খন্দকার সিহাবুর রহমান
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০১ পিএম
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নদীমাতৃক বাংলাদেশের সংকট : হাইড্রোপলিটিক্স ও প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষার ভবিষ্যৎ

তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেচ প্রকল্প। ছবি : সংগৃহীত
তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেচ প্রকল্প। ছবি : সংগৃহীত

দিগন্তে ডুবছে সূর্য। আকাশ রঙিন। দূরে পালতোলা নৌকা ধীর গতীতে চলছে। বাংলার আবহমান কালের এ চিত্র চোখে ভাসে। অন্তর্বর্তী সরকারের বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ২৮ মার্চ, ২০২৫ তথ্যমতে ১ হাজার ২৯৪টি নদ-নদী খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) এর তথ্যমতে, ৫০৭টি নদী হারিয়ে গেছে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে। সংখ্যাটা লক্ষ্য করতে হবে। যে দেশ নদীমাতৃক সে দেশের নদী বিলীন হওয়া মানে অস্তিত্বের সংকট।

বাংলাদেশকে 'Defender’s Paradise' বলা হয়। যদিও তা আফগানিস্তান, সুইজারল্যান্ডের মতো না। তবে ১৯৭১ এর যুদ্ধে বর্ষাকাল এবং এই দেশের নদীগুলোই আমাদের সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল। 'হাইড্রোপলিটিক্স' এর শিকার হওয়া এই দেশটির 'Natural Defense' ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্রমাগত। 'Hydropolitics' শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ 'Hydor' থেকে যার অর্থ পানি। পানির রাজনীতিকে সহজ ভাষায় 'হাইড্রোপলিটিক্স' বলা হয়।

বাংলাদেশের ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদী আছে। ৫৪টি ভারতের সাথে এবং ৩টি নদী মিয়ানমারের সাথে। বাঁধ বসানো হয়েছে আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর অনেকগুলোতেই। এর মাঝে ফারাক্কা, তিস্তা অন্যতম। বাঁধের কারণ আমরা দেখি কয়েকটা বিষয়ে যথা : সেচ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলবিদ্যুৎ ইত্যাদি। সমস্যার বিষয় হলো এসব বাঁধের কারণে বাংলাদেশের নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়া। নদীর সংখ্যা যদি কমে যায় এবং অস্তিত্বের সংকট যদি তৈরি হয় তাহলে 'Defender’s Paradise' খ্যাত বাংলাদেশের অবস্থানগত এই সুবিধা কি হুমকির মুখে পড়বে না?

আমরা যদি খুব বেশি দূরে না ও যাই, আগস্ট, ২০২৪ এর বন্যায় যখন ভারতের ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়া হয়, তার আর্থিক ক্ষতির হিসাব করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এই ক্ষতির পরিমান ১১ টি জেলার সমষ্টিগত ১.২৩ বিলিয়ন ইউ.এস ডলার। যা FY-২৫ জাতীয় বাজেটের ১.৮১%। এই দায়ভার জনগণকেই তো নিতে হয়েছে। এই যে আর্থিক ক্ষতি এবং সেই সময়ে দেশকে রাজনীতিতে কোনঠাসা করার পায়তারা, অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা এটাকে কি ব্যবহার করলো না হাইড্রোপলিটিক্স দিয়ে? হাইড্রোপলিটিক্স দিয়ে তারা কি দুর্বল করে দিতে চাইছে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের পথচলা?

ভারতের মিডিয়া অনুযায়ী ধরে নেওয়া হলো এটা প্রকৃতিগত। তবুও এখানে অনেক বিতর্কিত বিষয়ও আছে। না জানিয়েই সেই বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছিল। যাই হোক, বাঁধ নির্মানের ফলে এবং সেটাকে 'হাইড্রোপলিটিক্স' এর ধারায় নিয়ে যাওয়াটা এক কূটনৈতিক কৌশলমাত্র। বাংলাদেশকে সবসময়ই ফারাক্কা, তিস্তা বাঁধের মাধ্যমে কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে অর্ধশত বছর অর্থাৎ স্বাধীনতার পর থেকে।

বাংলাদেশের ‘ন্যাচারাল ডিফেন্স’ কি কি? ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়, সুনামগঞ্জের হাওড়, চলন বিল, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা এবং জনবহুল দেশ, আরও অনেক কিছু। এগুলো যেমন শক্তির জায়গা তেমনই দুর্বলতার জায়গাও বটে। এগুলো সবই নদীর উপর নির্ভরশীল। নদীগুলো বাঁধের কারণে হুমকির মুখে পড়লে এটা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য ক্ষতির দিকটাই ইশারা করে। সেই অদূর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হবে আমাদের।

’৭১-এর যুদ্ধে আমরা যেমন উপকৃত হয়েছি, জার্মানরা যেমন রাশিয়াকে আক্রমন করতে গিয়ে শীতের দরুন বিপর্যস্ত হলো এসবই তো মনে রাখতে হবে। ভারতের তৎকালীন মানেকশ বর্ষাকালের কারণে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে ৩ রা ডিসেম্বরের আগে আসলেন না। কারণ বর্ষাকাল যথোপযুক্ত সময় ছিল না যুদ্ধের জন্য। ইন্দিরা গান্ধীও তা মেনে নিয়েছিলেন। আমরা একটু হলেও এখন এই নদীর ভূমিকা বুঝতে পারছি হয়তোবা। বর্ষাকাল এবং নদীর কারণে ট্যাংক দিয়ে আক্রমণ কিংবা গেরিলা আক্রমণে পাকিস্তানিরা টিকতে পারেনি সেসময়।

বাঁধ নির্মানের ফলে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে কি কি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তার একটা ছোট্ট উদাহরণ দেখা যাক। রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) এর তথ্যমতে, নদীপথ শুকিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের ২৪,০০০ কিমি পথ কমে এসেছে। নদীতে পরিবহন খরচ ১.১২ টাকা টনপ্রতি। যেখানে স্থলপথে অর্থাৎ রাস্তার মাধ্যমে তা ২.৮১-৩.১৫ টন প্রতি (২০২৪)। অর্থনীতি কি রাজনীতির সাথে সংযুক্ত নয়? রাজনীতিতে তো সামরিক শক্তিমত্তাও জড়িত। কারণ রাজনীতির স্থিতিশীলতা সামরিক দিক থেকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

দেশের অর্থনীতিতে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপিতে) সড়ক ও নৌপরিবহন খাতের অবদান ৮% বা এক লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পৃথকভাবে দেখলে সড়ক পরিবহন খাতের অবদান এক লাখ ৭৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। নৌপরিবহনের অবদান ১৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা। নৌপরিবহনের এই সংখ্যাকে ০.৬০% সাথে তুলনা করা যেতে পারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১), এ তো শুধু পরিবহনের। কিন্তু এর সাথে মৎস বিভাগ ও শিল্প খাত রয়েছে। সবমিলিয়ে জিডিপিতে অনেকটা অবদান রাখবে নদী পরিবহনের এই পথ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এর তথ্যমতে বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী চলতি মূল্যে জিডিপির আকার ৫০,০২,৬৫৪ কোটি টাকা (৪৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার)। তাহলে এই জিডিপির অবদানকে তো আমরা আরও কিভাবে বাড়ানো যায় তার চিন্তা করতে পারি। এর প্রভাব আরও বাড়িয়ে নদীপথ পুনরুদ্ধার করে পাড় নির্মান করা যেতে পারে। এতে নদী ভাঙ্গনের আশঙ্কা কমে যাবে। নদীতে বাণিজ্যের পরিমানও বাড়বে। ইউরোপে নদীপথে বাণিজ্য সচল। নদীকে তারা সবসময় ভালোভাবে ব্যবহার করেছে। আমরাও শুরু করতে পারি আস্তে আস্তে।

দুঃখের বিষয় হলো ১৯৯৬ এরপর 'কুশিয়ারা নদী' নিয়ে বিগত সরকারকে চুক্তি করতে দেখা যায় ২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। স্বাধীনতা থেকে এখন পর্যন্ত আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর পানি বন্টনের চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭৫ এর গঙ্গাচুক্তি, ২য় বার ১৯৯৫ এ করলে এর মেয়াদ করা হয় ৩০ বছরের যা ২০২৬ এ শেষ হবে। অনেক আইন-কানুন তো হলো, পানির ন্যায্য হিস্যা তো আমরা কখনোই পাই নি। উল্টো দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে ধসে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশকে চাল আমদানী করতে হয়, পেঁয়াজ আমদানী করতে হয়। আরও কত কিছু আমরা আমদানী করছি। এতদিন এসব ভারত থেকেই আমদামী করেছি আমরা। বিষয়গুলো লক্ষনীয়।

বিশ্ব ব্যাংক এর তথ্যমতে, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৪.১ মিলিয়ন মানুষকে উৎখাত হতে হয়েছে ২০১৯ সালে। যা ২০৫০ সাল নাগাদ ১৩.৩ মিলিয়নে পৌছানোর সম্ভাবনা। এসব অঞ্চলের মানুষেরা ভালো থাকার আশায় শহরে পাড়ি জমাচ্ছে। এই চাপ শহরগুলো নেওয়ার জন্য কতটা প্রস্তুত? নদী আবহাওয়া পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করে। আমরা নদীবিহীন এলাকায় খরা হতে দেখি। ঠিক তেমনি নদী বিধৌত এলাকায় ভালো ফসল চাষাবাদ হতে দেখি। অবশ্যই পুরো পৃথিবীর ভূমিকা আছে জলবায়ু পরিবর্তনে। কিন্ত বাংলাদেশের নদী জলবায়ুতে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

আমরা যদি ধুকতে থাকা নদীর প্রভাবে 'জলবায়ু সংকট’ কেও দেখি সেখানে কক্সবাজারের ভাসানচরের যে রোহিঙ্গা সম্প্রদায় আছে তাদের সমস্যা কতটা হতে পারে? দেশের আবহাওয়ার উপরে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ নির্ভর করে এবং এর প্রভাব দেশে পুনরায় আসে বিভিন্ন সময়ে ঝড়, অতিবৃষ্টি হয়ে। অতিবৃষ্টির ফলে ভূমিধস হয়ে থাকে। ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বসবাস কক্সবাজারের ভাসানচরে। দূর্যোগপূর্ণ এলাকা হওয়ার প্রধান একটি কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তন। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যমতে ভাসানচর খুবই দূর্যোগপূর্ণ এলাকা। যদি বড় রকমের কোনো দূর্যোগ এখানে আঘাত হানে তাহলে পরবর্তী পুনর্বাসন কোথায় হবে তা এক বড় প্রশ্ন। তারচেয়েও বড় প্রশ্ন হলো এর বিকল্প সরকারের কাছে আছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, "যখন ভারত তিস্তার উপর আমাদের সহযোগিতার আহ্বানে সাড়া দেয়নি, তখন চীনের বাঁধ নির্মাণ আমাদের আলোচনার টেবিলে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।" অর্থাৎ আমরা কূটনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে যার কাছে সুবিধা পাবো সেখানেই আমাদেরকে আলোচনায় বসতে হবে। ভারত পানি বন্টনের হিসাবে যথাযথ নিয়ম না মেনে চলার কারন স্বরূপ আমাদের চীনের সাথে তিস্তা বাঁধ নিয়ে যথাযথ এবং দ্রুততম পদক্ষেপের কথা চিন্তা করতে হবে। এটা হাইড্রোপলিটিক্স এ টিকে থাকার একটা কৌশল, যেখানে Win-Win Situation হতে পারে বাংলাদেশের জন্য।

বেইজিং, ২৮ মার্চ, ২০২৫: প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী ও পানি ব্যবস্থাপনার জন্য চীনের কাছ থেকে ৫০ বছরের মহাপরিকল্পনা চেয়েছেন। এই মহাপরিকল্পনা নিয়ে আমরা আশাবাদী। কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যে দিয়েই বাংলাদেশ এই নদী সংকটের উত্তোরণের পথ সুগম হোক এই আশা।

অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, "বর্তমানে, অন্তর্বর্তী সরকার রাজধানীতে চারটি এবং প্রতিটি বিভাগে একটি করে নির্বাচিত নদী পুনরুজ্জীবনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে”( ২০২৪ )। তিন বিভাগের মধ্য দিয়ে প্রবহমান নদী ৪ টি। চার বিভাগের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীর সংখ্য ২ টি। প্রতি বিভাগে যদি ১ টি করে বড় নদী ঠিক করা হয় তাহলে তা শাখা নদীগুলোর প্রাণ ফেরাতেও সাহায্য করবে। তবে সেই পুনরুজ্জীবন খুব একটা সহজ কাজ নয়। তবে প্রক্রিয়াটা দীর্ঘ হলেও সম্ভব। এতদিন আমরা শুধু প্রতুশ্রুতি দিতে দেখেছি এখন অন্তবর্তী সরকারের এসব পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হয় তা দেখার অপেক্ষা।

বর্ষা মৌসুমের পানি সংরক্ষণ করে তা সেচ প্রকল্পে স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করলে চাষাবাদে ব্যয় কমতে এবং এর দ্বারা জনগণ কম মূল্যে সবকিছু কিনতে পারবে। অপরপক্ষে, চাষাবাদে ব্যয় কমে যাওয়ায় কৃষক অধিক মুনাফা করতে পারবে। কেননা দেশের কৃষক সিন্ডিকেটের শিকার। তাদেরকে রক্ষা করাও প্রতিটি সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। নদীর পুনরুজ্জীবনে দখলমুক্ত রাজনীতি বিলোপ করতে হবে। দূষণরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনকানুন শক্তিশালী করতে হবে। যদিও ২০০২ সালে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ করা হলো তার প্রকৃত বাস্তবায়ন এখনও হয়নি। অন্তবর্তী সরকার এসে কিছুদিন শক্ত অবস্থান নিলেও এখন তা আগের অবস্থানেই রয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের তুরাগ নদী, ঢাকায় বুড়িগঙ্গাসহ যেসব নদী ঢাকায় প্রবেশ করছে অন্যান্য জেলা থেকে তার দূষণরোধ একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। এতে পরিশোধনের এবং পুনরুজ্জীবনের কাজটা সহজতর হবে হয়তোবা।

আমরা সাম্প্রতিক সময়ে পাবনার ইছামতি নদীতে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে ড্রেজিং করতে দেখেছি। এতে নদীর প্রবাহ আবারও ফিরে আসছে। যা নদীর গতিপথ ফেরানোর পথে এক ইতিবাচক নিশান। এছাড়া ন্যাচারাল ডিফেন্স খ্যাত জায়গাগুলোতে পর্যটন শিল্প হওয়ায় এতে মানুষের চাপ বেড়েছে। মানুষ বেড়ে যাওয়ায় দূষনের পরিমান বাড়ছে ক্রমাগত। সে অনুযায়ী তা তত্বাবধানের ক্ষেত্রে তদারকী আরও বাড়ালে ভালো হবে।

এক্ষেত্রে আমরা সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়ের কথা উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি। প্রতিবছর এখানে ভ্রমণপিপাসুদের সংখ্যা বাড়ছে। বোট থেকে বর্জ্য পদার্থ পড়ছে সেই পানিতে। দূষিত পানিতেই মানুষের বিচরণ চলছে। তাই ট্যুরিজম সেক্টরকে আরও কিভাবে পরিবেশবান্ধব করা যায় এবং সংরক্ষণ করা যায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সেই বিষয়গুলোতে দেশে গবেষণা হতে পারে। যেন এই খাতগুলো থেকে বাংলাদেশ সরকার আরও আয় করতে পারে এবং বাহিরের দেশের পর্যটককে আকর্ষণ করতে পারে। এতে দেশের অর্থনীতিতে একটা বড় অঙ্কের টাকা আয় হবে ভবিষ্যতে। নদীর উপর আবহাওয়ার যে প্রভাব তা লক্ষ্য রাখতে হবে। এই অঞ্চলগুলোকে সংরক্ষণ করলে আমার দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে ন্যাচারাল ডিফেন্স সাপোর্ট পাবো মিলিটারির দিক থেকেও। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সবশেষে, নদী বাঁচলে বাঁচবে বাংলাদেশ। প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব আছে দেশের প্রতি। নদী সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আসুন শুধু সরকারের উপর দায় না চাপিয়ে আমরা নিজেরাও কিছু অবদান রাখি। হাইড্রোপলিটিক্সের মাঝেই বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হবে অপার সম্ভাবনার পথে।

খন্দকার সিহাবুর রহমান : শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শিগগিরই বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট চালু

‘কুয়েত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে’

একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান ঢাকার

‘পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে’

খুলনায় সুপেয় পানি সরবরাহ বন্ধের হুমকি ওয়াসার শ্রমিকদের

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে উইন্ডিজদের কাছে জ্যোতিদের হার

ঢাবির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ / জুলাইয়ে হামলায় জড়িতদের শনাক্তে শিক্ষার্থীদের পাল্টা কমিটি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ছিদ্দিকুরসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

৩৬০ ব্যাংক হিসাবে এস আলমের ২৬১৯ কোটি টাকা ফ্রিজ

১০

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশে, যা বলছে ভারত

১১

শাস্তি বাড়ছে ভুয়া মামলার

১২

স্থাপনা নির্মাণে বিধিমালা না মানলে ব্যবস্থা : রাজউক চেয়ারম্যান

১৩

কলেজছাত্রীর এডিট করা নগ্ন ছবি ছড়ানোর অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

১৪

জুলাই শহীদ মোস্তফার স্বীকৃতির দাবিতে ঢাবিতে মানববন্ধন

১৫

হারিয়ে যাওয়া ২৫১ মোবাইল উদ্ধার করল ডিএমপি

১৬

অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িতদের বিচারে কমিটি হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা

১৭

চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী প্রধান ৪ সমস্যা

১৮

চোর সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে যুবককে হত্যা

১৯

ভারতে অনুপ্রবেশকালে বিজিবির হাতে দুই যুবক আটক

২০
X