দৈনিক কালবেলায় ৩০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) ‘বাবার দাফন আটকে দিল ৫ মেয়ে’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।
সজীব খান : পিতা তার কর্তব্য পালন করেন নাই, এটা অন্যায়। মেয়েরা জামাইয়ের চাপে পড়ে এসব করতে বাধ্য হয়েছে। ছেলে ও ছেলের বউকে পুলিশের হেফাজতে আনা হোক। মেয়েদের হক আদায় করে দেওয়া সরকার ও সমাজের উচিত।
মো. সিদ্দিক : সন্তান হিসেবে অবশ্যই মেয়েরাও বাবার সম্পদের অংশীদার। দেশের প্রচলিত আইন এবং ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক মেয়েরাও সম্পদ প্রাপ্য। তাদের বঞ্চিত করে ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায় হোক ছেলেদের এককভাবে সম্পদ লিখে দেওয়া সম্পূর্ণ ইসলাম এবং প্রচলিত আইনবিরোধী কাজ। ঘটনাটা সবার জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
মো. আবু জাফর ইসলাম : ইসলামী বিধান হলো পিতার সম্পত্তির এক ভাগ মেয়েরা পাবে আর ছেলেরা পাবে তার ডাবল, এখানে মেয়েদের বঞ্চিত করা হয়েছে। এ জন্য ভাইকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত।
তোফায়েল আহমেদ তুষার : দুর্ভাগা বাবা। সন্তানরা সঠিক শিক্ষা নিতে পারেনি। তারাও পাপী দুর্ভাগা সন্তান।
মো. মনিরুল ইসলাম : সম্পদের ভাগ বোনদের দিতে হয়। না দিলে তারা কী করবে।
সামিউল ইসলাম : বাবার সম্পত্তির অধিকারী মেয়েরা। তবে তাদের বাবার থেকে সম্পত্তি কখনোই বড় নয়। নিউজে বলা আছে, তাদের ভাই বাবার সম্পত্তি লিখে নিয়েছে। মেয়েদের উচিত তাদের ভাইয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া বা বাবার মৃত্যুর আগেই এই বিষয়ে বাবার সঙ্গে কথা বলা। তার মৃত্যুর পর এভাবে লাশ আটকিয়ে দেওয়াটা কখনোই উচিত নয়। বাবা আসলেই দুর্ভাগা। এদিকে তার মেয়েরা এক সময় বুঝতে পারবে তারা কতটা নিকৃষ্ট কাজটাই না করেছে তাদের মৃত বাবার প্রতি। আর তাদের বাবা তো মারাই গেছেন তার এই অবিচারের শাস্তি আল্লাহ তায়ালাই দেবেন। তার দাফন আটকিয়ে রাখলে তো আর তিনি জীবিত হয়ে তাদের সম্পত্তি দিতে পারবেন না। মানুষ মারা যাওয়ার পর তার লাশ বা দাফন আটকানো নিকৃষ্টতারই পরিচয় দেয়। আল্লাহ সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুক।
ইমরান শাহ : মেয়েদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সম্পত্তি ভাই নিয়ে গেছে, তাই এই ঘটনা।
রুহুল আমিন : এই সংবাদটা বেশি করে প্রচার হওয়া প্রয়োজন। কারণ, বাংলাদেশে সন্তানদের হক মেরে খাওয়া পিতার বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। শুনতে ভালো লাগেনি, তারপরও ঠিক কাজই করেছে মেয়েরা।
উপুল দাস মনন : আপনাদের নিউজটি পড়েছি। বাবা তো ইচ্ছে করে সম্পদ লিখে দেননি। ছেলে অসুস্থ বাবার দুর্বলতার সুযোগে সিস্টেমে টিপ নিয়ে নিয়েছে। আর মেয়েরা বাবার দাফন আটকিয়েছে। এতে বোজা যাচ্ছে তারা ভুলে গেছে যে, ওই বাবার কারণেই তারা সৃষ্টিকর্তার সুন্দর এই পৃথিবীতে এসেছিল। বাবার দাফন আটকিয়ে তারা প্রমাণ করল তারাও ভাইয়ের মতো সম্পদ লোভী।
লাকী ইসলাম ফাতেমা : যদিও মেয়েদের এমনটা করা উচিত হয়নি, তবে বাস্তবতা হলো তাদের পিতা অন্যায় করেছেন, ওয়ারিশ ঠকিয়েছেন, এর শাস্তি তিনি পরকালে পাবেন। আর ভাইও অনেক বড় অন্যায় করেছেন; বোনদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করে, তাদের ন্যায্য পাওনা না দিয়ে। যেহেতু তাদের পিতা মারা গিয়েছেন, তাই তাদের কুলাঙ্গার ভাইকে গ্রেপ্তার করা উচিত। তাকে শাস্তির আওতায় আনা দরকার। তিনি নিশ্চয়ই জঘন্য অপরাধ করেছেন।
কাজী তুষার : ছেলে যদি কৌশলে অসুস্থ অবচেতন অবস্থায় থাকা বাবার সব সম্পত্তি লিখিয়ে নেয় সেটার দায়ভার বাবার ওপর বর্তায় কীভাবে? হক নষ্ট করেছে ছেলে। মেয়েদের উচিত হয়নি বাবার লাশ দাফনে বাধা দেওয়া। আঙুলে কালির দাগ দেখে বোঝাই যায় যে, বাবার তখন সই করার ক্ষমতা ছিল না। গ্রামের স্থানীয় মানুষকে সাক্ষী রেখে উচিত ছিল, দাফন করে ফেলা। আইনি সহায়তা নেওয়া উচিত। হায়রে সম্পত্তি কাদের জন্য জোগাবেন যা নিয়ে যেতে পারবেন না। সেই সম্পত্তির জন্য দাফন করতেও দিচ্ছে না।
জাকির মাহী : এ কাজটি ভালো করেনি, মৃত্যুর পরে এই দুনিয়ায় তার কোনো বিচার হতে পারে না। জ্ঞান থাকতে ছেলেকে ধন-সম্পদ লিখে দিয়ে যায়, আর মেয়েদের যদি না দেয় সেজন্য তার আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আর ছেলে জোরপূর্বক ধন সম্পদ লিখে নেয় তাকে আইনের আওতায় আনা হোক, বাবার সম্পত্তি ভাই-বোন সবাই অধিকার আছে।
মীর কাশেম : হায়রে সম্পত্তি! সম্পত্তি থাকলেও দোষ, না থাকলেও দোষ। মুমূর্ষু বাবা থেকে একমাত্র ছেলে টিপ সই নিয়ে বোনের সম্পত্তি আত্মসাৎ করে এক অপরাধ করেছেন। আবার বোনদের ভয়ে মৃত বাবার লাশ রেখে পালিয়ে তিনি আরেক অপরাধ করেছেন। আর সম্পত্তির জন্য মৃত বাবার লাশ দাফন আটকে রেখে মেয়েরা আরও বেশি অপরাধ করেছেন। ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না দিয়ে গ্রামের ইমাম-হুজুর বলছেন, মেয়েদের হক মারার কারণে মৃত বাবার জানাজা পড়াবেন না। এই ফতোয়া কি কোরআন-হাদিসে আছে? আগে মৃত ব্যক্তির জানাজা দাফন করতো। তারপর গ্রামের মেম্বার সর্দাররা তার আত্মীয়স্বজন ডেকে ছেলেমেয়ে নিয়ে বিচার সালিশে বসত। রেখে যাওয়া সহায় সম্পদের একটা ভাগাভাগি হতো। প্রয়োজনে আইন-আদালতে সমাধান হতো। এসব না করে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন আটকিয়ে সংশ্লিষ্টরা গর্হিত অপরাধ করেছে। এগুলো পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের কুফল। অপরাধী ছেলে-মেয়ে সবার বিচার হওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন