দৈনিক কালবেলায় ‘ঘুষ দিয়ে চাকরির’ অভিযোগে কয়েকটি খবর প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।
সরকারি, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া ওই প্রতিষ্ঠানের গতিশীলতার জন্য আবশ্যক। এ জন্য সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যদের খুঁজে বের করার প্রচলন রয়েছে। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় ঘুষ লেনদেন হলে যোগ্যরা বাদ পড়ে। সে সঙ্গে দুর্নীতির এ ধারা ছড়িয়ে পড়ে পুরো প্রতিষ্ঠানে। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা সামনে আসে। এসব প্রকাশিত হয় কালবেলায়। এ নিয়ে পাঠকরা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন।
হুমায়ুন ফরিদ নামের এক পাঠক বলেন, বাংলাদেশে ‘নির্দিষ্ট কিছু’ চাকরিতে যোগ দিতে হলে ঘুষ দিতে হয়। সেখানে ঘুষের আদান-প্রদানের বিষয়টি সবার কাছে স্পষ্ট। কিন্তু ঘুষ দেওয়া ও ঘুষ দিয়ে চাকরি করা কি জায়েজ? এই বিষয়ে ইসলাম কী বলে? এর উত্তর হলো, বাধ্য হয়ে ঘুষ দেওয়া জায়েজ আছে। কিন্তু ঘুষ নেওয়া কখনই জায়েজ নয়। আর ঘুষ দিয়ে চাকরি অর্জনকারীর উপার্জন বৈধ হওয়ার জন্য অবশ্যই কয়েকটি শর্ত-কারণ পাওয়া যেতে হবে। যেমন, ঘুষ দিয়ে ওই কাজ করা ছাড়া অন্য কোনো কাজ করার সুযোগ না থাকলে, যথার্থ ও সঠিকভাবে ওই কাজ করার যোগ্যতা ও মানসিকতা থাকলে, মূল বিলের চেয়ে বেশি বিল কর্মস্থলের তহবিল থেকে গ্রহণ না করা হলে।
মো. সিরাজুল মনির বলেন, কিছু কিছু পদে ঘুষ দিয়ে চাকরি এটা প্রচলিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। অথচ সব প্রতিষ্ঠানে লেখা থাকে আমি ও আমার প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত, এটা যেন সম্পূর্ণ ভুয়া বক্তব্য। এ বক্তব্যটা লেখা থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির মাত্রা আরও বেশি। বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পিয়ন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তারা প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানরা যদি ঘুষ দুর্নীতির মোহ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে তাহলে মেধাবীদের মূল্যায়ন হবে এবং ঘুষ ছাড়া চাকরি পাওয়ার আশা করা যায়। বিশেষ করে সরকারি চাকরিতে অল্প সময়ের মধ্যে কোটিপতি হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকার কারণে সবাই ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে আগ্রহী হয়। এ বিষয়টা এখন সবার রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে।
শহীদ রাফি বলেন, যেদিন বলা হবে ঘুষ দিয়ে চাকরি হয় না; সেদিন আমি বুক ফুলিয়ে সবার সামনে বলতে পারব ‘আমার বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে’।
মীর কাশেম বলেন, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, ঘুষ, দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। সরকারি চাকরি পেতে তো ঘুষের কারবার স্বাভাবিক ব্যাপার। আর এখন কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতেও ঘুষ দিতে হয়। ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষার কেন্দ্র মাদ্রাসা। এখানকার কর্মচারী নিয়োগের জন্যও গুণে গুণে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নেয়। এটা অবাক লাগে। তারা কীভাবে নিজেকে আলেম-ওলামা মনে করে! ঘুষগ্রহণকারীসহ সব দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা জাতীয় কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্তব্য করুন