দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে ১০ অক্টোবর (মঙ্গলবার) ‘পদ্মার রেলে বাসের চেয়েও বেশি ভাড়া’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামতগুলো প্রকাশ করা হলো।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত নতুন রেলপথ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিনক্ষণ ঠিক না হলেও নভেম্বর থেকে এই রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এ অবস্থায় প্রকল্পে ট্রেনের ভাড়া নিয়ে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। জানা গেছে, পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার এবং উড়াল পথের জন্য বাড়তি দূরত্ব ধরায় অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হবে যাত্রীদের। এতে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ঢাকা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ট্রেনের ভাড়া বাসের চেয়েও বেশি।
পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলের ভাড়া নিয়ে কালবেলার অনলাইন পেজে বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন পাঠকরা। মীর কাসেম লিখেছেন, ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতুর রেল বলে কথা! এই সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে সরকারকে দেশি-বিদেশি অনেক বাধাবিপত্তি, আপত্তি ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়েছে। খরচপাতিও বেশি হয়েছে। তা-ও নিজেদের টাকায়। প্রমত্ত পদ্মার এপারওপার মানুষের সহজ ও দ্রত যাতায়াতের সমস্যা সমাধান তো হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের স্বপ পূরণ তো হয়েছে। তাই ভাড়া সামান্য বেশি হলেও যাতায়াতের কষ্ট লাঘবের কথা মাথায় রেখে মানুষ তা মেনে নিবে। তবুও কিছু অকৃতজ্ঞ মানুষ আছে যারা অভ্যাসবশত সমালোচনা করে বেড়ায়। অথচ সুবিধাভোগীদের উচিত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকারেরর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।’
আমিনুল ইসলাম লিখেছেন, ‘চলাচলের জন্য বাসের চাইতে রেল তুলনামূলক একটি নিরাপদ যানবাহন, তাই ভাড়া একটু বেশি হলেও জনসমাগম এড়াতে রেলে উঠবে উচ্চ ও মধ্যেবিত্তরা... নিম্ন আয়ের বেশির ভাগ মানুষ যাতায়াত করবে বাসে।’
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন। জনগণের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে উল্লেখ করে মো. আরিফ লিখেছেন, ‘শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়নের গল্প শোনায় জনগণকে। সেই উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করতে গেলে জনগণের জীবন শেষ হয়ে যায়। কী হবে এই উন্নয়ন দিয়ে? বাসের চেয়ে ট্রেনের ভাড়া বেশি হয়।’
দেলোয়ার হোসাইন লিখেছেন, ‘পৃথিবীর সবদেশেই বাসের থেকে রেলের ভাড়া কম। আর আমাদের বেশি না হলে জনগণের পকেটে ছুরি মারবো কী করে। উন্নয়ন বলে কথা।’
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মিজানুর রহমান লিখেছেন, ‘আমলাদের টাকা পাচারের খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। বাসের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে অনেকে টিকিট কাটবে না, চেষ্টা করবে ভিতরের স্টাফদের অর্ধেক ভাড়া দিয়ে ভ্রমণ করার। সরকার বিপুল রাজস্ব হারাবে।’
আক্ষেপ নিয়ে পাঠক দিদারুল ইসলাম লিখেছেন, ‘একটা দেশ যখন লাইনচ্যুত হয়- তখন এই রকম উল্টাপাল্টা সিদ্ধান্ত আসে।’
ইমরান চেই মুন্না লিখেছেন, ‘দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় বেশি মূল্যে জনজীবনে দুর্ভোগ বিরাজ করছে! সাধারণ মানুষকে নিয়ে সরকারের উপকারী উদ্যোগ নেই! অথচ সরকারের এইসব বিলাসিতা পায়ে সোনার সেন্ডেল পড়ার মতো সিদ্ধান্ত!’
বিএম হানিফ হোসাইন লিখেছেন, ‘ভাড়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। মোটাদাগে বললে ভাড়ার পরিমাণ বেশি মনে হচ্ছে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যে যৌক্তিকতা দেখিয়েছে, তারা ১ কিলোমিটারকে কোনো জায়গায় ৫ আবার কোনো জায়গায় ২৫ কিলোমিটার হিসেব করে ভাড়া নির্ধারণ করেছে। এখন কাজের ব্যয় বেশি বা উরাল পথের জন্য এইভাবে হিসাব করে ভাড়া নির্ধারণ করা আমার মনে হয় যথার্থ হয়নি। মূল কথা হলো জনগণ তাদের এই হিসাবে সন্তুষ্ট নয়। এই বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত এবং ভাড়া আরও সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।’
মাহফুজ হাসান লিখেছেন, ‘পদ্মা রেল সেতুতে ভাড়া দ্বিগুণ দিয়ে চলাচল করতে হবে। আমার মনে হয় রেলসেতু সরকারের একটি বিরাট সাফল্য। তাই এখানে সাধারণ রেলের চেয়ে ভাড়া আরও কমানো উচিত।’
প্রস্তাবকৃত ভাড়ার সমর্থন জানিয়ে পাঠক জিএম ইমরান লিখেছেন, ‘নতুন রেলপথ হওয়ার কারণে, অনেক টাকা খরচ হওয়ার জন্য ভাড়াটা একটু বেশি হতেই পারে।’
নুর আহমেদ সিদ্দিকী লিখেছেন, ‘দেশে কোনো নিয়ম নেই। যে যেভাবে পারে সেভাবে লুটপাট করছে। সর্বত্র এখন সাধারণ মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে। ধনীদের কোনো ক্ষতি নেই। চিন্তা নেই রাজনীতিবিদ, নেতা নেত্রীদেরও। চিন্তা শুধু খেটে খাওয়া মানুষের। যারা দিনে এনে দিনে খায় তাদের আয়-ব্যয়ের কোনো সামঞ্জস্যতা নেই। একজন বেসরকারি শিক্ষক মাস শেষে যা সম্মানি পায় সেটা দিয়ে তার পরিবার চলে না। ট্রেন নয় শুধু, বঙ্গবন্ধু টানেলে যে টোল ধরা হয়েছে তাও অনেক বেশি। পদ্মা সেতুর ট্রেনের এত টোল কেন তাও বুঝে আসে না। টানেল আর সেতু ট্রেনের ভাড়া কমানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।’
মন্তব্য করুন