ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি খুবই কম। সব মিলে ভোটারের উপস্থিতি ৯ থেকে ১১ শতাংশের বেশি হবে না। এমনকি ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারের চেয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের সংখ্যাই বেশি। ভোটের ব্যাপারে ভোটারদের মধ্যে ন্যূনতম কোনো উৎসাহ নেই।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সব কেন্দ্রে শাসকদলের প্রার্থীর এজেন্ট রয়েছে, কিন্তু অন্য কোনো দলের এজেন্ট নেই। হিরো আলমও অভিযোগ করেছেন, তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমরা নিজেরাও ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করতে গিয়ে কেন্দ্রগুলোতে সরকারি দল ছাড়া অন্য কোনো দলের এজেন্ট পাইনি।
বনানী বিদ্যানিকেতন ও কলেজ কেন্দ্রে আমাদের উপস্থিতিতেই হিরো আলমকে মারধর করা হয়েছে। হিরো আলম ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে এসেছিলেন। এ সময় তাকে ধাওয়া দিয়ে, টেনেহিঁচড়ে কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে, মাটিতে ফেলে তাকে মারপিট করা হয়েছে। এটা খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। সারা দিন শান্তিপূর্ণভাবে যা কিছু চলছিল এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তা ম্লান হয়েছে।
ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নেই। কারণ এই নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে তেমন কোনো আগ্রহ নেই। উপনির্বাচনের ব্যাপারে মানুষের তেমন আগ্রহ থাকেও না। তা ছাড়া এই নির্বাচনের মেয়াদ মাত্র ছয় মাস হওয়ায় মানুষ ভোট দিতে আগ্রহ পায়নি।
ভোটকেন্দ্রে ভোটার না আসার আরও একটি কারণ হলো, ঢাকা-১৭ আসন একটি অভিজাত এলাকা। এখানে বিত্তবানরা বসবাস করেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিন তারা বাসায় বসে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। এ কারণে তাদের মধ্যে ভোট দিতে যাওয়ার আগ্রহ কম থাকে। তা ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা কেউ কেউ দাবি করেছেন, তারা কেন্দ্রে এসে দেখেছেন তাদের ভোট আগেই দেওয়া হয়ে গেছে। এসব ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও প্রত্যাশিত মাত্রায় যথাযথ ছিল না।
বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যখন চারদিক থেকে দাবি উঠছে সেখানে এমন একটি নির্বাচন আমাদের জন্য হতাশাব্যঞ্জক। একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়া, কেন্দ্রের ভেতরে এবং বাইরে প্রার্থীর ওপর হামলা করা- এগুলো খুব একটা শুভ লক্ষণ নয়। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে আমরা আরও একটু পিছিয়ে গেলাম। আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতিও প্রশ্নবিধ হয়ে পড়ল।
মন্তব্য করুন