ড. কামরুল হাসান মামুন
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৩, ১২:২৭ পিএম
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৩, ০১:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ড. কামরুল হাসান মামুন

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে চলছে তাতে ভালো কোনো ভবিষ্যৎ দেখছি না

ড. কামরুল হাসান মামুন
ড. কামরুল হাসান মামুন

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টাইমস হায়ার এডুকেশন এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ তালিকায় স্থান পায়নি বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়। তালিকায় ১৮৬তম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯২ তম স্থানে আছে বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ তালিকায় বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় স্থান না পাওয়া এবং বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পড়াশোনার পরিবেশ নিয়ে দৈনিক কালবেলার সাথে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম.এম. মুসা

কালবেলা : সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টাইমস হায়ার এডুকেশন র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পায়নি। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

ড. কামরুল হাসান মামুন : প্রথমত, উন্নতি করার কোনো চেষ্টা আমরা করছি কিনা, সেটা আগে ভাবতে হবে। উন্নতি করার জন্য একটা ইউনিভার্সাল রুলের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তেমনি ইউনিভার্সিটি হতে হলে কিছু ইউনিভার্সাল রুল মানতে হয়। একটি বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে চলে, তার সর্বজনীন নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হয়। আমাদের মতো করে চললে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় হবে না। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের শর্তাবলি আমরা জানি। শিক্ষকদের প্রমোশনের নীতিমালাও আমরা জানি। ফলে কীভাবে আশা করব, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভালো করবে?

একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো গবেষণা করতে হলে পিএইচডি প্রোগ্রাম থাকতে হয়। পিএইচডি প্রোগ্রামকে সফল করতে হলে একটি শক্তিশালী পোস্ট-ডক প্রোগ্রাম দরকার। শিক্ষক, পোস্ট-ডক এবং শিক্ষার্থীরা মিলে যখন একটা টিম হিসেবে গবেষণা কাজ পরিচালনা করবেন, তখন একটি বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে এগোবে। বিদেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত পোস্ট-ডক রয়েছে, অথচ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনও পোস্ট-ডক নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে যারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় পিএইচডি করতে যান, আমরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে পারি। তাদের দিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়াতে পারি। তাহলে আমাদের ছাত্ররা কিছু শিখবে।

বর্তমানে পৃথিবীর যে কোনো ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক হতে হলে ন্যূনতম যোগ্যতা হলো তার পিএইচডি থাকতে হবে। অনেক জায়গায় এ শর্ত আরও বেশি। পিএইচডির পরেও দুই বছর বা তিন বছরের একটা পোস্ট এক্সপেরিয়েন্স ডক লাগে। এই এক্সপেরিয়েন্সের মাধ্যমে সে প্রমাণ করতে পারে, সে নিজে নিজে একটি গবেষণাকার্য পরিচালনা করতে পারে। কিন্তু এই বিষয়গুলো আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেই।

এর পরে আছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রসঙ্গ। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কোথায় থাকবে, কেমনভাবে থাকবে, কেমন পরিবেশে থাকবে, কী খাবে, কেমন লাইব্রেরি পরিবেশে পড়াশোনা করবে—এসব কিছুর ন্যূনতম সুবিধা কি আমরা দিতে পারি? একজন ছাত্র আবাসিক হলে থাকা মানে তার একটা বিছানা থাকবে, তার একটা নিজস্ব বেড থাকবে, তার একটা ওয়ার্ডরোব থাকবে, যেখানে সে নিজের কাপড়গুলো গুছিয়ে রাখবে। একটা বুকশেলফ বা টেবিল থাকবে, যেখানে সে তার বইগুলো রাখবে এবং পড়াশোনা করবে। এগুলো হলো একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ন্যূনতম চাহিদা।

আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এই ন্যূনতম চাহিদা কি পূরণ করতে পারছি? না পারলে এখান থেকে একজন ভালো ছাত্র কীভাবে তৈরি হবে! উল্টো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিটি হলে থাকে গেস্টরুম নামের টর্চার সেল। যেখানে ছাত্র হয়ে আরেকজন ছাত্রের গায়ে হাত তোলে। ছাত্র হয়ে ছাত্রদের টর্চার করে। ছাত্র হয়ে ছাত্রদের জোর করে মিছিলে নেয়। পৃথিবীতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এ ধরনের কোনো উদাহরণ রয়েছে? তাহলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইউনিভার্সাল হলো না। ইউনিভার্সিটি যদি ইউনিভার্সাল না হয়, তাহলে তো এটা লোকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটা কোনো ইউনিভার্সিটি না।

কালবেলা : পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষকরা চলে যাচ্ছেন কেন?

ড. কামরুল হাসান মামুন : গত ১০ বা ২০ বছরের দিকে তাকালে দেখা যাবে, আমাদের অনেক সেরা শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন। অনেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে চলে গেছেন। অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন শিক্ষক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক লাখ টাকা বেতন পান, সেখানে তিনি যদি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন, তিনি এক মাসে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা বেতন পান। তাহলে তিনি চলে যাবেন না কেন?

অনেকে চলে যান, আবার কেউ কেউ রয়ে যান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। যারা এত বড় সুযোগ নষ্ট করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়ে যান, তারা কি কোনো সম্মাননা পান? তাদের স্যালুট জানানো উচিত। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো শিক্ষকরা কি একটা ভালো পদে যেতে পারেন? তারা কি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্মানিত পদে যেতে পারেন? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ক্ষমতা যাদের হাতে রয়েছে, তাদের দিকে একবার তাকান। একজন ভালো যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক কি কোনো বড় প্রশাসনিক পদে গিয়েছেন? নেতৃত্ব যদি ভালো না থাকে, যারা বিশ্ববিদ্যালয় চেনেন-বোঝেন, ছাত্রদের দুঃখ বোঝেন তারা যদি নেতৃত্বে না থাকতে পারেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় এগোবে কীভাবে!

আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হয়ে জনগণের করের টাকায় বেতন নিয়ে কীভাবে আমি দলান্ধ রাজনীতি করি! এমনটা বিশ্বের কোন দেশে রয়েছে যে শিক্ষকরা তাদের শিক্ষকতা বাদ দিয়ে দলান্ধ রাজনীতিতে মেতে থাকেন? এভাবে চললে কীভাবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো র‌্যাঙ্কিং আশা করব।

আমার বিভাগে দুইজন শিক্ষক ছিলেন। একজন হলেন ড. আরসাদ মোমেন, তিনি আমেরিকা থেকে পিএইচডি এবং অক্সফোর্ড থেকে পোস্ট-ডক করে নিজের ইচ্ছায় বাংলাদেশে এসেছিলেন। কিন্তু আমরা তাকেও ঠিকমতো সম্মান দিতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি চলে গেলেন। তেমনিভাবে আরেকজন শিক্ষক ছিলেন ড. রাকিবুর রহমান। তিনিও আমেরিকা থেকে পিএইচডি করে এবং ইউরোপের তিন-তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট-ডক করে দেশে এসেছিলেন। কয়েক বছর এখানে শিক্ষকতাও করেছিলেন। তারপর তিনিও জার্মানিতে ফিরে গেছেন। এ রকম আরও অনেক উদাহরণ রয়েছে। এই যে তারা চলে যাচ্ছেন তাতে কি আমাদের প্রশাসনের কিছু মনে হচ্ছে? প্রশাসনের কি কোনো দুঃখ হচ্ছে এটাতে? এই শিক্ষকরা যাতে চলে না যান, তার জন্য প্রশাসন কি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে? নিচ্ছে না।

এসব ভালো ভালো শিক্ষক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আমরা তাদের ঠিকমতো মূল্য দিতে পারছি না। আমাদের ছাত্ররা বঞ্চিত হচ্ছে। এটি এক ধরনের অন্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল, তারা তা নিচ্ছে না।

এমনিতেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভালো শিক্ষকের খুবই সংকট। এর মধ্য থেকেও যে ভালো শিক্ষকরা আসছেন, তাদের ধরে না রাখতে পারাটা আমাদের ব্যর্থতা। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাঙ্কিং কীভাবে ভালো হবে!

কালবেলা : বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উন্নতিতে করণীয় কী?

ড. কামরুল হাসান মামুন : যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র‌্যাঙ্কিংয়ে ভালো করে, আমাদেরও সেভাবে চলতে হবে। সেভাবে না চললে আমরা এগোতে পারব না। চীনের একটা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সিনহুয়া ইউনিভার্সিটি, যেটি ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৬ নম্বর অবস্থানে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে ১১ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৬ নম্বর অবস্থানে, অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান কোথায়! তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইউনিভার্সাল বানাতে পেরেছে, আমরা পারিনি। সেখানে শিক্ষক হতে হলে মানসম্পন্ন পিএইচডি থাকতে হয়, পোস্ট-ডক থাকতে হয়। সেখানে শিক্ষকরা মানসম্মত বেতন ভাতা পান। শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পান। সেখানে শিক্ষার্থীদের হলের সুযোগ-সুবিধা একটা ফোর স্টার হোটেলের মতো।

আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি পড়াশোনার ঠিকমতো পরিবেশই না পায়, যদি মারামারি করে বিশ্ববিদ্যালয় পার করে তাহলে এটাকে বিশ্ববিদ্যালয় বলা যায় না। এখানে তারা শেখে কীভাবে সিট দখল করা যায়। এখান থেকে বড় হয়ে তারা নদী দখল করে, বন দখল করে, মানুষের বাড়ি দখল করে। এই দখল করার সংস্কৃতি তারা বিশ্ববিদ্যালয়েই শিখে যায়। আমরা তো ভালো মানুষ তৈরি করছি না। ভালো মানুষ তৈরি করার ব্যবস্থাও করছি না।

কালবেলা : বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ভালো করছে। কেন বলে মনে করেন?

ড. কামরুল হাসান মামুন : তারা ভালো করছে কারণ, তারা ভালোভালো শিক্ষক নিয়ে আসছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরও অনেক সমস্যা রয়েছে। তবে তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খুঁজে খুঁজে ভালো শিক্ষক নিয়ে আসছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলি, তারা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমেরিকার পিএইচডি ছাড়া গ্রহণ করে না।

একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকদের অন্য বিশ্ববিদ্যালয় আরও বড় প্রস্তাব দিয়ে নিয়ে আসে। এই বিষয়টা পৃথিবীব্যাপী সব দেশেই কমবেশি ঘটে। অথচ আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি কখনো অন্য কোনো জায়গা থেকে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ভালো কোনো শিক্ষককে ভালো সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে নিয়ে এসেছি? আমরা কখনো এ ধরনের কোনো চেষ্টাই করিনি। এই চেষ্টাটা যদি করা না হয় তাহলে সেখানে ভালো শিক্ষক কীভাবে আসবেন?

একজন ভালো শিক্ষককে সম্মান দিতে হয়। সম্মান দিয়ে নিয়ে আসতে হয়, সম্মান দিয়ে রাখতে হয়। কিন্তু সেই ব্যবস্থা বা সেই পরিবেশ যদি না থাকে, তাহলে এ রকমই হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে চলছে, সেখানে কোনো ভালো ভবিষ্যৎ দেখছি না। ভালো শিক্ষকের সংখ্যা দিন দিন কমছে এবং নতুন যে নিয়োগগুলো হচ্ছে, সেগুলো রাজনীতির ভিত্তিতে। এভাবে আমরা ভালো শিক্ষক কীভাবে পাব? শিক্ষকদের বেতন কাঠামো খুবই নিম্ন, সুযোগ-সুবিধাও খুবই কম, পরিবেশ খুবই নিম্নমানের, ছাত্রদের থাকার ব্যবস্থাও খুবই নিম্নমানের, তাদের খাওয়ার ব্যবস্থাও মানসম্মত নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো একটি ক্যাফেটেরিয়া নেই, যেখানে ছাত্র-শিক্ষক একসঙ্গে বসে আড্ডা দিতে দিতে নাশতা করবে, চা খাবে, গল্প করবে। এখানে শিক্ষকদের জায়গা আলাদা, ছাত্রদের জায়গা আলাদা। শিক্ষকদের পরিবেশ আলাদা, শিক্ষার্থীদের পরিবেশ আলাদা। শিক্ষক ও ছাত্রদের ওয়াশরুম আলাদা। এ রকম শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলাদা হওয়ার সংস্কৃতি কেন? পৃথিবীর আর কোথাও কি এমনটি আছে?

ছাত্র-শিক্ষক একসঙ্গে যাবে, একসঙ্গে চলবে, একসঙ্গে খাবে, গল্প করবে। এই সংস্কৃতি যদি তৈরি না হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা কার কাছ থেকে শিখবে? ক্লাসরুম থেকে একজন শিক্ষার্থী যা শিখে, শিক্ষকের সঙ্গে চলাফেরার মাধ্যমে সে আরও বেশি কিছু শিখতে পারে। কিন্তু সেই পরিবেশ তো আমাদের এখানে নেই।

এ জন্যই আমি বলি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আসলে ইউনিভার্সাল না। বৈশ্বিক ইউনিভার্সিটি যে রকমটা হওয়া উচিত, যা যা থাকা উচিত তার কিছুই আমাদের এখানে নেই। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হলো ভালো মানের শিক্ষক। একজন ভালো মানের শিক্ষক যে কত মানুষের জীবন তৈরি করে দিতে পারে, এই গুরুত্বটা আমরা এখন পর্যন্ত বুঝতে পারিনি। এমনকি আমাদের রাষ্ট্রও এটা বুঝতে পারেনি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বাজেটও খুবই কম। ভালো বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হতে হলে রাষ্ট্রকে সর্বপ্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের তৈরি করার চিন্তা করব, ততক্ষণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান ভালো পর্যায়ে যাবে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র‌্যাঙ্কিংয়ে কখনো ভালো হবে না।

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জামায়াত রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে নেয় না : সেলিম উদ্দিন

২৩ রানের জন্য ফেরারি মিস আর্যবীরের

বড় যুদ্ধ বাধলে যেসব দেশকে পাশে পাবে রাশিয়া

মেসির কণ্ঠে বার্সেলোনার প্রশংসা

‘জনগণের বিরুদ্ধে গেলে সরকারকে এক সেকেন্ডও দেওয়া হবে না’

আইসিসির চুক্তিতে সই করা ১২৪ দেশে গেলেই গ্রেপ্তার হবেন নেতানিয়াহু

বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে জনগণ উদগ্রীব : আমান

নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে যাব : ধর্ম উপদেষ্টা

নির্বাচনী সংস্কার সবার আগে দরকার : এ্যানি 

গুমের সঙ্গে জড়িতরা রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না : প্রেস সচিব

১০

এক ইলিশের দাম ৬ হাজার টাকা

১১

ইয়াং অ্যাক্টিভিস্ট সামিট ২০২৪ লরিয়েট সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশি তরুণ

১২

ছায়ানটের লোকসংগীত আসরে দেশসেরা ৫ গীতিকবির গান

১৩

চাঁদাবাজদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পুলিশে দিন : হাসনাত আবদুল্লাহ

১৪

বিপ্লবী সরকারের উপদেষ্টা হবেন বিপ্লবী : রিজভী 

১৫

ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে বোলিংয়ে টাইগাররা

১৬

নাটোরে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

১৭

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে ভুয়া মামলা, স্ত্রীসহ ৩ জন পুলিশ হেফাজতে

১৮

মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ : ধর্ম উপদেষ্টা

১৯

হঠাৎ কেন ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়াল ইরান

২০
X