দৈনিক কালবেলায় ৩ ডিসেম্বর (রোববার) ‘ফলের বাজারেও সিন্ডিকেট’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। সেখানে জানা যায়, ‘ফলের দাম নির্ধারণ হয় ব্যবসায়ীদের ইচ্ছেমতো’। এ বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।
মো. শামীম : সিন্ডিকেটের মূল গোড়া উপড়ে ফেলা দরকার। সত্যি বলতে স্ত্রীর সিজারের পর মাল্টা কিনে খাওয়ানোর সাহস হয় না। বাচ্চাদের কিছু ফল কিনে খাওয়াব সেটাও কল্পনা করতে পারি না। আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের কাছে ফল কিনে খাওয়া একটা স্বপ্নের মতো।
মো. তারেক : বাংলাদেশে ব্যবসার সঙ্গে যেকোনো সিন্ডিকেট চক্র থাকুক না কেন তা ভেঙে দেওয়া উচিত। মৌসুমি ফল থেকে শুরু করে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সব ফল দেশের বিভিন্ন জেলায় ভিন্ন ভিন্ন দরে খুচরা বাজারে বিক্রি হয়। এতে সাধারণ আমজনতা ভুক্তভোগী। ফল বিক্রি করে কেউ হয় রাতারাতি কোটিপতি আবার কেউ হয় ফকির। দিন শেষে ফলের আড়তদারের পঁচা ফল দেশের নালা-নর্দমা থেকে শুরু করে সিটি কর্পোরেশনের ডাস্টবিন পর্যন্ত গড়ায়।
হাসান আহমেদ : ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করার সাহস পায় কোথা এরা? সেটা আগে খোঁজে বের করা হোক।
মো. সিরাজুল মনির : ফল খাওয়া তো এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। এখানে শুধু এককভাবে ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করলে হবে না। লোকাল প্রশাসন, সরকারি দপ্তরগুলো এর সঙ্গে জড়িত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো এ বিষয়টা তদারকির বাইরে রেখেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে আমদানি-রপ্তানি বিবেচনা করে মূল্য নির্ধারণ করতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গুটি কয়েক কর্মকর্তাকে কিনে ফেলেছে। তাই তারা যেমন ইচ্ছা তেমন করে দাম নির্ধারণ করে ভোক্তাদের প্রতিনিয়ত ঠকাচ্ছে। মূলত এই বিষয়গুলো এখন দেখার কেউ নেই বললেই চলে। মূল্য তালিকা এখন আর টাঙানোর প্রয়োজন মনে করে না কারণ যে যেখানেই পারছে ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছে সব কিছুর। অনেকটা সরকারি মদদে ফল ব্যবসায়ীরা রাজত্ব করে যাচ্ছে বলে মনে হয়।
সোহেল রানা রবিন : ব্যবসা যে পবিত্র, ব্যবসা একটা জনসেবা; সেটা ব্যবসায়ীরা জানে না। অল্প লাভে বেশি বেচা, নষ্ট হবে না ফল, ফেলতে হবে না ডাস্টবিন। মানবিক বিবেচনা করে ব্যবসা করতে হবে। ফল ব্যবসায়ীরা তো শুধু ফল খেয়ে বাঁচতে পারবে না। সে ফলে দাম ইচ্ছেমতো নিল কিন্তু অন্যান্য জিনিসপত্র তাকেও বেশি দামে কিনতে হবে। সব কিছু সরকার নিয়ন্ত্রণ করলে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার প্রয়োজন নেই। দেশে বাস করে দেশের আইন মাননে না তা কী করে হয়। সবার দেশে প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে।
আরিফুল ইসলাম : ব্যাবসায়ী, কোম্পানি, তাদের ইচ্ছেমতোই দাম বৃদ্ধি করে। শুধু কৃষকের উৎপাদিত পণ্য তাদের নির্ধারণের বাইরে। কৃষকের উৎপাদিত ফসলের জন্য যেসব কিছু লাগে তাও কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করে।
রেজোয়ানুল হক : বাজারে ফলের যা দাম! দাম শুনলেই নেওয়ার সাধ মিটে যায়। একই জিনিস বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দাম। স্থানীয় আমদানিকৃত ফলমূলের দাম বাজার বিশ্লেষণ করে সরকার কর্তৃক মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হোক।
মো. নুর আলম : ২০০ টাকায় ড্রাগন ফল কিছু দিন আগে বাজার থেকে কিনলাম। যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ল তখন ফলের দামও ইচ্ছা করে ফল ব্যাবসায়ীরা বাড়িয়ে দিল। আজকের দিনে সাধারণ মানুষের সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। কোমলমতি শিশুদের জন্য কিছু ফল কিনবে, হোক সেটা যৎসামান্য। সেটাও এখন দাম অনেক বেশি। আনার ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি। এগুলোর একটা সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার কে বা কারা এই বাড়তি মূল্য নেওয়ার সঙ্গে জড়িত।
মাহফুজুর রহমান : ফল তো বিদেশ থেকে বেশির ভাগই আমদানি করতে হয়। সেটা ব্যবসায়ীরা দাম নির্ধারণ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দেশীয় পণ্য যেটা দেশেই উৎপন্ন হয়, বিদেশ থেকে আমদানি না করলেও চলবে সেটাই তো বর্তমানে অধিক মাত্রায় মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণ করছে। সেটা নিয়ে প্রতিবেদন লেখা উচিত।
এইচ এম মিয়াজী : কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য সরকারকে হিমশিম খেতে হয়। ইচ্ছেমতো ফলের দাম নির্ধারণ করবে তা কী করে হয়। প্রশ্ন করলে নানা অজুহাত দাঁড় করাবে আর জনগণকে বোকা বানাবে। সে সঙ্গে সরকারের ওপর চাপিয়ে দেবে। এদের কঠিন শাস্তি ও জরিমানার আবেদন করছি।
কে এইচ রাফি আহমেদ : এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিলে সর্বস্তরের ভোক্তা কিনতে পারত কিন্তু কোনো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নজির নেই।
মীর কাশেম : চট্টগ্রাম ফলমন্ডি ঘুরেও বুঝা গেছে, নিত্যপণ্যের মতো ফলের বাজারও নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে। আপেল, আঙুর, কমলা, মাল্টা, ডালিম, নাশপাতি সব বিদেশি ফলের দাম ৩০-৪০ শতাংশ বেড়েছে। সংকটের কথা বলে খেজুর, তীনসহ শুকনো ফলের দামও বেশি হাঁকছে। তীন ফলের দাম এখন ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ভাবেই সব ফলের দাম সাধারণ ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এনবিআরের অতিরিক্ত শুল্ক, ঘুষ বাণিজ্যও বিদেশি ফলের দাম বৃদ্ধিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। রাজনৈতিক যোগসাজশে গড়ে উঠা এই অসাধু বাণিজ্য সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে তো সরকার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে। ভোক্তা আমজনতাকেই সব সহ্য করতে হবে আরকি!
মন্তব্য করুন