ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এর সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের গ্রেড-১ প্রফেসর। তিনি জানিপপ-জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। ড. কলিমউল্লাহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৭ সালে অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক এবং ২০১১ সালে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট-এর লেজিসলেটিভ ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি আর্ন্তজাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিশর, মোজাম্বিক, জাম্বিয়া, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব তিমুর লেস্টি ও গণচীনের হংকংসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের নির্বাচন পূর্ববর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফর বিষয়ে কালবেলার সাঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা এবং শ্রুতিলিখন মুজাহিদুল ইসলাম।
কালবেলা : বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছে। আপনার সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। কী আলোচনা হলো?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: বাংলাদেশের নির্বাচন পূর্ব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে, তারা কয়েক দিন ঢাকায় অবস্থান করেছেন। বিভিন্ন দল ও ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমার সঙ্গে জানিপপের চেয়ারম্যান হিসেবে তাদের বৈঠক হয়েছে। আইআরআই এবং এনডিআই উভয় সংগঠনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার।
আমি এ উভয় সংগঠনের সঙ্গে মিলে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কাজ করেছি বিভিন্ন দেশে। স্বল্পমেয়াদি হংকং ও নাইজেরিয়াতে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করেছি আইআরআইয়ের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে। প্রি-ইলেকশন মূল্যায়ন মিশনের সদস্য হিসেবে আমি কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জো ক্লার্কের নেতৃত্বে এনডিআইয়ের হয়ে কাজ করেছি। পাশাপাশি আমি মিশরে আইআরআই টিমের অংশ হিসেবে স্বল্পমেয়াদি নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবেও কাজ করেছি। এনডিআইয়ের আমন্ত্রণে আমি লেবানন ও জ্যামাইকাতে গিয়েছি। সবমিলে তাদের সঙ্গে কাজ করার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। ফলে নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য তারা যে নীতিমালা অনুসরণ করেন আমি তার সঙ্গে পরিচিত।
বাংলাদেশের নির্বাচন পূর্ববর্তী পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। কী আলোচনা হয়েছে সেটা বলার এখতিয়ার আমার নেই, তারাই সেটা জানাবেন। প্রতিনিধি দলের মিশন শেষ হলে তারা বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন। তারা সেই প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের নির্বাচন কমিশনকে হয়তো জানিয়ে দেবেন। এরপর হয়তো তারা সেটি মিডিয়ার সামনেও প্রকাশ করতে পারেন। সাধারণত এটাই তারা করে থাকেন।
বাই পার্টিজান প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছেন প্রধানত বাংলাদেশের নির্বাচন-পূর্ববর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষেণ করার জন্য। বাংলাদেশে নির্বাচন করার মতো পরিবেশ রয়েছে কি না এবং নির্বাচনের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি কতটা সহায়ক, তারা সেটি যাচাই করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনী স্টেকহোল্ডাররা কী ভাবছেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে কতটুকু সমর্থ, তারা তা অনুসন্ধান করেছেন।
কালবেলা: প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা করে আপনার কী মনে হলো? বাংলাদেশের পরিস্থিতি তারা কীভাবে দেখেছেন?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে তারা খুবই সিরিয়াস বলে আমার মনে হয়েছে। তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজটি করেছেন এবং তাদের কাজে কোনো রকমের অস্পষ্টতা নেই। আমি যতটুকু জানি, এটাই মার্কিন পর্যবেক্ষণ কালচার। তারা যা ভাবেন, যা বিশ্বাস করেন, সেটা তারা শিষ্টতার সঙ্গে কোনো অস্পষ্টতা না রেখেই বলে দেন। সুতরাং এখানে কোনো রকমের লুকোচুরির বিষয় নেই।
কালবেলা : মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদনের ওপর বাংলাদেশের নির্বাচনের কী কিছু নির্ভর করছে?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: তাদের প্রতিবেদনকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। ইইউ মানে সাতাশটি দেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান বিশ্বের পরাশক্তি। সুতরাং তাদের অবস্থান আমাদের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত বিশ্বের প্যার্টিয়াক। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে বিশ্বে তাদের যে অবস্থান তাতে মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদন আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এটাকে হালকাভাবে বিবেচনা করা খুব বিজ্ঞ জনচিত কাজ হবে বলে মনে হচ্ছে না।
কালবেলা : মার্কিন প্রতিনিধিদল আপনার কাছে কী জানতে চেয়েছেন?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: তারা নির্বাচন ঘিরে আমাদের প্রস্তুতি জানতে চেয়েছেন। আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য কতটুকু প্রস্তুত, সেটা তারা জানতে চেয়েছেন। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলে সেটা কেমন হবে এবং অংশগ্রহণমূলক না হলে অর্থাৎ বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধীদল অংশগ্রহণ না করলে আমরা কী করব, সেটাও তারা জানতে চেয়েছেন। তারা জানতে চেয়েছেন, নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত যেসব নির্বাচন করেছে সেগুলো কেমন ছিল। বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক অচলাবস্থা বিরাজমান সেটার জট কীভাবে খুলতে পারে ইত্যাদি।
কালবেলা : মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকা থাকা অবস্থাতেই দলগুলোর মধ্যে আলোচনার একটি কথা শোনা যাচ্ছিল। এ বিষয়ে আপনি কী জানেন?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: পর্দার এপাশের এবং ওপাশের কাজের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পর্দার ওপাশের কাজগুলো আসলে আস্থা তৈরির অংশ। সেই কাজগুলো যখন একটি পরিণত পর্যায়ে যায় তখন আমরা চোখের সামনে ফলাফলটা দেখতে পাই। সফলতার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে যদি তা প্রাথমিক পর্যায়ে গোপন থাকে। এজন্য আমি মনে করি, সকল পক্ষেরই এখন চুপ থাকা উচিত। অতীতে এই দেশ যত রকমের সংকটের সম্মুখীন হয়েছে বরাবরই শেষ মুহূর্তে সংকট থেকে উত্তরণের একটি সুযোগ এই জাতি পেয়েছে।
কালবেলা: সেসব সংকট উত্তরণে বিদেশি দূতাবাস কিংবা বিদেশি শক্তিগুলোর ভূমিকা কেমন ছিল?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: আমরা যাই বলি না কেন, আন্তর্জাতিক কমিউনিটির হস্তক্ষেপ প্রয়োজনীয়। এটা সব সময়ই ম্যাটার করে। স্বাধীনতা যুদ্ধে যেমন আমাদের সফলতার ক্ষেত্রে বিদেশিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা ছিল তেমনি পরবর্তী বিভিন্ন সংকটের সময়েও তারা ভূমিকা রেখেছেন। বিদেশিদের নৈতিক এবং জাতীয় সমর্থন ছাড়া মাত্র নয় মাসের মধ্যে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পারতাম না এটা যেমন সঠিক, ঠিক তেমনিভাবে এখন আমাদের যে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে সেটা থেকে উত্তরণ করতে হলেও আমাদের আন্তর্জাতিক গ্যারান্টির প্রয়োজন হবে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
বাংলাদেশে বিরাজমান অচল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি ছাড়া একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। মনে রাখতে হবে, এখন দেশে হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটার মতো একটি পরিবেশ বিরাজ করছে। আমাদের সামনে বিদ্যমান খেলার মাঠটি অসমতল। সেটি সমতল করার জন্যই সংলাপ প্রয়োজন। সকল পক্ষকে কিছুটা হলেও ছাড় দিয়ে নির্বাচন আয়োজনের মতো একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আর সেই ছাড় দিতে হবে দেশের স্বার্থে, দেশের মানুষের স্বার্থে এবং বিশ্ববাসীর প্রতি সম্মান রেখে।
কালবেলা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন কথা শোনা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনি কী জানেন?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: তাত্ত্বিক বিবেচনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি দেশের এক নম্বর ব্যক্তি। তিনি যে ক্ষমতা বহন করেন সেটা আর কেউ করেন না। যেমন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের মধ্যে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু তারা জানেন না, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হলো শুধু সুপারিশ করার এবং অনুমোদন করার ক্ষমতা হলো মহামান্য রাষ্ট্রপতির। স্পষ্টভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। তবে যতটুকু শুনতে পাচ্ছি, সর্বদলীয় সরকার অর্থাৎ রাজনৈতিক চরিত্রের সরকার না হয়ে সুশীল সমাজনির্ভর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হতে পারে। সব ধরনের সম্ভাবনাই রয়েছে। তবে যাই কিছু হোক না কেন, সংলাপ অত্যাবশ্যক।
কালবেলা: বিএনপির দাবি প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাড়া তারা আলোচনায় বসবে না। এক্ষেত্রে সংলাপ হবে কীভাবে?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: এখানে অনেক ধরনের ব্যবস্থা হতে পারে। বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতুর প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল তখন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। একই ভাবে আমাদের প্রধানমন্ত্রীও নির্বাচনকালীন সময়ে ছুটিতে যেতে পারেন। সুতরাং বিভিন্ন ধরনের অপশন রয়েছে। আমরা জানি একজন এমপি বা মন্ত্রী যখন ছুটিতে থাকেন তখন তিনি তার দপ্তরের কাজকর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেন না। যত দ্রুত সমঝোতা হবে সংঘাতের আশঙ্কা তত কমবে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বার্থে দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেতুবন্ধ স্বরূপ। আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত এবং দূর প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীনের কারণে বাংলাদেশ স্ট্রাটেজিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আর এটা হয়েছে আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে।
কালবেলা: সম্প্রতি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে তার কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে কী?
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: বাংলাদেশের একজন বিদুষী নারী ফয়জুন্নেসা আহাদ সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় ৪ খণ্ডে তার একটি লেখা প্রকাশ করেছিলেন। yalta and Aftermath শিরোনামে সেই লেখা প্রকাশিত হয়েছিল। পরে এই লেখাটির কারণে তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন এবং সেই হত্যাকাণ্ডের এখনো কোনো বিচার হয়নি। রাজধানীর গুলশানে নিজ বাড়িতে তার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। সেই লেখায় তিনি বলেছিলেন, ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের সঙ্গে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের নাড়ির বন্ধন রয়েছে। তিনি লিখেছিলেন ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম না হলে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হতো না। অর্থাৎ তিনি সেখানে বলতে চেয়েছেন ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম না হলে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে বর্তমান ভৌগোলিক অবয়বে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রকাশ পেত না।
অসমর্থিত সূত্রে বলা হয়, বাংলাদেশকে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি প্রদান করেছিল ইসরায়েল। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ২৯ এপ্রিল ১৯৭১ সালে ইসরায়েল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেছিল বলে জানা যায়। অবশ্য সেই স্বীকৃতি বাংলাদেশ গ্রহণ করেনি। পরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে ক্ষমতায় ছিলেন। তখন বাংলাদেশের জন্য ইসরায়েল থেকে যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছিল লিস্টেন নামের ইউরোপীয় একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের মাধ্যমে। সেই সমস্ত অস্ত্র আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে সরবরাহও করা হয়েছিল ইসরায়েলের স্কুল এবং কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তাদের টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে এবং পুরোনো কাপড় সংগ্রহ করে আমাদের রিফিউজি ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল।
ইসরায়েল যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করে তাই তাদের আমরা সন্দেহের চোখে দেখি এবং তাদের সঙ্গে আমরা যে কোনো ধরনের কাজ করা বন্ধ করে দিই ওই সময়ে। সেই লিগ্যাসি আমরা এখনও বহন করে বেড়াচ্ছি। ইসরাইলের সঙ্গে আমরা আজও সম্পর্ক স্বাভাবিক করিনি। ওআইসিভুক্ত মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশ ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কিন্তু আমরা ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিইনি।
আমরা স্বাধীনতার পর থেকেই প্যালেস্টাইনি ভাইদের সঙ্গে আমাদের সংহতি বজায় রেখেছি। যদিও সম্প্রতি আমাদের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল রাষ্ট্র ভ্রমণের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটি তুলে দেওয়া হয়েছে। তবুও ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক বা অন্য কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে বলে আমার মনে হয় না। সরকারের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব সম্প্রতি বলেছেন, আমরা এখন প্যালেস্টাইন ইসরায়েল বা বহির্বিশ্বের ইস্যু নিয়ে মনোযোগ দিতে চাচ্ছি না। আমাদের সম্পূর্ণ মনোযোগ এখন বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে।
মন্তব্য করুন