দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে ১১ অক্টোবর (বুধবার) ‘আলু ও পেঁয়াজ বীজের দাম আকাশ ছোঁয়া’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।
আলু ও পেঁয়াজের বীজের বাড়তি দামের কারণে কৃষকের ওপর চাপ বাড়বে। এতে কৃষক মানসম্পন্ন বীজ কিনতে ব্যর্থ হলে উৎপাদনে প্রভাব পড়বে। বিপদে পড়বে দেশ। আগামী মৌসুমেও এ দুই কৃষিপণ্যের দাম বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। আর এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী দেশের সিন্ডিকেট। কেন সিন্ডিকেটকে দমানো যাচ্ছে না সে বিষয়ে পাঠক নুর আহমাদ সিদ্দিকী লেখেন, ‘সংসদে বেশিরভাগ এমপি ব্যবসায়ী। তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের দ্রব্যমূল্য বাড়ান। খাদ্যমন্ত্রী-কৃষিমন্ত্রীরা আফসোস করে বলেন, তারা সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না। আলু-পেঁয়াজের বীজ নয়, সব কিছুর দাম আকাশচুম্বী। দেশের মানুষ আজ ভালো নেই। নুন আনতে পান্থা ফুরায়। রাজনীতিবিদ ক্ষমতার মোহে অন্ধ। কেউ ক্ষমতায় থাকতে আর কেউ ক্ষমতায় যেতে দ্বন্ধে লিপ্ত। সবার লক্ষ্য ক্ষমতা। স্বাধীনতার পর থেকে যারা ক্ষমতায় ছিল এবং আছে তারা কেউ জনগণের কথা ভাবেনি। তারা ভেবেছে নিজ দল আর স্বার্থের কথা। জনগণকে সচেতন হতে হবে। দুর্নীতিবাজ, সিন্ডিকেটে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ক্ষমতার দ্বন্দ্বে জনগণ হচ্ছে বলির পাঠা।’
মো. স্বাধীন মালিক লেখেন, ‘আলু ও পেঁয়াজ বীজের দাম আকাশ ছোঁয়া। কৃষকরা হতাশ। বীজের দাম আকাশ ছোঁয়া হলে কৃষকরা কীভাবে জমিতে চাষ করবে! নিত্যপণ্যের বাজার গরম থেকে এখন বীজের বাজারও গরম। এর পেছনে একটা বড় ধরনের সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে।’
মীর কাসেম লেখেন, ‘নিত্যপণ্য চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজসহ সব তরকারির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। কয়েক দিন থেকে আলু হাফ ও পেঁয়াজ সেঞ্চুরি করল। সেই আলু-পেঁয়াজের বীজের দাম আকাশ ছোঁয়া হলে ফলনের পর দাম তো আকাশ ভেদ করে মহাকাশে উঠবে। সব ডবল সেঞ্চুরি করবে। কথিত রাজনৈতিক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী আত্মসমর্পণ করেছেন। কৃষক, ভোক্তা, আমজনতার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। পেটে যখন ক্ষুধার চরম যন্ত্রণা থাকে তখন মানুষ উন্নয়নের গানবাজনাকে তামাশা ভাবে। সরকার সাধারণ মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রণা যত তাড়াতাড়ি বুঝবে ততই মঙ্গল হবে।’
বাসুদেব রায় : আলু ও পেঁয়াজের বীজের দাম আকাশ ছোঁয়া এতে লাভবান হচ্ছে কারা? বীজের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকরা কি সঠিক ও মানসম্মত বীজ পাচ্ছে? এ দেশের কৃষিবিদরা কী করছে, তারা কী চাঁদের দেশে চাষাবাদ শুরু করতে চাচ্ছে না কি? পেঁয়াজ ও আলুর বিকল্প নেই কিন্তু কেনই-বা পেঁয়াজ ও আলু বীজের জন্য ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে না? পেঁয়াজ ও আলু বীজের সংরক্ষণের জন্য সরকার কি কোনোরূপ ব্যবস্থা করতে পারে না? পেঁয়াজ ও আলু চাষে কৃষকরা কি সঠিক মূল্য পায়? যদি না পায় তবে কৃষি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে খতিয়ে দেখে না কেন? মোবাইল ফোনে আধুনিকতা নয়, আধুনিকতা আসুক প্রান্তিক কৃষকদের প্রতিটি কাজে। এখন সময় এসেছে, কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করা। এতে সর্বস্তরের জনগণের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আশীর্বাদপুষ্ট হবে।
নুরুল আলম : সবাই যদি বাড়ির আঙিনায় কিছু সবজির চারা লাগাতো তাহলে এত দাম বাড়তো না। সবাই আমরা কিনে খেতে অভ্যস্ত।
আরাফাত হোসাইন : সিন্ডিকেটে হাত দেওয়ার বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী যেখানে অসহায় সেখানে আমরা কথা বলে কী লাভ হবে!
সুজন ভাই আলীকদম : যারা আমদানি-রপ্তানি করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করা উচিত বলে মনে করি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। মুদির দোকানে প্রশাসনের জরিমানা করা উচিত নয়। আগে মূল জায়গায় হাত দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। এক কথায় ‘বাপকে মেরে ছেলেকে বোঝানো’ উচিত বলে মনে করি।
মো. জাহিদ বিন ওমর : আলু ও পেঁয়াজ বীজের দাম আকাশ ছোঁয়া এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কারণ, আমাদের দেশে পানির চেয়ে মানুষের দাম কম। সিন্ডিকেটকারীদের চিহ্নিত করে সঠিক বিচার করা না হলে আগামীতে পানির দামও আসমান ছোঁয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মো. সাকিবুল হাসান : সব কিছুই সিন্ডিকেটের খেলা। এর বাইরে কিছু না। আর এই সিন্ডিকেট ক্ষমতাসীন দলের লোকজনই গড়ে তুলেছে। সংসদে এমপির চেয়ে ব্যবসায়ী বেশি। জনগণের তেলে জনগণকেই ভাজা হচ্ছে।
মো. মাসুদ রহমান : কথা সত্য। আকাশ ছোঁয়া দামেই কিনে খেতে হয়। এভাবে আলু ও পেঁয়াজের দাম দিনকে দিন বাড়তে থাকলে নিম্নশ্রেণির মানুষ দুইবেলা ভাত খেতে পারবে না। পণ্যের দাম অনুযায়ী আমাদের বেতন বাড়ছে না। এখন বাধ্য হয়ে আমাদের খেতে হচ্ছে। যদি সম্ভব হতো না খেয়ে থাকতাম। বাজারে যেতাম না।
সোহাগ হোসেন : যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তাদের দলীয় লোকজন এসব ব্যবসায় জড়িত। তারা সিন্ডিকেট করে রাখছে। সিন্ডিকেট সরকারও ভাঙতে পারে না। এ কারণে আলু ও পেঁয়াজের বীজের দামও বেড়ে গেছে।
মো. আবদুল হামিদ : মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য মানুষ ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করে। নেতারা নির্বাচিত হয়ে আইন করে যেন ব্যবসা-বাণিজ্য সঠিক ভাবে চলে। কিন্তু নেতারা নির্বাচন না করে ব্যবসায়িরা নির্বাচন করে সরকারকে হাতের মুঠোয় করে রেখেছে। সরকারের কোনো ধরনের আইন, নিয়ম কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাত্তা দিচ্ছে না। দাম বাড়ায় সবার সঙ্গে বসে কিছু পণ্যের দাম ঠিক করে দেওয়া হলো। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেটা গুরুত্বই দিচ্ছে না। এ রকম করে সরকার চলতে পারে না।
মো. তারেক : বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে এক মাস নেতারা বসুক। বাণিজ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরেজমিন উপলব্ধি করুক। তাহলে তারা বুঝতে পারবেন দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত ও খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠী কেমন করে হাহাকার করে। জানতে পারবে সিন্ডিকেটকারী কারা। মোহাম্মদ সৌরভ হোসেন : দিন দিন সব কিছুর দামই বেড়ে চলবে। কমবে শুধু মানুষের দাম।
মো. রবিউল হান্নান : মতামত একটাই আমাদের দেশের চোর-বাটপার আর সিন্ডিকেটের কারণে অসহায় হতদরিদ্র মানুষগুলোর খুবই কষ্ট হয়। তাই আমার কথা হলো যারা সিন্ডিকেট করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। চির জীবনের জন্য তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।
ইসহাক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ : এখন দেশের যে পরিস্থিতি তাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সাধারণ মানুষের ছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। এখন কৃষকদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য হলো কার্তিক মাসে জমিতে ফসল ফলানোর জন্য বীজ। বাংলাদেশ কৃষিকেন্দ্রিক দেশ। এ দেশে গ্রামের প্রায় সবাই কৃষিকাজ করে। মৌষুমি ফসল ফলানোর জন্য বীজ তাদের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। বীজের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের বড় ভূমিকা পালন করা উচিত। কৃষকদের সরকারিভাবে ভালো মানের বীজ বিতরণ করা হোক। এতে বীজের মান ঠিক থাকে। আর বর্তমানে হাট-বাজারে যে বীজ বিক্রি হয় তা মানের দিক থেকে অনেক খারাপ। যার ফলে কৃষক লাভমান হয় না। বীজের কারণে ফসল নষ্ট হয়। বিষয়টিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর দেওয়া দরকার।
গ্রন্থনা : আব্দুল্লাহ আল মাছুম
মন্তব্য করুন