নতুন বই প্রকাশ করে আহ্লাদে আটখানা লেখিকা। কারণ তার প্রথম বই প্রকাশিত হয়েছে এবারের বইমেলায়। যারপরনাই খুশি সে। কিন্তু তার বই কে পড়বেন? বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার অনেক বন্ধু তারাই পড়বেন।
দেশে কাকের চেয়ে কবির সংখ্যা বেশি তা স্বীকারও করলেন এক কবি। তিনি বলেন, এটা সত্যি পাঠকের চেয়ে লেখক বেড়ে গেছে- তাই বই কিনতে চায় না কেউ।
বেশ কয়েক বছর ধরে নিয়মিত বই প্রকাশ করে আসছেন শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়া এক লেখিকা। আগে তার বই ছাত্ররা কিনলেও এখন আর আগের মতো কেনেন না। কারণ এখন আর শিক্ষক নন তিনি।
আচ্ছা নতুন লেখকদের বই কারা কিনবে সেটি যখন বড় প্রশ্ন তখন আরও একটি প্রশ্ন সামনে চলে আসে। নতুন লেখকরা কি বই কেনেন অন্য নতুন লেখকদের? তবে মানুষ কেন কিনবে তাদের বই? মেলা শেষ পর্যায়ে চলে এলেও এসব লেখকরা এখনো কেনেননি বই। সবাই কিনে নেবেন এমন অজুহাতেই হয়তো শেষ হবে বইমেলা, কেনা হবে না আর নতুন বই।
পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি শ্যামল পাল মনে করেন, প্রচুর লেখক হয়ে গেছেন কিন্তু কী লিখছেন নিজেরাও জানেন না। মান সংকটে পাঠক হারানোর ঝুঁকি আছে বলেও মনে করেন তিনি। যার কারণে লেখক নয়, পাঠক তৈরিতে জোড় দিতে হবে। পাঠক তৈরি না করে লেখক বেড়ে গেলে বই কিনবে কারা?
লেখক আনিসুল হক অবশ্য বলছেন, মেলা এলে সবাই লেখক হওয়ার দৌড়ে থাকে; তবে মৌসুমি এসব লেখক টিকে থাকতে পারে না। তাতে করে পাঠক নষ্ট হয়, বই কিনতে ভয় পায় সাধারণ পাঠক। তিনি বলেন, নতুন লেখক দুই ধরনের হয় এক. কোনো মেলায় একটি বই প্রকাশ পায় তারপর আর কখনো বের হয় না। দুই. কোনো মেলায় কোনো কারণে এক লেখকের বই হিট হয়ে যায় তারপর আর তার বই চলে না।
নতুন লেখকদের বই কিনতে নতুনদেরই যখন এত অনীহা তবে তাদের বই কে কিনবে এমন প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। তবে ভালো লেখক হতে হলে প্রচুর পড়ালেখার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন