আনোয়ার হাকিম
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৩ পিএম
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
আনোয়ার হাকিমের নিবন্ধ

পুরুষকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা দুরূহ হবে

ছবি : সৌজন্য
ছবি : সৌজন্য

দিবসের শেষ নেই। উদযাপন আর আয়োজনেরও কমতি নাই। এরি মধ্যে কিছু দিবস আসে আর যায়। তা নিয়ে তেমন সাড়াশব্দ হয় না। ১৯ নভেম্বর বিশ্ব পুরুষ দিবস এমনই একটা দিন।

ছেলেবেলা থেকেই শুনে আসছি এ সমাজ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। সমাজের অগ্রযাত্রায়, উন্নয়ন পথে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা অন্তরায়। তাই এর মূলে আঘাত করতে হবে। ভেঙে ফেলতে হবে হাজার বছরের একচ্ছত্র আধিপত্যের ভিত। নারীবাদীরা আরও কঠিন কঠিন শব্দ প্রয়োগ করে থাকেন। মিডিয়ার কাছে এরূপ কথাবার্তা খুবই লোভনীয় বলে বিবেচিত হয়। তাই ছাপার অক্ষরে বড় বড় হরফে উৎকলিত হয়। পুরুষের প্রতি এরূপ বিষোদগার দেখে মনেই হতে পারে শক্তির দাপটে, বুদ্ধির কুটকৌশলে, শারীরিক গঠনের আনুকূল্যে আর শৌর্যবীর্যে পুরুষ এ পর্যন্ত নারীদের কেবলই দাবিয়ে রেখেছে আর ইচ্ছেমতো সমাজ, সংসার ভাঙাচোরা করেছে।

সমাজের প্রতি, সংসারের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই, কোনো শেয়ারিং-কেয়ারিং মনোভাব নেই। আছে শুধু আধিপত্য বিস্তার, দাবিয়ে রাখার উদগ্র মানসিকতা আর প্রবঞ্চনা উপহার। যেন এক ফোঁটা বীর্যের বাইরে পুরুষের বাহাদুরীর কিছু নেই। শারীরিক শক্তিমত্তার বাইরে তার কোনো হাতিয়ার নেই। উত্তরসূরি হিসেবে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে প্রাপ্ত নেতৃত্বের বাড়তি সুবিধা ছাড়া তার গুণাবলি নেহায়েতই অসার। ভাবটা এমন দাঁড়িয়েছে যে পুরুষের এরূপ অবিমৃষ্যকারী আচরণের কারণেই তার চিত্র নারীর প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। বিষয়টি কি আসলেই সেরূপ?

দিবস উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য থাকে সমাজের অনগ্রসর অংশকে সামনে নিয়ে এসে যথাযথ মূল্যায়ন করা, গুণাগুণ প্রচার করা ও উন্নয়ন অভিযাত্রায় তার অংশগ্রহণ ও বিকাশ নিশ্চিত করা। সে ফর্মুলা অনুযায়ী ‘পুরুষ দিবস’ দিবস হিসেবে ফোকাসে আসার কথা না। বরং নারী দিবসই যথাযথ। তাই বিশ্ব পুরুষ দিবস তেমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেনি আজও। আমাদের দেশে তো নয়ই। বহির্বিশ্বে উইক অ্যান্ড পালনের মতো পুরুষ দিবস গতানুগতিক হিসেবে হয়ত কিছুটা মুখরোচক ও কিছুটা আনন্দ-উদযাপনের উপাদান হিসেবে উদযাপিত হয়ে থাকে। আমাদের দেশে এ নিয়ে কোনো আওয়াজ-আয়োজন নেই। যতটা আছে নারী দিবস নিয়ে, নারী অধিকার নিয়ে। পুরুষ দিবস কোনোক্রমেই নারী দিবসের প্রতিপক্ষ নয়।

এবারে আসা যাক এই পুরুষ দিবসের পটভূমি নিয়ে। এর ইতিহাস বেশি দূরের না। এই দিবস উদযাপনের সাল-তারিখ নিয়ে নানা মতান্তর আছে। কেউ বলে থাকেন ১৯৯২ সালে এই দিবসের প্রস্তাব করা হয়। কেউ বলেন মূলত- ১৯৯৪ সালে। আবার কেউ কেউ বলে থাকেন, ১৯২২ সাল থেকে তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়নে এই দিবসের শুভারম্ভ হয় ‘আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে’ হিসেবে। মূল- পুরুষদের বীরত্ব আর ত্যাগের প্রতি সম্মান দেখাতেই এই দিবস উদযাপন করা হতো।

২০০২ সালে রাশিয়া ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহে তা পালন করা হয় ‘ডিফেন্ডার অব দ্য ফাদার ল্যান্ড ডে’ হিসেবে। তবে ১৯৯৯ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে এই দিবস পালিত হয়ে আসছে বলেই সমধিক স্বীকৃত। এর উদগাতা হলেন ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জেরোম তিলকসিং। এই দিবসের উদ্দেশ্য হলো পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক সমতা বিধান ও এর প্রচার, বালক ও পুরুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা, পুরুষের ইতিবাচক দিক তুলে ধরা এবং সমাজ, পরিবার, বিয়ে ও শিশু যত্নের ক্ষেত্রে পুরুষ ও বালকদের অবদানকে তুলে ধরা। মোদ্দাকথা আদর্শ পুরুষের কথা ও ধচিত্র বেশি বেশি করে সকলকে জানানোই হচ্ছে এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমেই একটি নিরাপদ, উন্নত ও সুখময় বিশ্ব গড়ে তোলা সম্ভব বলে আয়োজকরা মনে করে থাকেন।

সৃষ্টিকর্তার প্রথম সৃষ্ট হোমোসেপিয়েন্স একজন পুরুষ। এরপর নারীর সৃষ্টি। মূল অনেক ধর্মেই এই মত স্বীকৃত। পরিবারে পুরুষকে অভিভাবকত্ব প্রদান করা হয়েছে এবং তার জন্য ন্যায়ানুগ ও ইনসাফভিত্তিক ফয়সালার কথা বলা হয়েছে। এই অভিভাবকত্ব প্রয়োগে পুরুষের ভুলভ্রান্তি হয়েছে, হতেই পারে। অনুরাগ-বিরাগ কাজ করেছে, করতেই পারে। কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-মাৎসার্য ক্রিয়া করেছে। করাটাও বিচিত্র না। বাড়াবাড়ি বা কমবেশি হয়ে থাকতে পারে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই বলে সমাজে, পরিবারে পুরুষের দায়িত্বের বোঝা এতটুকু লাঘব হয়নি। নারীর গুরুত্বও হ্রাস পায় নি। দেশ-বিদেশের আদিবাসী সমাজের কথা অবশ্য আলাদা।

পরিবারে দায়িত্বশীলতার দিক থেকে পুরুষ অগ্রে থাকে। তাই বলে নারীরা মোটেই পশ্চাতে থাকার, উপেক্ষার, অবহেলার পাত্র না। তারা সহগামী। এই বোধ জাগ্রত থাকলে পুরুষপ্রধান সমাজে নারীদের বঞ্চনা থাকার কথা না। নারীবাদীদের সোচ্চার আন্দোলনের অনেক পজিটিভ দিক রয়েছে। তারা লিঙ্গ সমতা বিধানে পুরুষের দায়িত্বের কথা তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছে। পুরুষও উদ্যোগী হয়ে নানাবিধ বিধি-বিধান- অনুশাসন তৈরি করেছে। হয়ত তাতে এখনো পুরোপুরি লিঙ্গ-সমতা বিধান হয়নি। তবে আমাদের দেশে আমাদের সমাজ জীবনে যতটুকু হয়েছে তা এখন দৃশ্যমান হচ্ছে।

নারীবাদীদের উগ্র মতবাদ এপথে বহুমুখী জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি করবে। বিশ্বব্যাপী নারীদের কাছে স্বাধীনতা আর স্বেচ্ছাচারের ভুল ম্যাসেজ যাচ্ছে। ব্রিটিশ আমল থেকেই এ উপমহাদেশে নারীদের সম্ভ্রম ও অধিকার রক্ষায় নানারূপ প্রটেকশনের ব্যবস্থা রেখে আইন করা হয়েছে। স্বাধীনতা উত্তর দেশে নারী নির্যাতন, বাল্যবিয়ে, বহুবিয়ে, যৌতুক নিরোধসংক্রান্ত আইন প্রণীত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এ আইনের অপপ্রয়োগও হচ্ছে। পুরুষ নির্যাতনের বিষয়টিও এখন মুখে মুখে উঠে আসছে। তাই সমাজ বিবর্তনের ধারায় লিঙ্গ সমতার গতিও সাযুজ্যপূর্ণ হতে হবে।

অন্ধভাবে পাশ্চাত্য দর্শনকে ধারণ ও অনুসরণ করতে গিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে, পারিবারিক আবহাওয়া বৈরী হচ্ছে। পরিবার ভংগুর হয়ে যাচ্ছে। এগুলো থেকে মুক্তি পেতে নারী ও পুরুষের নিবিড়তা, বোঝাপরা ও সহনশীলতা দরকার। পুরুষকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা দুরূহ হবে। আবার নারীদের প্রাপ্য হিস্যা না দিয়ে কুসংস্কারাবদ্ধ করে রাখলে সমাজ-প্রগতি ব্যাহত হবে। উভয়কে এগিয়ে আসতে হবে মুক্ত মন নিয়ে। এক্ষেত্রে কবি নজরুলের যুগান্তরকারী চরণ স্মর্তব্য, ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’।

নারীর আজকের এই অবস্থানে আসার জন্য পুরুষের মমত্ববোধ, বিবেচনাবোধ ও আন্তরিক প্রয়াস প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রেখেছে। পুরষ সামনে থেকে পরিবারকে নেতৃত্ব দেয়। তাই পারিবারিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিধান করা তার অন্যতম দায়িত্ব। আর নারী পরিবারের ভেতরকার বিষয়াবলি সামাল দিয়ে থাকে। তার মানে এই নয়, পুরুষ পরিবারের ভেতরকার বিষয়ে বেখবর আর নারী বাইরের বিষয়ে নিরাসক্ত। পুরুষ জন্মগতভাবেই সাহসী। প্রকৃতির মোকাবিলায়, পারিবারিক দায়িত্ব পালনে তাই তাকে সাহসী হতে হয়, হতে হয় উদ্যমী ও সফলকাম। হতে হয় ধৈর্যশীল, বিবেচনাবোধ সম্পন্ন ও পথ নির্দেশক। যাকে বলে ফ্রেন্ড, ফিলোসফার অ্যান্ড গাইড। নারীর অকৃত্রিম ভালোবাসা আর নিবিড় সাহচর্য ছাড়া পুরুষের দীপ্তি ম্লান হতে বাধ্য।

বর্তমান বৈশ্বিক ঢেউয়ে আমরা পাশ্চাত্যকে অন্ধভাবে অনুসরণের পথে যাত্রা শুরু করে দিয়েছি। সামাজিক রীতি, অনুশাসন, ধর্মীয় দীক্ষা আর দেশজ সংস্কৃতিকে সরিয়ে রেখে পাশ্চাত্যকে অন্ধভাবে অনুসরণ করতে গিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত হোচট খাচ্ছি। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত’ হচ্ছে আমাদের পরিবার, ভাঙনের মুখে পড়ছে আমাদের পারিবারিক বন্ধন, বিশ্বাস ও আস্থার ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে সন্দেহবাতিকতা আর নৈতিক ও অর্থনৈতিক মূল্যবোধ পড়ছে মুখ থুবড়ে। তাই পুরুষের অসীম শক্তি ও অমিত ক্ষমতাকে মূল্যায়নে নিতে হবে। তার এই ভূমিকা পালনে নারীকে হতে হবে উদ্দীপক। আর পুরুষকেও তার নারী ও পরিবারকে দেখতে হবে সামগ্রিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে।

অস্বীকার করার উপায় নেই, নারীর ক্ষমতায়ন পরিবারের উন্নয়নে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখছে। রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থার খোলস ছেড়ে নারীরা কর্মে নিয়োজিত হয়েছে, হচ্ছে। পরিবারে তাদের ভূমিকা রাখছে। শিক্ষায়, অর্থনীতিতে, কৃত্যভিত্তিক পেশায় অবদান রাখছে। উন্নয়ন অভিযাত্রায় এর বিকল্প নেই। প্রয়োজনের তাগিদেই পুরুষতান্ত্রিক রক্ষণশীল মানসিকতা আস্তে আস্তে উদার ও বাস্তবানুগ হয়েছে, হচ্ছেও। এই দিক থেকে পুরুষ দিবসের প্রবর্তনা ও প্রচারণা পুরুষকে নিজ দায়িত্ব সম্মন্ধে আরও সচেতন, দায়িত্ববোধসম্পন্ন ও বাস্তবায়ন কর্তা হিসেবে আরো উদ্যোগী হতে ভূমিকা রাখবে।

পরিবার ভেঙে নয়, পরিবারে টানাপড়েন সৃষ্টি করে নয় নারী-পুরুষ উভয়ের যৌক্তিক সমঝোতার মাধ্যমে পরিবার তথা সমাজ হোক সুখময় ও সমৃদ্ধশালী আর কর্ম হোক উন্নয়নমুখী-পুরুষ দিবসে এই হোক আমাদের সবার প্রত্যাশা।

আনোয়ার হাকিম : অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন / জনরায়ের অপেক্ষায় কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ, আ.লীগের ৩ নেতা গ্রেপ্তার

ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা ৮৮ শতাংশ

ক্যাশ অফিসার নিচ্ছে ওয়ান ব্যাংক

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু

পঙ্গুত্বের পথে আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সুজন

সিলেটে জমি নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১ 

কাগজের নৌকা ভাসাতে গিয়ে স্রোতে ভেসে গেল শিশু

লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরও ১৫১ প্রবাসী

নিউইয়র্কে কমলা হ্যারিসের জয়

১০

বিএনপির মিছিলে হামলা, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১১

বগুড়ায় আন্দোলনে শহীদ ১৯ জনের নামে স্মৃতিফলক

১২

০৬ নভেম্বর : টিভিতে আজ দেখা যাবে যেসব খেলা

১৩

যুক্তরাষ্ট্রে ভোট গণনা চলছে, এগিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প

১৪

ক্যানসার প্রতিষেধক ননী ও করোসল চাষে সাফল্য

১৫

সাতক্ষীরায় থানা থেকে লুট হওয়া পিস্তলসহ গ্রেপ্তার ২

১৬

০৬ নভেম্বর : নামাজের সময়সূচি

১৭

৬ নভেম্বর: ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল

১৮

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের নবনিযুক্ত পরিচালকের সঙ্গে সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাক্ষাৎ

১৯

ঢাকায় মধ্যরাতে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি

২০
X