অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গ

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি : সংগৃহীত
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি : সংগৃহীত

প্রতিবেশী বন্ধু দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশের মানুষের এক ঐতিহাসিক আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। ভারতের সঙ্গে রয়েছে আমাদের ইতিহাসের, ভাষার, সংস্কৃতির, মন-মানসিকতার গভীর সমন্বয়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে বর্তমান পর্যন্ত এই ৫৪ বছরে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক। বাংলাদেশ-ভারতের গৌরবময় সম্পর্কের গভীরতা অপরিমেয়। দুই দেশের সংস্কৃতি, ধর্ম, প্রথা ও জীবনধারা হাজার বছর ধরে একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।

দু-দেশের সম্পর্কের বীজ বপন হয়েছিল আজ থেকে ৫৪ বছর পূর্বে যখন পূর্ব পাকিস্তান নামক বাংলাদেশের আকাশে কালো মেঘ জমেছিল পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার এবং শোষণের ফলে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতই ছিল বাংলাদেশের একমাত্র ও নির্ভরযোগ্য মিত্রদেশ। সে সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি লোক সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। দেশটি দীর্ঘ ৯ মাস বাংলাদেশের আশ্রয়প্রার্থী বিপুলসংখ্যক লোকের আশ্রয় ও আহারের ব্যবস্থা করেছে।

তা ছাড়া সারা বিশ্বকে মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন বাংলাদেশের দুরবস্থা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার কথা জানিয়েছে। এভাবে বাংলাদেশ সৃষ্টির শুরু থেকে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে অকৃত্রিম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে আসছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশও তার অকৃত্রিম বন্ধু ভারতের সঙ্গে সব সময় একটি সহযোগিতার সম্পর্ক রক্ষা করে আসছে। বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের স্বার্থে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশও বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সর্বশেষ ভারতের ত্রিপুরা ও উত্তর-পূর্ব অন্য রাজ্যগুলোর ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনের জন্য চারটি রুটের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ।

এ চারটি রুট হলো- চট্টগ্রাম বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, মোংলা বন্দর-আখাউড়া-আগরতলা, চট্টগ্রাম-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর এবং মোংলা বন্দর-বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর।

২০২১-২২ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং ভারত এখন এশিয়ায় বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানির বাজার। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক, বিনিয়োগ, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন, বন্দর ব্যবহার, সীমান্ত হাট ইত্যাদির একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো তৈরি হয়েছে। এসব খাত ব্যাপক অর্থনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করছে। এ ধরনের সহযোগিতা উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন, যা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে। দুই দেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় অবস্থান করায় দুই দেশ এখন যে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে অতীতের তুলনায় তার পরিধি বিষ্ময়করভাবে বিস্তৃত। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ এবং ইতোমধ্যে ভারত বাংলাদেশে ঘাটতি পূরণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। অপরদিকে বাংলাদেশ ভারতকে ট্রানজিট ও বন্দরে জাহাজ নোঙরের সুবিধা দিচ্ছে।

এ ছাড়া জ্বালানি, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে অনুমান করা যায় যে, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো- বাংলাদেশ-ভারতের এই বহুল সম্ভাবনাময় সম্পর্কের পথচলায় বারবার বাংলাদেশের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাক গলানো ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু বাংলাদেশকে অনেক মর্মাহত করছে। ভারত বাংলাদেশের সংকটাপন্ন সময় মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে থেকে আমাদের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধ করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে যেভাবে সহায়তা করেছিল তা থেকেই উপলব্ধি করা যায় যে, ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কতটা বিশ্বাসী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বলেই বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষিত হচ্ছে।

এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের অভ্যন্তীর বিষয়ে নাক গলিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছে তা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এবং বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে প্রশ্নবিদ্ধ করার শামিল। ৩০ লাখ শহীদের বুকের তাজা রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত ভারতের অকৃত্রিম বন্ধুরাষ্ট্র স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ, ভারত তথা ভারতের কোনো মুখ্যমন্ত্রীর নিকট থেকে তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এই ধরনের নাক গলানো কখনোই প্রত্যাশা করে না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীদের অহিংস কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিগুলো জ্বালাও-পোড়াও এবং ভাঙচুর তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতিতে বিনষ্ট করেছে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত এবং শিবিরের সন্ত্রাসী-তাণ্ডবে অনেকগুলো কোমলপ্রাণ শিক্ষার্থী প্রাণ হারানোর পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে এ দেশের কোটি কোটি টাকার সম্পদ। বাংলাদেশের এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে গত রোববার কলকাতার এক জনসভায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রসঙ্গে প্রথমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র দেশ হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যাপারে কোনো কথা বলতে পারেন না বলে কিছুক্ষণ পরই বিতর্কিত এক মন্তব্য করে বসেন।

তিনি বলেন, আমি এটুকু বলতে পারি যে, অসহায় মানুষ যদি বাংলার দরজায় খটখটানি করে, আমরা তাদের আশ্রয় নিশ্চয়ই দেব। তার কারণ ইউনাইটেড নেশনসের একটা রেজল্যুশন আছে যে, কেউ যদি রিফিউজি হয়ে যায়, তাকে পাশের এলাকা সম্মান জানাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিতর্কিত বক্তব্য ভারতের বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশকে অনেক মর্মাহত করেছে। তার এই বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রতিটা বাঙালি চরম ক্ষুব্ধ।

স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত এবং ছাত্রশিবিরের অগ্নিসন্ত্রাসীদের অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর তাণ্ডবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ যেখানে বিপদগ্রস্ত এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত সেখানে বাংলাদেশ স্বাভাবিকভাবেই বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে ভারতের নিকট এ বিষয়ে সহমর্মিতা ও সহানুভূতি প্রত্যাশা করে কোনো ধরনের উসকানি নয়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলিয়ে যে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন সেটা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করার পেছনে এক ধরনের উসকানি হিসেবে কাজ করেছে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এভাবে উসকানি দেওয়া সম্পূর্ণ আন্তজার্তিক আইনবিরোধী।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশের কোমলপ্রাণ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের অহিংস কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে পরিচালিত করে অগ্নিসন্ত্রাস এবং ভাঙচুর করে দেশীয় অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি সাধনের পাশাপাশি কোমলপ্রাণ সাধারণ শিক্ষার্থীদের জীবননাশ করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা তাদের ভাড়া করা গুণ্ডাদের দিয়ে সারা বাংলাদেশে অগ্নিসংযোগ এবং নাশকতা করে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে। পাশাপাশি তাদের নাশকতা থেকে জনগণের জীবনমান রক্ষায় কয়েক দিনের সাধারণ ছুটি ও কারফিউতে আরও কয়েক হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, যা সম্পূর্ণ অপূরণীয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিতর্কিত বক্তব্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করার পিছনে উসকানি হিসেবে কাজ করেছে। আর একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর এবং উসকানি দেওয়ার অধিকার জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক আইন তাকে দেয়নি। এমনকি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও এ ধরনের অধিকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেয়নি। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতিকে জটিল করার লক্ষ্যেই তিনি এ বক্তব্য দিয়েছেন এতে কোনো দ্বিধা নেই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে জাতিসংঘের রিফিউজি সম্পর্কিত রেজুলেশনের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশে পড়ুয়াদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত এবং শিবিরের ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবে অসহায় মানুষদের পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় দেবেন বলে মন্তব্য করেন। এখন কথা হচ্ছে- স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিগুলোর তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের অবস্থার দেখাশোনা করার জন্য গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে জনগণের ভোটে পরপর চারবারের নির্বাচিত সরকার প্রধান আছেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে আহত কিংবা নিহত কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে দেখাশোনার পাশাপাশি তাদের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে ঘোষণাও দিয়েছেন। এমতাবস্থায় বাঙালি কাউকে কেন রিফিউজি হওয়া লাগবে এবং কেনইবা পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট কোনো বাঙালিকে আশ্রয় চাওয়া লাগবে? এ ছাড়া কোমলপ্রাণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা এখন অনেকটাই বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সুতরাং, বাংলাদেশে এমন দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়নি যাতে বাংলাদেশের কেউ রিফিউজি হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট আশ্রয় কামনা করতে হচ্ছে। সুতরাং জাতিসংঘের রিফিউজি সম্পর্কিত রেজুলেশনের উদ্ধৃতি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন বিতর্কিত বক্তব্য সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী।

পরিশেষ, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন অযুক্তিক নাক গলানো এবং বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করার লক্ষ্যে তার এমন উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্যে বাংলাদেশ নিন্দা জ্ঞাপন করছে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে এ ধরনের বিতর্কিত বক্তব্য বাংলাদেশ ভারত কিংবা তার কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে কোনোদিনও প্রত্যাশা করে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই, বাংলাদেশের প্রতিটি বাঙালি জনগণের একমাত্র ভরসার জায়গা একজন মানবতার মা খ্যাত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আছেন। তিনি থাকতে বাংলাদেশের নাগরিকদের কেউ রিফিউজি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট আশ্রয় চাইবে এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য অবাস্তব কল্পনাই বটে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভুলে গেলে চলবে না যে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ রিফিউজিদের আশ্রয় দেয়, বাংলাদেশের কেউ রিফিউজি হওয়ার সুযোগ নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মিয়ানমারের সেনা সরকারের অত্যাচারে সেখান থেকে উৎখাত হওয়া রিফিউজিদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যেখানে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সেখানে বাংলাদেশকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন বিতর্কিত বক্তব্য নিত্যান্তই উপহাস্য।

নিয়ানমার থেকে আসা রিফিউজি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন কোনো বক্তব্য তো কোনো দিন শুনিনি; তাহলে বাংলাদেশকে নিয়ে কেন এমন বক্তব্য? সুতরাং, মিয়ানমার থেকে আসা লাখ লাখ রিফিউজি নিয়ে নীরব ভূমিকা পালনকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে এমন বক্তব্য কোনোভাবেই শোভা পায় না।

এমতাবস্থায়, এ ধরনের ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার ঐতিহাসিক সুসম্পর্ককে অবমূল্যায়ন না করাটাই আমাদের কাম্য।

লেখক : অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের

মাদারীপুরে কৃষককে পিটিয়ে হত্যায় মানববন্ধন

জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডের টাওয়ার পদ্মায় বিলীন

দীঘিনালায় দুপক্ষের সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

তিন মাস ধরে ১৪শ চা শ্রমিকের মজুরি বন্ধ

নীতিমালার খসড়া অনুমোদন / সম্পদের হিসাব দিতে হবে উপদেষ্টাদেরও

জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডের টাওয়ার পদ্মায় বিলীন

বিটকয়েনে বার্গারের দাম পরিশোধ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৭

চর দখলের মতো সাংবাদিক সংগঠনগুলো নিয়ন্ত্রণের অপচেষ্টা চলছে : শওকত মাহমুদ

১০

নেতাকর্মীদের জরুরি নির্দেশনা দিল আ.লীগ

১১

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের নির্মাণসামগ্রী ও গবাদিপশু দিল বিএনপি

১২

ছেলে নিহতের চার ঘণ্টা পর মারা গেলেন বাবা

১৩

আন্দোলনে থাকা নেতাকর্মীদের পেছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক 

১৪

দেড় মাসেও হদিস মেলেনি বগুড়া থানার লুট হওয়া অস্ত্রের

১৫

চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দেশকে অকার্যকর করতে চায় : আহলে সুন্নাত

১৬

কুচক্রি মহল জাপা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দিয়েছে : চুন্নু

১৭

হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামে নেওয়া হলো সাবেক এমপি ফজলে করিমকে

১৮

৫৬ জেলায় দাবদাহ, তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস

১৯

আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল

২০
X