রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহআন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক। তিনি সংরক্ষিত নারী আসন-৫০ থেকে নির্বাচিত একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালের ২৮ মে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। বিএনপির আন্দোলন নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
আজকের সমাবেশ থেকে আপনাদের চাওয়া কী?
রুমিন ফারহানা: আমরা একদফা নিয়ে মাঠে নামছি এবং এই দফা আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠেই থাকব।
আজকের সমাবেশে কী বলতে চান ?
রুমিন ফারহানা: আজকের সমাবেশে আমাদের সিনিয়র নেতারা কথা বলবেন। একটি ধারাবাহিক আন্দোলন সফল করার জন্য তারা দিকনির্দেশনা দেবেন।
আপনাদের আগামী কর্মসূচিগুলো কেমন হবে?
রুমিন ফারহানা: আজকের সম্মেলন থেকেই হয়তো আগামীর কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করা হবে। তাই সমাবেশ শেষ হওয়ার আগে এ ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা আগেই পরিষ্কার করে জানিয়েছি, আমরা হরতাল বা অবরোধের মতো কোনো কর্মসূচিতে যাব না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে যা যা করা দরকার তার সবই করব।
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সরকারের পদক্ষেপকে কীভাবে দেখছেন?
রুমিন ফারহানা: আমরা যাতে সফলভাবে কর্মসূচি করতে না পারি তার জন্য এ সরকার সব রকম চেষ্টা করবে। কিন্তু এখন যেহেতু আমাদের দেয়ালে পিট ঠেকে যাওয়া অবস্থা, তাই যেই বাধা আসুক না কেন আমাদের নেতাকর্মীরা তা অতিক্রম করে সমাবেশ সফল করবেন। আমাদের নেতাকর্মীরা ভীষণভাবে নির্যাতিত হয়েছে, তাই তাদের আর নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে আটকে রাখা যাবে না।
সরকার আপনাদের সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। বিষয়টিকে দল হিসেবে বিএনপি কীভাবে মূল্যায়ন করছে?
রুমিন ফারহানা: সরকারের ওপর বড় ধরনের চাপ রয়েছে। সভা সমাবেশে বাধা দিতে পারবে না, তার চাপ রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল থেকে। সে জন্য হয়তো তারা সমাবেশের অনুমতি দিতে বাধ্য হচ্ছে। অনুমতি দিচ্ছে ২৫-৩০টি শর্ত দিয়ে। সরকার তো কোনোভাবেই চাইবে না, সমাবেশ সফল হোক। সরকার চায় না নেতাকর্মীরা নিরাপদে সমাবেশস্থলে আসতে পারুক। সুতরাং যত রকমের বাধা দেওয়া সম্ভব তারা দেবে। অতীতেও দিয়েছে, এখনও দিচ্ছে।
সভাবেশস্থলে আসতে আমাদের নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকা চলাচল পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকেই ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে কড়া পাহাড়া বসানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মীদের বাধা প্রদান করছে। বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের ধরা হয়েছে। এমনকি সমাবেশস্থলে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অনেককে। সরকার বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে সচেষ্ট রয়েছে।
আপনারা যে সময় সমাবেশ করছেন, তখন যুক্তরাষ্ট্রের দুজন প্রতিনিধি নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা করার জন্য বাংলাদেশ অবস্থান করছেন। তাদের সঙ্গে আপনাদের সমাবেশের কোনো সম্পর্ক আছে কি?
রুমিন ফারহানা: না, এর সঙ্গে আমাদের সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা গত বছরের জুলাই থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি করছি। এটা তারই ধারাবাহিকতা।
নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার প্রশাসনকে সাজাচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। আপনারা কী ভাবছেন?
রুমিন ফারহানা: এগুলোকে আমরা সরকারের দেউলিয়াত্ব হিসেবে দেখছি। যেদিন আমরা সমাবেশ ডাকি তারাও সেদিন সমাবেশ ডাকে। এত ভয় কেন? আমরা একটি সমাবেশ করব, সমাবেশে মানুষ আসবে, আমাদের কথা শুনবে। এটুকুই তো। সরকার ভীষণ ভীত। না হলে একই দিনে সমাবেশ থাকত না। একটি ভুয়া চিঠি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যেখানে বলা হচ্ছে- ১২ তারিখের জায়গায় বিএনপির সমাবেশ 22 তারিখে করা হবে। বিএনপির সমাবেশে যাতে মানুষ না আসতে পারে, এ জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা এই ভুয়া চিঠি। সরকার ভীষণ ভীত বলেই এসব করছে।
মন্তব্য করুন