রহমান মৃধা
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪, ০৪:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এআই, চ্যাটজিপিটি এবং আমাদের ভবিষ্যৎ বর্তমান

রহমান মৃধা। ছবি : সৌজন্য
রহমান মৃধা। ছবি : সৌজন্য

তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, চ্যাটজিপিটি যেভাবে দুনিয়াজুড়ে সাড়া ফেলেছে, তাতে এর সঙ্গে আরও নতুন নতুন প্রতিযোগী যুক্ত হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সর্বক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হবে সে বিষয় নিশ্চিত। এখন অবধি প্ল্যাটফর্মটি ফ্রি এবং পেইড উভয় ভার্সন থাকায় অনেকেই ইতোমধ্যে এর ব্যবহার করতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশের মতো অনেক দরিদ্র দেশে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করছে; ই-মেইল, ইউটিউব স্ক্রিপ্ট, কপিরাইটিংয়ের মাধ্যমে। ফ্রিল্যান্সিং শুধু ব্লগ পোস্ট লেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; আপনি ট্রান্সলেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং, প্রুফরিডিং এবং আরও অনেক কিছুর জন্য চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করতে পারেন।

চ্যাটজিপিটি কীভাবে ফ্রেমওয়ার্ক, টুলচেন, প্রোগ্রামিং ভাষা এবং আরও অনেক কিছু ব্যবহার করতে হয় সে সম্পর্কে ধাপে ধাপে নির্দেশাবলিসহ আপনার ধারণাগুলোকে বাস্তব প্রোডাক্টে অনুবাদ করতে সাহায্য করতে পারে। তারপর হোমওয়ার্ক, কোডিং, চ্যাটজিপিটি টুল দ্বারা যে কোনো কোড সহজেই লেখা যায়। এ ছাড়া কোনো কোডে ভুল থাকলে তা এখানে অটোমেটিক সংশোধন হয়ে যায়।

কীভাবে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করবেন?

চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করতে আপনাকে প্রথমে chat.openai.com-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে, আপনার কাছে Try ChatGpt-এর অপশন থাকবে, যেখানে ক্লিক করার পরে আপনি আপনার ইমেল আইডি দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রার করতে পারেন এবং এটি সহজেই ব্যবহার করতে পারেন।

চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে আপনি যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন। আপনি কাউকে ভালোবাসেন, কিন্তু মনের কথা প্রাণ খুলে লিখতে পারেন না; সে চিঠিও নিখুঁতভাবে লিখে দেবে। আপনার গোপন প্রেমের কথা, হৃদয়ের ব্যথা জেনে যাবে। কেউ অপরাধ করেছে, তার তদন্ত ও শাস্তি কী হবে বা আদৌ কিছু হবে কি না সব জানিয়ে দেবে এই কৃত্রিম রোবট।

আপনি কোডিং পারেন না, শেখাবে, যদি শিখতে চান, দরকারে লিখে দেবে। আপনি আর্টিকেল লিখতে চান, লিখে দেবে। নতুন চাকরির জন্য আবেদন করবেন, কিন্তু সিভি/বায়োডাটা লিখতে পারেন না; বায়োডাটা লিখে দেবে। আরও মজার ব্যাপার কী জানেন? যদি একটি কবিতা শেকসপিয়ার বা আমার স্টাইলে লিখতে বলেন, সেটাও সুন্দর করে লিখে দেবে, আর এ কবিতা যে অতীতে কেউ লিখেছে সেটা জানার উপায় থাকবে না, মানে প্লেজিয়ারিসম চেক করার যে সফটওয়্যার আছে এ ক্ষেত্রে কিছুই করতে পারবে না।

তারপর যে কোনো গোপনীয় কোড যা শুধু আপনার জানার কথা তাও ফাঁস হয়ে যাবে যদি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে (এআই ) সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না শেখেন বা যদি কোনো কন্ট্রোল না থাকে। কী বুঝলেন? ব্যাপারটি ভয়ংকর বা সুন্দর, দুটোই হতে পারে, তাই না? এই হচ্ছে বর্তমানের ভবিষ্যৎ। তাহলে ভবিষ্যতের বর্তমান কেমন হবে?

মানুষ হয়তো তার ক্ষমতা হারাবে নয়তো নতুন জগৎ সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে। চ্যাটজিপিটি তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মানুষের চেয়ে দ্রুত এবং সঠিক উত্তর প্রদান করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভাবনীয় অগ্রগতির ফসল চ্যাটজিপিটি। এর বিশেষত্ব হলো এটা মানুষের কথাবার্তা এমনভাবে নকল করে যে এর সঙ্গে চ্যাট করলে যন্ত্র মনে হবে না। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা সব ধরনের বিষয়ে চ্যাটজিপিটিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কারণে এর ভাষাগত দক্ষতাসহ সর্বক্ষেত্রে আলোচনা চালিয়ে যেতে চ্যাটজিপিটি এখন সক্ষম। এর সৃজনশীলতা শুধু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি আমাদের মতো গল্প, চিত্রনাট্য, এমনকি জটিল সফটওয়্যারের কাজ করতে পারে। একে দিয়ে অবিরাম কাজ করে নেওয়া এখন সম্ভব এবং বিভিন্ন ধরনের কাজ ইতোমধ্যে সে করে চলেছে। চ্যাটজিপিটি বহু কাজে সফলতার পরিচয় দিলেও এখনও এটি সম্পূর্ণ নিখুঁত নয়। আমরা নিজেরা যেহেতু ভুল করছি ঠিক আমাদের মতো চ্যাটজিপিটি বেশ কিছু ভুল করছে। তবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে চ্যাটজিপিটি নিজেকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করছে। ফলে যত বেশি আমরা এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করব, চ্যাটজিপিটির সিস্টেম তত বেশি উন্নত হতে থাকবে।

চ্যাটজিপিটি অ্যাডভান্স মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমের সাহায্যে বিপুলসংখ্যক তথ্য-উপাত্ত বিচার-বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে ভালো ফলাফল প্রদান করছে। ফলে এর সঙ্গে কথা বললে বা প্রশ্ন করলে আমাদের মতো ভেবেচিন্তে উত্তর দিতে পারে। শুধু একবার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া নয়, পূর্বের আলোচনা মনে রেখে আমাদের মতো দীর্ঘ সময় আলাপচারিতা চালিয়ে যেতেও সক্ষম।

চ্যাটজিপিটি আস্তে আস্তে পৃথিবীর সব ভাষা শিখছে। এমন একটা সময় আসছে, দেখবেন চ্যাটজিপিটি এত সুন্দর করে লিখবে যা অনেক বিদ্ব্যান বা পণ্ডিতও লিখতে পারবে না। আমাদের মাথায় যত বুদ্ধি আছে, তত বুদ্ধি প্রয়োগ করে একে কাজে লাগাতে পারা সম্ভব। ভাবুন, পৃথিবী কত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আর আপনি যদি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপনার মূল্যবান সময় অপচয় করেন, তাহলে আপনি ওখানেই পড়ে থাকবেন, সামনে এগোতে পারবেন না। যে কারণে আপনি পৃথিবীতে এসেছিলেন, সে কারণই যদি না জানেন তাতে হয়তো কিছু যায় আসে না, তবে যদি জেনে থাকেন তাহলে চেষ্টা করুন কিছু করতে, কারণ সবকিছু দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, আর আপনি?

এখন আমি ভাবছি এত সুন্দর করে বড় বড় নামিদামি শপিংমল থেকে শুরু করে হোটেল, রাস্তা-ঘাট কতকিছু তৈরি করা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়। কী হবে সেগুলোর যখন সবকিছুর কেনাবেচা শুরু হতে চলেছে অনলাইনে? এ প্রশ্ন আমার মনে এসেছিল করোনা মহামারির সময়। লকডাউনের কারণে আমরা ঘরে বসে অর্ডার দিলেই সব হুড় হুড় করে চলে আসত দরজার সামনে।–

অফিস-আদালত বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না গিয়ে আমরা জুমের মাধ্যমে ফোনালাপ, ভিডিওর মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের সমস্যার সমাধান করেছি। সবকিছুই ম্যানেজ হয়েছে ফিজিক্যাল মুভমেন্ট ছাড়াই। তখন ভেবেছি তাহলে এত যুগ ধরে এত কিছু তৈরি করা হলো, সবকিছু কি তাহলে পড়ে থাকবে, না কি এটাই নিউ নর্-ম!

২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর কারণে পৃথিবী লকডাউন থেকে শুরু করে শাটডাউন হয়েছিল। করোনা ভ্যাকসিন এলো আর সব কিছু আস্তে আস্তে নরমাল হতে শুরু করল। শুরু হলো বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট, তারপর চলছে যুদ্ধ।

অন্যদিকে বিশ্বের সাধারণ মেহনতি মানুষ নতুন চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে কী হবে তাদের যদি আজকের তথ্যপ্রযুক্তির জামানায় আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) সব কাজগুলো স্মার্ট ওয়েতে করতে সহায়ক হয়। শারীরিক অস্তিত্বহীন এই অ্যাসিস্ট্যান্ট শুধু গ্রাহকের কমান্ড মেনে কাজই করে না, আগে থেকে বলে রাখা হুইপ যথাসময়ে সঠিকভাবে করে রাখে। আবার সেই কাজ সুসম্পন্ন হয়ে গেলে অতীতের করে আসা কাজ সম্পর্কিত কিছু করতে হবে কি না তাও প্রভুকে জিজ্ঞাসা করে নেয়। অর্থাৎ গ্রাহকের সেবায় এই নিবেদিতপ্রাণ সবই করে তার নিজের বুদ্ধি বা মেধা খাটিয়ে। ভার্চুয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক দ্বারা গঠিত এই প্রযুক্তি যা রক্তমাংসের ব্রেন নয় অথচ সবকিছু করছে। বিশ্বের অনেক দেশ যেমন জাপান, সুইডেন আমেরিকা শুরু করেছে মানুষের পরিবর্তে রোবটের ব্যবহার। কারণ সমস্যা এসেছে আর মানুষ তার সমাধান করছে, দারুণ।

এখন যদি পণ্যদ্রব্য শেষ হয়ে যায় বা মজুত না থাকে তবে তো তা উৎপাদন করতে হবে। যেমন– বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর বিশ্বের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী নানা ডিজাইনের পোশাক তৈরি করে আসছে কয়েক যুগ ধরে। এখন অনলাইনে অর্ডার দিয়ে কিনতে হলে তো তা তৈরি করতে হবে। সেটাও না হয় এআই রোবট দিয়ে তৈরি করা সম্ভব হবে। নানা ধরনের পোশাক তৈরি করতে দরকার র-ম্যাটেরিয়ালসের এবং তার জন্য কৃষিকাজে লোকের দরকার। তাও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং এআই রোবট দিয়ে ম্যানেজ করা সম্ভব হবে।

এখন প্রশ্ন তাহলে অভাগা মানুষ জাতি, আমাদের হবে কী? আমরা কী করব? ঘরে শুয়ে বসে সময় কাটাব আর অনলাইনে সবকিছু অর্ডার দেব? বাইরে গিয়ে পার্কে ঘুরতে পারব না। মলে গিয়ে শপিং করতে পারব না। গাড়িতে করে যেখানে খুশি যেতে পারব তবে সে গাড়ি এআই নিজেই চালাবে। প্লেনে করে দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করে সুন্দর পৃথিবীকে দেখতে পারব তবে মানুষের পরিবর্তে এআই পাইলট প্লেন চালাবে।

এ কেমন অবিচার?

এত সুন্দর পৃথিবী হঠাৎ এআই দখল করে নেবে। ভাবনার বিষয়! এদিকে অতীতের মতো দুর্নীতিও করা সম্ভব হবে না। কারণ অনলাইনে কার্ড দিয়ে পে করতে হয়, ক্যাশ টাকার ব্যবহার বিলুপ্তির পথে। আমি কয়েক বছর আগে লিখেছিলাম দুর্নীতিমুক্ত সমাজ পেতে কাগজের টাকা বন্ধ করতে হবে। অনেকেই বিষয়টি পছন্দ করেনি তখন। কিন্তু এখন কী হবে?

আকাশে পাখি উড়তে দেখে যেমন একদিন রাইট ব্রাদার্সদের মনে ভাবনা এসেছিল কীভাবে মানুষও আকাশে উড়তে পারে। সেই ভাবনাকে তারা বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছিল। কোভিড-১৯ আমাদের চাপ সৃষ্টি করেছিল নতুন করে ভাবতে। কেন যেন মনে হচ্ছে এআই প্রযুক্তির যুগে মানুষের ক্ষমতা বিলুপ্তি হবে যদি আমরা এআইকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হই, সেক্ষেত্রে নতুন করে ভাবতে হবে। প্রযুক্তিগত সমাধান বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে বড় ধরনের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে পোশাকশিল্পও। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ের সফলতা ধরে রাখার জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক পটভূমি তৈরি অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। কোভিড-১৯ এ প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন এই দুটি ছিল প্রধান শক্তি, যা বাংলাদেশের পোশাক খাতের কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পেরেছিল।

এতদিন ধরে যে প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি অনুযায়ী বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে পরিচালনা করা হয়েছে, ভবিষ্যতে একইভাবে কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নতুন পন্থার উদ্ভাবন করতে হবে। উৎপাদন প্রক্রিয়ার উন্নয়ন, উৎপাদনের অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠা, সরবরাহের ক্ষেত্রে বিলম্ব দূর করা, সামগ্রিক ব্যয় হ্রাস এবং গুণগত মান উন্নয়নের দিকে কড়া নজর দিতে হবে।

যে কোনো কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য নির্ভর করে ধারাবাহিকভাবে ক্রেতাদের প্রত্যাশাপূরণের সক্ষমতার ওপর। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত মূলত বড় ধরনের রপ্তানিনির্ভর শিল্প। এর গ্রাহকদের একটি বড় অংশই খুচরা বিক্রেতা। এদের বেশির ভাগই ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। এর পাশাপাশি লাতিন আমেরিকা এবং অতি সম্প্রতি তৈরি হওয়া বেশ কিছু উদীয়মান বাজারগুলোয় বৃহত্তর রিটেইল চেইনের মাধ্যমে তাদের পণ্য বিক্রি করছে। সেক্ষেত্রে সেরা সব সরঞ্জাম যেমন কাইজেন, লিন, সিক্স সিগমা, টোটাল প্রোডাক্টিভিটি ম্যানেজমেন্ট (টিপিএম), থিওরি অব কনস্ট্রেইন্টস (টিওসি), অ্যাডজাস্ট-ইন-টাইম (এআইটি) পদ্ধতিগুলো এআইকে ব্যবহার করে শিল্পকারখানার উৎপাদনের মান আরও উন্নত করা দরকার। নতুন করে করোনার চেয়ে ভয়ংকর কিছু বা এআই-এর চেয়ে আরও স্মার্ট, কিছু আসবে না তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে? সমস্যা জীবনে আসবে তার সমাধান এবং তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সুশিক্ষা, আত্মবিশ্বাস এবং দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

আমি মনে করি শুধু পোশাকশিল্প, এআই রোবট বা অনলাইন বিজনেস নয়; নতুন প্রযুক্তি যেন আরও ভালো তথ্য ব্যবস্থাপনার দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারে এবং সেটা যেন মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে, সেটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। একই সঙ্গে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে দেশের জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান আশু প্রয়োজন। সৌর এবং বায়ু শক্তি উৎপাদনে এআই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের অবকাঠামোকে মজবুত করুন, পাশাপাশি কৃষিখাতে মনোযোগী হোন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে গাছ লাগান সারা দেশব্যাপী।

এখনও বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে কৃষি, দেশের সমগ্র অর্থনীতিতে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র দূরীকরণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় এই খাতের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমি সুইডিশদের কৃষিখাতে মনোযোগী হতে উৎসাহিত করছি কারণ যন্ত্র, তন্ত্র, মন্ত্র নয়, হৃদয়, মন, প্রাণ দিয়ে দুর্নীতি মুক্ত মানুষ এবং ক্যাশ লেস সমাজ চাই। কারণ ভালোবাসা, অনুভূতি, অনুকরণ, অনুসরণ ছাড়া জীবন বৃথা তবে যুক্তির মধ্যে দিয়ে এসেছে প্রযুক্তি কী করে তাকে অযুক্তির মধ্যদিয়ে এত বছর পরে বলব যে প্রযুক্তি আমাদের পরনির্ভরশীল করতে শুরু করেছে।

অনেক দিন ধরে প্রযুক্তির ওপর ভেবেছি। আমার অনেক কথা লেখার ছিল, আমিও চাই সবার মনে প্রশ্ন জাগুক, সমাজের সবাই জেগে উঠুক, সবার মনে ঝড় উঠুক আমার মতো করে এবং সেই ঝড় বয়ে আনুক নতুন দিগন্ত সবার মনের ঘরে এবং আমরা যেন প্রাউড ফিল করতে পারি— টুগেদার উই হ্যাভ মেড দিস ওয়ার্ল্ড বিউটিফুল।

রহমান মৃধা : সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজীপুরে বাসচাপায় যুবক নিহত

দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে থাকবে বিএনপি : আজাদ

সাড়ে ৩ কোটি টাকার চাল নিয়ে লাপাত্তা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা

সাতক্ষীরায় ৯ মাস বেতন পাচ্ছেন না ৪২০ শিক্ষক

সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

গাজীপুরে শান্তিপূর্ণভাবে চলছে পোশাক কারখানা

বৃষ্টি আর কত দিন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

ইসরায়েলি হামলায় সিরিয়া-লেবানন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

দুপুরের মধ্যে ঝড় হতে পারে যেসব অঞ্চলে

আরেক দেশ থেকে ইসরায়েলে হামলায় ২ সেনা নিহত, আহত ২৪

১০

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে জবির স্লোগান ‘বিপ্লবে বলীয়ান নির্ভীক জবিয়ান’

১১

শিক্ষক দিবসে যেসব কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে

১২

হত্যা মামলায় রসিকের সাবেক কাউন্সিলর মিলন গ্রেপ্তার

১৩

বৈরুত বিমানবন্দরের পাশেই ইসরায়েলি তাণ্ডব

১৪

সিলেটে রায়হান হত্যা মামলায় ২ যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৫

৫ অক্টোবর : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৬

রোহিঙ্গা সংকট একটি তাজা টাইম বোমা : ড. ইউনূস

১৭

বন্যার পানিতে মায়ের লাশের সঙ্গে ভেসে এল শিশু

১৮

লেবাননের যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষ, পিছু হঠল ইসরায়েলি বাহিনী

১৯

সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জানাজা কখন-কোথায়?

২০
X