোর বুক চিরে শোষণ করেছে ব্রিটিশ, পরে পাকিস্তান এখন তোরই দুর্নীতিবাজ সন্তানেরা।কে সামলাবে তাদের এখন?

এখন আমরা যারা সমালোচনা করি আমাদের তেমন কোনো যোগ্যতা নেই তবে যাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করি সেই আলোচিত বা সমালোচিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা নিঃসন্দেহে যথেষ্ট যোগ্যতাসম্পন্ন এলিট গুণমান স্ব এবং সুনামধারী জন এবং গণ প্রতিনিধি। যারা মুরব্বিদের বিশেষ আশীর্বাদে সমাজ তথা অভাগা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন এবং লালন করছেন। অতএব সমালোচিত হতে বহু যোগ্যতার দরকার যা বাংলাদেশের আমলা থেকে কামলাদের রয়েছে সে বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। সন্দেহ একটাই সেটা হলো সারাদেশে কুকুরের যে উৎপাত বেড়েছে এবং তারা দেশের শহরগুলোতে হেগে-মুতে ন্যানডিভাসটি করছে, এই অপ্রিয় সত্য ঘটনাটি জানার যোগ্যতাটুকু দেশের এলিট শ্রেণি এবং যোগ্য ব্যক্তিদের আছে কি? প্রশ্ন হতে পারে- থেকে লাভ কী? ঘুষ খাওয়া আর গু-মুত খাওয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, তাছাড়া পেটে এসব গেলে হয়ত সমস্যা নেই। কারণ পেটের প্রতিরোধ দমন করার মতো ক্ষমতা আছে। কিন্তু নাকের ভেতর দিয়ে যখন ফুসফুসে ঢুকছে তার মানে তখন সেটা সরাসরি রক্তে চলে যাচ্ছে, সেটা নিশ্চিত খুবই ভয়ংকর?

রহমান মৃধা: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যুদ্ধের মোড় ঘোরাতে কতটা কাজে দেবে এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র

চাকরি দেবে আগোরা, সপ্তাহে ২ দিন ছুটি

শীতে জবুথবু কুড়িগ্রাম

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সত্ত্বেও কৃষি উৎপাদন ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে : রাষ্ট্রদূত

পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক, কী আলোচনা হলো?

‘ভুয়া সংবাদ’ ধরিয়ে দেবে যে টুল

ঈদে আসছে জুয়েলের পিনিক

বায়ু দূষণের শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার খবর কী

‘জনগ‌ণের সম্পদ খাওয়া আর জাহান্না‌মের আগুন খাওয়া সমান’

কমছে তাপমাত্রা, শীত জেঁকে বসবে কবে?

১০

‘আ.লীগ নির্বিচারে মানুষ মেরে রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে’

১১

তারেক রহমান সবসময় পাশে আছেন, থাকবেন : মীর হেলাল

১২

দশ দিনেও মুক্তি মেলেনি ৪ বাংলাদেশির

১৩

আজ টিভিতে যেসব খেলা দেখা যাবে

১৪

ছাত্রদল নেতাকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে

১৫

লেবাননে এক দিনে নিহত ৫৯

১৬

টাইম জোনের ধারণা এসেছে যেভাবে

১৭

সরকারের চাপে বাধ্য হয়ে ওজন কমালেন ৫৪২ কেজি

১৮

উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশে নজর জিনপিংয়ের

১৯

‘উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে আ.লীগ সরকার’

২০
X