মাহমুদ রেজা চৌধুরী
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ট্রাম্প কি যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য বহাল রাখবেন?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত

সর্বনাশের পূর্বাভাস! এ বিষয়ে আমার এর আগের লেখা পড়ে ঢাকা থেকে শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় এক গুণী ব্যক্তিত্ব ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে লেখেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে সাধারণত তাদের রচিত ইতিহাসই পড়ি। তারা বিশাল রেড ইন্ডিয়ান জনগোষ্ঠীকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে, সম্পত্তি ও জমি দখল করে। পুরো মধ্য আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকাকে পদানত করে ও তাদের সব প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন করে নিজ দেশকে গণতন্ত্রের হোতা বলে দাবি করে। উল্লিখিত এই অল্প কথায় অনেক কথা আছে যা যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক অবস্থান এবং বিশ্বে তাদের মোড়লিপনা দেখলেও বোঝা যায়।

আরেক গুণী বন্ধু, তার মন্তব্য লিখতে গিয়ে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছুটা পক্ষেও কথা বলেন। বন্ধুর মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি খারাপ ব্যক্তি হন, সেটা তার দেশের জনগণ নির্ধারণ করুক। আমার বন্ধুর কথার মধ্যে কিছু কথা আছে, যার উত্তর ও নিজে আমার চাইতেও বেশি ভালো জানে। তাই বিষয়টা নিয়ে কোনো তর্ক বা বিবাদেও যেতে চাচ্ছি না। যার, যার মত, নিশ্চয়ই তার, তার বুদ্ধি, বিবেক এবং দৃষ্টিভঙ্গির ওপরে নির্ভর করে। কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ধারণা পরিবর্তন করা সহজ না।

অধিকাংশ সময় অনেকেই নিজেদের অনেক সমস্যার জন্য অন্যকে দোষারোপ করি বা সমালোচনা। ব্যাপারটা অস্বীকার করি না। এর শুরুটা একেবারেই ব্যক্তিগত পর্যায়ে থেকেও হয়। একটু ভিন্ন দৃষ্টান্ত দিয়েও বিষয়টা দেখি যদি। যেমন : ধরা যাক, আমাদের মধ্যে অনেকে তাদের জীবন সাথী বা সঙ্গী নির্বাচনে, এক পক্ষের সিদ্ধান্তে নির্ভর করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে অটল হই বা থাকি।

ফলে, জীবন চলার পথে নানা রকম প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়, মনের মিল হয় না বা থাকেও না। পাশাপাশি এটাও দেখা যায় যে, কোথাও আমরা উভয়পক্ষের সম্মতিতেও কোনো কিছু করলে জীবনের একপর্যায়ে এসে কোনো না কোনো কারণে সেই সিদ্ধান্তটাও ভুল মনে হয় বা হতেও পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু না।

তখন ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত থেকে বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত অনেকেই আমরা এর কোনো সুসংস্কারে পদক্ষেপ নিতে পারি না বা নিই না। বিষয়টাকে মেনে নিই, নিজের মন ও স্বতঃস্ফূর্ত ইচ্ছার বাইরে। এটা ব্যক্তিগত থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও যায়। যেখানে আমরা একটা সংস্কার মানি। শক্তি মানি। অন্ধ আনুগত্য দেখাই। আধিপত্য মানি। এই মানা ও না মানায়, ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং ব্যক্তির স্বতঃস্ফূর্ত বিবেকের ইচ্ছা প্রায়ই কোনো না কোনো ব্যক্তি, শক্তি ও সমাজ সংস্কারের কাছে পরাজিত হয়।

আধুনিক অনেক রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাতেও একই রকম সংস্কৃতির প্রভাব আছে। যেমন, কাউকে ভোট দিয়ে আমরা রাষ্ট্রের বা দেশের প্রধান নির্বাচন করলেও, সব সময় সেই সিদ্ধান্তটাই যে সঠিক। তাও কিন্তু না। কিন্তু সেই ভুল সিদ্ধান্তকে আমরা ফেরাতেও পারি না সহজে। এখানে এসে আমাদের মধ্যে একটা দলীয় শৃঙ্খলা , উশৃঙ্খলা উভয়ই, বিভাজন সৃষ্টি করে। পাশাপাশি থাকে ‘ক্ষমতার’ অপসংস্কৃতির চর্চা। ফলাফল, ভোগান্তি।

একজন ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনার অর্থ না সে সর্বগুণে গুণান্বিত। সেই ব্যক্তির ভুলত্রুটি নিয়ে কথা বলা খুব স্বাভাবিক। সমালোচনা ও তীব্র সমালোচনাও হতে পারে। কিন্তু তখন যদি ক্ষমতাসীন ব্যক্তি তার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও দলীয় ‘ক্ষমতার’ প্রভাবে তাঁর পক্ষের ‘অংশত জনমতকে’ একটা সমাজের পুরো জনগণের মত বা রায় বলে মনে করেন। সেটাও কি ঠিক!

The majority opinion may counts in Democracy। ব্যক্তিগতভাবে এটাকে ‘কোয়ালিটি’ না, শুধু একটা ‘কোয়ান্টিটি’ মতবাদ বলে মনে হয়। জনগণের যে অংশ তাকে ক্ষমতায় আনেনি। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্ষমতাবানরা কীভাবে দেখবেন। সহনশীলতার সাথে না কি অন্য কোনো ক্ষমতার শক্তি দিয়ে তা দমন করে! তারা কি তাদের নিজের দেশকে ভালোবাসেন না!!!

গণতন্ত্রে শক্তি প্রয়োগ, সমালোচিত হলেও এর সহজ সমাধান শক্তি প্রয়োগ ছাড়া আর কি হতে পারে। এই বিষয়টা নিয়ে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ সব পরিস্থিতিতে কাছে থাকে না। যেটা আছে সেটা ভোটের মাধ্যমে জনমতকে যাচাই করার। এই ভোট এখন পণ্য হিসেবে বাজারে আলু-পটোলের মতোই বিক্রি হয়। ইউরোপ, আমেরিকাতে সেটা হয়, উচ্চ মূল্যে সুসজ্জিত ডিনারের প্লেটে। ভুল বললাম কী!

আমরা কতজন বলতে পারি, আজকের বিশ্বে এই জনমত যাচাইয়ের যে একটা মাধ্যম ভোট। এটার নিশ্চয়তা এবং ব্যবস্থাপনা কতটা মানুষের স্বাধীন জনমতকে প্রতিনিধিত্ব করে! জনগণ কাকে ভোট দিল, কাকে, না। এই একটা বিষয়ের ওপর নির্ভর করে কোনো শাসক বা দলের যা খুশি বলা এবং করার অধিকারকে আর যাই বলি, অন্তত ইতিবাচক গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বলতে পারি কি!!

বিষয়টাও ভাবায় কিন্তু। গণতন্ত্রের গুণগত বিষয়টার উপযোগিতাকে স্টাবলিশ করা কঠিন। কিন্তু সেটা হওয়া উচিত। সংখ্যা দিয়ে গণতন্ত্রকে যতবার যাচাই করা হবে ততবারই গণতন্ত্রের গুণকে অথবা প্রয়োজনকে হালকা করা হবে। বিকল্প হতে পারে, রাজনৈতিক সব দলকে প্রতি পাঁচ অথবা বেশি হলে ১০ বছর পর ক্ষমতায় আসার ব্যবস্থা রাখা পাশাপাশি কোনো দলকেই ১০ বছরের বেশি কোনোভাবেই ক্ষমতায় বহাল না রাখা। ভবিষ্যতে বিষয়টা ভেবে দেখাও যেতে পারে।

প্রচলিত গণতন্ত্রের ব্যাপারটা এখন আমাদের অনেকের মধ্যে ভিন্ন রকম চিন্তার কেমিস্ট্রিতে সংঘর্ষ সৃষ্টি করে। এতে অনেক সময় অনেক অন্যায়কেও সঠিক বলে মনে হতেই পারে। বর্তমানে গণতন্ত্র, ভোট এবং জনগণের ওপর শাসক শ্রেণির আধিপত্যবাদ এবং কেবল ক্ষমতাকে ফিরে পাওয়া বা আঁকড়ে ধরার একটা নেতিবাচক প্রতিযোগিতা হয় ও আছে। এই কথাটাই অনেকে বলার চেষ্টা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে তা কি হতে পারে বা কী হতে পারে না। এই আশঙ্কা এবং রাজনৈতিক সুনামির সম্ভাবনা নিয়েই এ আলোচনা।

২০১৬-২০২০ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমরা যেভাবে দেখেছি, যে অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকের আছে। এর দৃষ্টান্ত দিলেও অনেকেই বলবেন এটাও একপেশে! সেখান থেকেই বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বহুদিন যে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি কিছুটা বজায় ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই ঐতিহ্য অব্যাহত রাখতে চাচ্ছেন না। তিনি একটা নতুন সিস্টেম বা ‘কর্তৃত্ব পরায়ণ’ ক্ষমতাকেই প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন নর্থ করিয়া, রাশিয়া, চায়না। এদের মতো করে তার নেতৃত্বে আসন্ন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ক্ষমতায় ফিরে এসে!

তাই তার কার্যকলাপকে গণতান্ত্রিক বলে মনে করার যুক্তি, দুর্বল। যুক্তরাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীর একটা অংশ তাকে সমর্থন করতেই পারে। এর মানে না, মিস্টার ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ভালো ব্যক্তি। অথবা গণতান্ত্রিকমনা ব্যক্তি। এই ভালো-মন্দের যত আপেক্ষিক ব্যাখ্যা যে বা যারাই আমরা দেই না কেন।

তবে এটাও ঠিক, এখন পর্যন্ত এর কোনো বিকল্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ ডেমোক্রেট দলের কাছেও সাধারণ নাগরিক দেখতে পাচ্ছেন না। দুপক্ষের মধ্যে একটা জেদাজেদি চলছে। যেমন রিপাবলিক দলের কাছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো বিকল্প নাই। একইভাবে ডেমোক্রেট দল মনে করছে, তাদের প্রতিনিধি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিকল্প নাই।

উভয়ের এই রাজনৈতিক ক্ষমতার লড়াইয়ের দৃষ্টিভঙ্গি যে পক্ষেই যাক না কেন। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য সেটা শুভ হবে বলে মনে হয় না। তাই বলে কি আধিপত্যবাদকেই যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের বিকল্প হিসেবে দেখব কি না, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিযোগিতায়! ভাবনা এটাও।

জোর যার, মুল্লুক তার! এই ধরনের একটা প্রাচীন বা ধ্রুপদী পলিটিক্যাল চিন্তাকে খুব সচেতন মনে এবং চিন্তায় অগ্রাধিকার দিতে পারি কি! আমার বিজ্ঞ বন্ধুদের কাছেও আমার এই প্রশ্ন বিনীতভাবে পেশ করি। এটা সত্যি, একই সমাজের বিভিন্ন স্তরে রীতিনীতির পার্থক্য প্রাচীন যুগেও ছিল। কিন্তু বিভিন্ন স্তরের মানুষের ভিতরে সম্পর্ক সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে নির্মিত ছিল। আর একই মানুষের পক্ষে এক স্তর থেকে অন্য স্তরে উত্তোলন একসময় সহজ ছিল না। কোনো ব্যক্তি বিশ্বাসের স্থান অথবা অধিকারসংক্রান্ত বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ কিন্তু তখন সামান্য ছিল।

আধুনিক যুগে সামাজিক পরিবেশে যে দ্রুত পরিবর্তন দেখা দেয় তার একটা প্রধান বৈশিষ্ট্য এটা, সমাজের বিভিন্ন স্তরের ভেতর যে কঠিন ব্যবধান বিশেষত এর মধ্যযুগে গড়ে উঠেছিল আজ সেই ব্যবধান অনেক ক্ষেত্রেই ভেঙে যাচ্ছে। একই লোকের পক্ষে সমাজের এক স্তরে জীবন শুরু করে বিভিন্ন স্তরে অতিক্রান্ত হওয়া আধুনিক সমাজে সাধারণ ঘটনা। তাই আমাদের চিন্তার মধ্যে প্রতিনিয়ত একটা পরিবর্তনের কেমিস্ট্রি কাজ করে। আজকে এটা ভালো লাগে তো কালকে সেটা। বিষয়টা ব্যক্তিগত পর্যায়ে যতটা সহনীয় বা অ্যাডজাস্ট করা সম্ভব, বৃহত্তর সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে জননেতাদের বা সমাজ পতিদের ব্যক্তিগত সংকীর্ণ স্বার্থের পরিচর্যা এবং চাষাবাদকে তত সহজে গ্রহণ করা বর্তমান সময়ে কঠিন।

এইসব কারণে আমাদের মধ্যে জননেতা বা সমাজপতিদের একটা আদর্শিক চরিত্রের অনুভূতি প্রভাব রাখে। নীতি-নৈতিকতা এবং যার যার ধর্মীয় বিশ্বাসের সাংস্কৃতিক চর্চা। আমাদের অনেক সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে অন্যতম এক সহায়ক শক্তি হতে পারে। অনেকে এই আদর্শিক চরিত্রের ব্যাপারেও একমত পোষণ করেন না। এমনকি ‘আদর্শের’ প্রশ্নও আমরা বিভক্ত। আদর্শটা এখন যে যেভাবে সেটা নিজের পক্ষে রাখতে পারেন। সেটাই ব্যক্তির আদর্শ! ব্যক্তি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদর্শ তো একটা আছেই। সেটার সঙ্গে কিছু মানুষের মন ও চিন্তায় মিল থাকতেই পারে। কিন্তু সেই আদর্শ কি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জনকল্যাণের স্বপক্ষে কি না! এই বিষয়টা কী একেবারেই হালকা ভাবনা!

আধুনিক বুদ্ধিজীবী শ্রেণির একটা বৈশিষ্ট্য এই দিকে লক্ষণীয়। পণ্ডিত মহলে শাস্ত্রের ব্যাখ্যাসংক্রান্ত নানা তর্কবিতর্ক সত্ত্বেও এটা বলা চলে, প্রচলিত সমাজনীতির স্বপক্ষে যুক্তি তর্কের অবতারণা এবং পাণ্ডিত্যের সহায়তায় সাধারণ মানুষের মনে অনেক নীতি সম্বন্ধে একটা ভীতিকর ভক্তি বা আনুগত্যের ভাব সৃষ্টি করা মধ্যযুগীয় বুদ্ধিজীবীর অন্যতম অগ্রাধিকার ছিল। বর্তমান যুগেও অনেক ক্ষেত্রে আমরা এই বিষয়টাই পুনরায় ব্যবহার এবং চর্চার প্রবণতায় দেখি, কোথাও, কোথাও। ইতিবাচক ক্ষেত্রের চাইতে নেতিবাচক প্রবণতায় প্রলুদ্ধ এটা বেশি, এই সময়।

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে আসেন, তার এবং তার অনুসারীদের মধ্যে উল্লিখিত প্রবণতার চর্চা আগের চাইতেও বেশি দেখব। এই ব্যাপারে চিন্তা ও দুশ্চিন্তার আকাশে কোনো মেঘ নাই।

এই যুগের সন্দেহ প্রবণতা শুধু আচার-বিচারের বিশ্লেষণেই সীমাবদ্ধ না। সত্য, ন্যায়, এর মৌল আদর্শ সম্বন্ধেও এই যুগের মনে অবিশ্বাস প্রবল। অর্থাৎ নৈর্ব্যক্তিক সত্য এবং নিরপেক্ষ ন্যায়ের সম্ভাবনা সম্বন্ধে আমাদের মনে অনেক সন্দেহ এখনো কাজ করে। এই সন্দেহটা আমরা আমাদের ব্যক্তি ও শ্রেণিস্বার্থে তৈরি করেছি একটু একটু করে ইতিহাসের বিভিন্ন পথে চলতে, চলতে। এই কারণে অনেকেই আমরা এখনো বিন্দুতে সিন্ধু দেখি, আর সিন্ধুতে বিন্দু! এর মুক্তি, একটা মধ্যপন্থা অবলম্বনে। কিন্তু আমরা সব ক্ষেত্রেই একটা চূড়ান্ত পথকেই বেছে নিই। আমরা দেখেও দেখি না।

মাহমুদ রেজা চৌধুরী : সমাজ ও রাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাবিপ্রবি জিয়া সাইবার ফোর্স কমিটি, ১৩ জনের ৫ জনই ছাত্রলীগ

১০০ টাকার রিচার্জে কর ৫৬ টাকা ৩০ পয়সা!

২০২৬ বিশ্বকাপের পর ফ্রান্সের দায়িত্ব ছাড়বেন দেশম

মোংলায় হরিণের মাংসসহ আটক ৬

সাঁওতাল নারীকে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

কাতারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ 

ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করিয়েছিলেন টিউলিপ

ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২২৪৩ মামলা 

গোপনে বাগদান সম্পন্ন করেছেন টম-জেন্ডায়া!

দাবি আদায়ে খোলা মাঠ বেছে নেওয়ার আহ্বান ডিএমপি কমিশনারের

১০

অবৈধপথে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, ৮ বাংলাদেশি আটক

১১

পালিয়ে থাকা অপরাধীদের বিরুদ্ধে ভারতের নয়া উদ্যোগ

১২

গাছ চুরির মামলায় যুবদলের ৪ কর্মী কারাগারে

১৩

শহীদ আবু সাঈদের নামে বিএসএমএমইউর কনভেনশন সেন্টার

১৪

মেসি-সুয়ারেজের সঙ্গে পুনর্মিলনের ইঙ্গিত দিলেন নেইমার

১৫

ছোট ভাইকে হত্যার ঘটনায় বড় ভাই গ্রেপ্তার

১৬

চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

১৭

নতুন টেস্ট কাঠামোর গুঞ্জন নিয়ে মুমিনুলের হতাশা 

১৮

কানাডা দখলে সরব ট্রাম্প, অটল ট্রুডো

১৯

সচিবালয়ের সামনে পুলিশ-শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় ৩ সদস্যের কমিটি

২০
X