দৈনিক কালবেলায় ‘৪৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় দ্রুতবর্ধনশীল’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।
বিশ্বের ৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিকবিষয়ক সংস্থা মাস্টার কার্ড ইকোনমিক্স ইনস্টিটিউট (এমইআই)।
গত মঙ্গলবার এমইআই আগামী ২০২৪ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর ইকোনমিক আউটলুক : ব্যালেন্সিং প্রাইসেস অ্যান্ড প্রায়োরিটিস শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ভোক্তা মূল্যস্ফীতির হার ৭ দশমিক ৩ শতাংশ দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে মীর কাশেম নামের এক পাঠক লিখেন, অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমানের ভাষ্যমতে, ১৯৭২ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ছিল ৮ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে। আইএমএফ-এর মতে, ৪১৬০০ কোটি ডলার। এটি এক সময় বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর একটি ছিল। করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জ ও চাপ থাকা সত্ত্বেও গতিপথ হারায়নি। রেমিট্যান্সপ্রবাহ ও রিজার্ভ তখন একটু কমলেও বর্তমানে তা বাড়তির দিকে। ডলার সংকট সত্ত্বেও অর্থনীতি স্থিতিশীল আছে। ডলারের মূল্য কমতে শুরু করেছে অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দিকে। এখন প্রয়োজন হলো, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ উদ্ধার, মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত ও প্রশাসনিক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আর সমগ্র দেশে সুষম উন্নয়ন করতে হবে। তবেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে আরও উন্নত হবে। জনসাধারণ উন্নয়নের সুফল পাবে।
রাজ কুমার লিখেন, মনে হচ্ছে দেশ সিনেমাটিক স্টাইলে উন্নতি করছে কিন্তু কোথায় সেই উন্নয়ন। এতই যদি উন্নয়ন হয়ে থাকে তাহলে রাজনৈতিক নেতারা কেন এখনও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পারি জমাচ্ছেন। আসলে এই উন্নয়ন দেশের নয়; কিছু অসাধু নেতার উন্নয়ন হচ্ছে।
শিফাতুল্লাহ আকাশ লিখেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি বন্ধ না হলে অর্থনৈতিক বিকাশ হবে না।
কাজী তানভীর হাসান লিখেন, বর্ধিত হয়েছে কিছু নেতার টাকা-পয়সা। হ্রাস পেয়েছে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা।
মোহাম্মদ হোসাইন লিখেন, বহু টাকা ঋণ করে সুদ দিয়ে লোকের টাকা নিয়ে উন্নয়ন করলে আরও বিপদ।
প্রতিবেদনে শীর্ষ দ্রুতবর্ধনশীল দেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে ভারতকে, যার জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস রাখা হয়। তৃতীয় বর্ধনশীল দেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে ভিয়েতনামকে (৬ দশমিক ১ শতাংশ) এবং চতুর্থ হিসেবে দেখানো হয় ইন্দোনেশিয়াকে (৫ দশমিক ২ শতাংশ)।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে আর্জেন্টিনাকে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশটির মূল্যস্ফীতি হবে ১৫৬ দশমিক ৯ শতাংশ), দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তুরস্ক (৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ), তৃতীয় সর্বোচ্চ মিসর (২৪ দশমিক ৯ শতাংশ) এবং পঞ্চম সর্বোচ্চ শ্রীলঙ্কার (৬ দশমিক ৯ শতাংশ)।
প্রতিবেদনের পর্যালোচনা অংশে বলা হয়েছে, অর্থনীতিতে মহামারির প্রভাব কমে আসছে, সেইসঙ্গে কমছে মূল্যস্ফীতির হার। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানুষের হাতে ২০২৪ সালে বিনোদন ও ভ্রমণের মতো ইচ্ছেপূরণের খাতে আরও বেশি ব্যয় করার সামর্থ্য থাকবে। গৃহস্থালি পণ্য ও কাপড়ের চাহিদা বাড়বে। সব মিলে এ সময় ভোক্তা ব্যয় বাড়বে। উৎপাদন খাত চাঙ্গা হবে। ফলে মোট দেশজ উৎপাদনের হারও কিছুটা বাড়বে। রপ্তানি বাড়বে। এতে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে।
মন্তব্য করুন