হীরেন পণ্ডিত
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিএনপির দল সমন্বয় ও আ.লীগের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ

বিএনপি ও আ.লীগের লোগো। ছবি : সংগৃহীত
বিএনপি ও আ.লীগের লোগো। ছবি : সংগৃহীত

বিএনপিতে দ্বৈতশাসন প্রক্রিয়া নতুন কিছু নয়। খালেদা জিয়া যতদিন সক্রিয় ছিলেন রাজনীতি ও জেলের বাইরে ছিলেন, তখন প্রকাশ্যে এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কিছু বলেননি বা কেউ কিছু বলার হয়ত বা সাহস করেননি। এখন দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। একসময় সবাই খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত মানতেন। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় যেদিন থেকে দলে দ্বৈতশাসন শুরু হলো, সেদিন থেকে সবার মাঝে এমনকি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্বস্তি বাড়তে শুরু করল।

দ্বৈত শাসন প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির নেতাদের অনেকেই বলছেন বা বলার চেষ্টা করছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণেই বিএনপি নেতৃত্বের বিভিন্ন পর্যায়ে এই রদবদল আনা হয়েছে। তবে সেই পরিবর্তন তো দিনের বেলায় হতে পারত। অনেকে প্রশ্ন তোলেন যে আন্দোলনের ব্যর্থতার দায় তো নেতাদের নিতে হবে বা সেই দায় সর্বোচ্চ নেতৃত্বের ওপরই পড়ে।

আন্দোলন সফল হলেও কৃতিত্ব যেমন দলের নেতাকর্মী সবার আবার আন্দোলন সংগ্রাম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলেও সে দায়িত্ব নেতাকর্মী সবার। নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্ব আন্দোলন পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো বিকল্প রাখেননি। তারা এক দফাকে সামনে রেখে আন্দোলন করেছেন। নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই এক দফার আন্দোলন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুবার জয়ী হয়েছেন।

বিএনপি নেতারা ভেবেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারলে তারা কেন পারবেন না। কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগণের দল, যেভাবে জনগণকে বিএনপির বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দলকে একত্র করতে পেরেছিল, বিএনপি সেটা করতে পেরেছে? এক কথায় পারেনি। আওয়ামী লীগ এ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে, দেশকে স্বাধীন করেছে, দেশকে সমৃদ্ধি দিয়েছে, তাই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা খুব সহজ বিষয় নয়।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বলেন, ‘তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দুর্নীতিবাজ, খুন, সন্ত্রাস, অস্ত্র চোরাকারবারি, অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, মানি লন্ডারিং এসব কারণে সাজাপ্রাপ্ত। এই সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের ওপর ভর করে তার দলের ক্ষতি করছে। তারেক রহমান দুর্নীতি সন্ত্রাস বোমা হামলাকারী, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত ওইসব আসামিদেরই দলে ভেড়াচ্ছে যা সাধারণ মানুষ কোনো দিন গ্রহণ করবে না। বাংলাদেশের দুর্নীতিতে, সন্ত্রাসী কার্যক্রমে, নারী কেলেঙ্কারি, শিক্ষায় এবং সর্বক্ষেত্রে দুর্বৃত্তায়নে চ্যাম্পিয়ন তারেক রহমান। বিএনপির টপ টু বটম সবাই দুর্নীতিবাজ। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অস্ত্র ও দুর্নীতির মামলায় তারেক রহমানের সাজা হয়েছে। এখন তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি ভোগের ব্যবস্থা করতে হবে, প্রধানমন্ত্রী সে কথাই বলেছেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে এই বর্ণচোরারা দেশের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও স্বাধীনতার আদর্শ মানে না। এরা গণতন্ত্রকে গিলে খেয়ে লুটপাটের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে উদ্ধার করেছেন। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা, অর্থনীতির অগ্রযাত্রা, মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা চেতনা বিকাশের অগ্রযাত্রার সাফল্য ফিরিয়ে এনেছেন। ১৫ বছর আগে বাংলাদেশ কেমন ছিল? বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন ছিল? আর ১৫ বছর পরের বাংলাদেশ কেমন হয়েছে? আমাদের ভুলত্রুটি আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অতীতের ভুলত্রুটি থেকে আমরা শিক্ষা নেব’।

যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে জানুয়ারি মাসে, বিএনপির অনেক নেতা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন এই সরকার তিন মাস টিকবে না, এখন মাঝরাতের তাদের বড় রদবদল কী প্রমাণ করে সে জন্য সবাইকে আরও একটু সময় দিতে হবে। এটা কী তাদের দলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ঘুরে দাঁড়ানো, না বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি নিয়ে বিএনপিতে কোন্দল হানাহানি শুরু হয়েছিল সেটি সমাধানের একটি সাময়িক সমাধান?

একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের সরকারের যেমন সদিচ্ছা ছিল, তার প্রতি জনগণের সমর্থন ছিল, হয়েছেও তাই। নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হওয়ার বড় প্রমাণ ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী পাস করেছেন। যাদের অনেকে নৌকার মাঝিদের হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু বিএনপি কোন দাবি পূরণ করতে রাস্তায় নেমেছে জনগণ সেটা বুঝতে পারেনি। নির্বাচন নিয়ে তাদের বিস্তারিত পরিকল্পনা জনগণের সামনে তুলে ধরতে পারেনি। বিএনপি নেতাদের একাংশ ভেবেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এসে নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন করে দিয়ে যাবে। মার্কিন কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের কথাবার্তা তাদের অতিমাত্রায় আশাবাদী করে তুলেছিল বলেই পর্যবেক্ষকরা মনে করেন।

বিএনপির পুনর্গঠন প্রক্রিয়া দেখে জনগণের মনে হয় দেশের ভেতরের সমস্যা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা কম, বেশি সমস্যা বিদেশবিষয়ক কমিটি নিয়ে। বিশাল আকারে দুটি কমিটি করা হয়েছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটি এবং স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটি। প্রথমটি তারেক রহমানসহ ১১ জন এবং দ্বিতীয়টি ১৮ জনকে নিয়ে। বলা হয়, বিদেশবিষয়ক আগের কমিটি বৃহৎ দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারেনি বলেই এই পুনর্গঠন।

নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতারা বলতেন সরকার বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে পারবে না। তার আগেই সরকারের পতন হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে বিএনপির বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার নির্বাচন করেছে। দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হতেই হতো। বিএনপির নেতারা যে বিদেশি শক্তির সহায়তায় রাজনীতির গতিপথ বদলের চিন্তা করেছিলেন, তারা এসে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে নতুন হিসাব-নিকাশে বসে।

বিএনপির কমিটির এই ভাঙাগড়া ও নেতাদের দায়িত্ব বদল স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, না ঝড়ের পূর্বাভাস? বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা উল্লেখ করছেন, এটা দলের নেতৃত্বের সমন্বয়। বিএনপির নেতৃত্বের এই সমন্বয় দলকে কতটা সংহত ও আন্দোলনমুখী করবে তার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

বিএনপির শক্তি কোথায়? নেতৃত্বে নয়, তৃণমূলের নেতাকর্মীতে নয়? তাহলে ভরসাটা কোথায়। দলটি ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে। বিএনপির নেতারা মনে করেন, বৈরী পরিবেশে তারা দলের সম্মেলন করতে পারছেন না, শেষ সম্মেলন হয় ২০১৬ সালে। বিএনপির দলের ভেতরে গণতন্ত্র আছে? এই প্রশ্ন সব রাজনৈতিক বোদ্ধা মহলের। এখানে যোগ্য নেতাদের উপেক্ষার কথা শোনা যায়, পর্যবেক্ষকরাও মনে করেন আগে দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু দ্বৈতশাসন প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্র দলে কতটুকু জায়গা করে নিতে পারবে সেটা সময় বলে দেবে। একসময় নির্দিষ্ট সময় পার হলেই সম্মেলন হতো, তখনো কি কাউন্সিলরদের ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচিত হতো? হতো না। সবকিছু হয় ওপরের নির্দেশে। নেতাদের পকেটে কমিটি থাকে।

একসময় ছাত্রদল ও যুবদল বিএনপির মূল শক্তি ছিল। বিশেষ করে এরশাদের সামরিক শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদলের প্রাধান্য ছিল। ডাকসুতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে জিততে হয়েছিল ছাত্র ইউনিয়ন, জাতীয় ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগের সহায়তায় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে। ছাত্রদল এককভাবে জয়ী হয়েছে। অথচ ২০১৯ সালে যে ডাকসুর নির্বাচন হয়েছিল, তাতে ছাত্রদলের অবস্থান ছিল অনেক পেছনে। এর কারণ আসলে কী? ছাত্রদল নতুনদের বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে বেশি আকৃষ্ট করতে পারছে না। অনেক সময় গণমাধ্যমের খবরে দেখা যায় বুড়ো খোকা বা বিবাহিতদের নিয়ে নিয়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়। পারিবারিক কারণে যারা ছাত্রদল করে এসেছেন তাদের নিয়েই কমিটি গঠিত হয় বা নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সামনে নিয়ে আসা হয়। ছাত্রদলের দুরবস্থার কারণে যুবদলও সাংগঠনিকভাবে শক্ত অবস্থানে আসতে পারেনি।

আমাদের দেশে একসময় পেশাজীবী সংগঠনগুলো স্বকীয়তা নিয়ে চলত। যে রাজনীতির প্রতিই সমর্থন থাকুক না কেন, পেশাজীবীরা পেশাগত বিষয়টিই অগ্রাধিকার দিতেন। দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করতেন। কিন্তু এখন পেশাজীবী সংগঠনগুলো পেশাগত বিষয়ের চেয়ে দলীয় রাজনীতিকে মুখ্যভাবে দেখা হয়। রাজনৈতিক কারণে অধিকাংশ পেশাজীবী সংগঠন ভাগ হয়ে যায় যেমন সাংবাদিক ইউনিয়ন। সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে পূর্বসূরিরা এই সংগঠন গড়ে তোলেন। এরশাদের শাসনামল পর্যন্ত সব সাংবাদিক এক সংগঠনের ব্যানারে কাজ করতেন। কিন্তু নব্বই-পরবর্তী তারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শিবিরে ভাগ হয়ে যান। একইভাবে শিক্ষক, আইনজীবী, চিকিৎসাবিদ, কৃষিবিদ ও প্রকৌশলীদের সংগঠনও হয় বিভক্ত হয়ে যায় অথবা মূল সংগঠনের চেয়ে দলীয় ফোরাম অধিক গুরুত্ব পায়।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনই বারবার প্রমাণ করেছে তারা দেশের জনগণের জন্য নয়, রাজনীতি করেন ক্ষমতার লোভে। তাদের শাসনামলে তারেকের কারণে দেশে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণ শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ চায় দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, সন্ত্রাসের দেশ এমন বাংলাদেশ সাধারণ জনগণ আর চায় না।

এখন বাংলাদেশের জনগণ স্মার্ট বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশ নামে নতুন একটি রূপকল্পের কথা সামনে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশের পরিকল্পনা এই শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্ত, কেননা উন্নত বিশ্বের দেশগুলো তো এরই মধ্যে স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, এমনকি অনেক উন্নয়নশীল দেশও স্মার্ট দেশে রূপান্তরের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছে, তাই দেশের উন্নতি এবং অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হলে দেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে হবে।

আগামীতে যেসব দেশ প্রযুক্তি ব্যবহারে এগিয়ে থাকবে তারাই— ব্যাবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক লেনদেন এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় তৈরি করতে পারবে। দেড় যুগ আগে বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের মতোই ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল, যার শতভাগ সফলতা এখন দৃশ্যমান। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায় দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার হটাতে। তাই গত কয়েক মাস ধরে দেশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে আঘাত হানার চেষ্টা করছে একটি চক্র। যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিদেশে পলাতক নেতারা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিএনপিপন্থি একটি চক্রকে নিয়োগ করা হয়েছে বৈধপথে রেমিট্যান্স আসা ঠেকাতে।

কমিশনের বিনিময়ে হুন্ডি সেলও গঠন করেছে দলটি গণমাধ্যমের খবরে বিষয়টি উঠে এসেছে। মূলত বিদেশ থেকে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় বাধা হুন্ডি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য। যে হুন্ডি ব্যবসার মূল নেতৃত্বে রয়েছে বিএনপির বিদেশে পলাতক নেতারা। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ বেশ কিছু দেশে আধিপত্য বিরাজ করছে এই সিন্ডিকেট। জানা গেছে, সাধারণ প্রবাসীদের নানা গুজব ও ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে হুন্ডিতে টাকা পাঠাতে উৎসাহ প্রদান করে ওই সেলের সদস্যরা। বড় অঙ্কের কমিশনও দেওয়া হয় দল থেকে।

এদিকে লন্ডন বিএনপির নেতারা ইউরোপকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। আর মালয়েশিয়া বিএনপি নেতাদের হাতে রয়েছে হুন্ডির বিশাল সিন্ডিকেট। সিঙ্গাপুরে রয়েছে বিএনপি নেতাদের একটি বিশাল প্রতিষ্ঠান। সিঙ্গাপুরের ওই অফিসে বিএনপি নেতারা কেউ কেউ সেখানে যান হুন্ডির কমিশন আনতে। আর সৌদি-দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে স্বাধীনতাবিরোধী ক্যাডারদের আধিপত্য রয়েছে।

বিশিষ্টজনরা বলছেন, হুন্ডি একটি দেশের অর্থনীতির অনেক ক্ষতি করতে পারে। তাই যতদ্রুত সম্ভব ওই প্রক্রিয়া থেকে দেশের রেমিট্যান্স প্রক্রিয়াকে মুক্ত করতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বৈধ পথে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়াতে হবে। প্রবাসীদের উদ্দেশে তারা বলেন, সরকারি প্রণোদনা ও সুবিধা পেতে এবং নিজের অর্থের সুষ্ঠু বণ্টনে অবশ্যই বৈধপথে টাকা লেনদেন করতে হবে সবাইকে। মাদক থেকে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়।

আমাদের সমাজ এর থেকে মুক্তি লাভ করুক। আমরা চাই জনপ্রতিনিধিরা জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ যত্নবান হবেন।

লেখক : প্রাবন্ধিক, গবেষক ও কলামিস্ট

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রথমার্ধে ব্রাজিলকে রুখে দিয়েছে কলম্বিয়া

চোরকে চিনে ফেলায় বৃদ্ধাকে হত্যা

কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

০৩ জুলাই : নামাজের সময়সূচি

বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

এক পরিবর্তন নিয়ে কলম্বিয়ার মুখোমুখি ব্রাজিল

ফুটবলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়লেন ঢাবি ছাত্র 

লোহাগাড়ায় খালের গর্ভে সড়ক, দুশ্চিন্তায় স্থানীয়রা

ত্রিমুখী আন্দোলনে দ্বিতীয় দিনের মতো অচল যবিপ্রবি

কালবেলার আসাদ সবুজ বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত 

১০

সাকিব-শান্তদের ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণ মানবে না বিসিবি

১১

কুলাউড়ায় ফের বন্যার পানি বাড়ছে, আতঙ্কিত বানভাসীরা

১২

নিজের সেরা এখনও দেওয়ার বাকি আছে মিলারের

১৩

ডেমিরালের জোড়া গোলে কোয়ার্টারে তুরস্ক

১৪

রাসেল ভাইপারের ফাঁসি দিল গ্রামবাসী

১৫

কোচ-গ্রাউন্ডস ম্যানদের বেতন বাড়ছে

১৬

ঝিনাইদহে সাংবাদিক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

১৭

বেপরোয়া ইজিবাইক কেড়ে নিল কলেজ শিক্ষকের প্রাণ

১৮

দাপুটে জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ডাচরা

১৯

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা যুবক নিহত

২০
X