মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৩৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে

জাতীয় সংসদ অধিবেশন। পুরোনো ছবি
জাতীয় সংসদ অধিবেশন। পুরোনো ছবি

বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জাতীয় সংসদে সোচ্চার ছিলেন সংসদ সদস্যরা। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় নিয়ে তারা বলেছেন, কিছু সুবিধাবাদী মানুষ দুর্নীতি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। যেসব গণতান্ত্রিক দেশে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত সেখানে এরকম দেখা যায় না। দেশের ব্যাংক লুটেরা, অর্থপাচারকারীরা এবং এ সমস্ত দুর্নীতিবাজরা আমাদের গায়ে চুনকালি মাখতে পারে না। দুনীতির বিরুদ্ধে সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।

দুর্নীতিবিরোধী আইন দৃশ্যমানভাবে, দ্রুত, শক্তভাবে বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়ে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম এ মান্নান বলেন, সরকারি ব্যয়ের মৃত্যব্যয়িতা দেখাবার, অনুশীলন করার খুবই প্রয়োজন আছে। আমাদের আমলাতন্ত্র বিশাল, এ আমলাতন্ত্রে পরতে পরতে নানা ব্যয় আছে। আমিও ওখানে ছিলাম।

তিনি বলেন, আমি যদি নিজেকে প্রশ্ন করি নিজেকে তাহলে গাড়ি, বসার জায়গা, বসবাস, বিদেশ ভ্রমণ, সভা সমিতি, সম্মানি এসব ক্ষেত্রে আমি সরকরের প্রতি আহ্বান জানাবো মৃতব্যয়িতার দিকটাকে দৃশ্যমানভাবে অনুশীলন করার জন্য।

সাবেক মন্ত্রী আরও বলেন, জৌলুস, অপচয় আরেকটা দিক প্রায়ই দেখা যায় আমাদের এখানে যেখানো কোনো উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ যেখানে জবাবদিহিতা চমৎকারভাবে প্রতিষ্ঠিত সেখানে এটা দেখা যায় না। এ সময় তিনি গণচীনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে বলেন।

বেনজীর ও মতিউর রহমানের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে সাবেক এ আমলা বলেন, আমাদের সরকারের বিশেষ করে আমাদের আমলাতন্ত্রেও দৃষ্টি আকর্ষণ করব। সম্প্রতি কয়েকটি উদাহরণ অত্যন্ত পিড়াদায়ক আমাদের জন্য। আমি নিজেও আমলাতন্ত্রে ছিলাম, আমার অপরাধবোধ আছে। এসকল ব্যক্তি যে সকল আর্থিক ক্ষতি করেছে সেটা হয়তো আমরা পুষিয়ে নিতে পারব।

তিনি বলেন, কিন্তু নৈতিকভাবে তারা যে ক্ষতি করেছেন আমাদের দেশের, আমাদের আমলাতন্ত্রের প্রতি তারা সরকারের কেন্দ্রে অবস্থান করে তারা যে সকল কাজ করেছেন এগুলো যেকোনো সংবেদনশীল সমাজের জন্য অত্যন্ত চিন্তার এবং শঙ্কার বিষয়। এদিকে আমলাতন্ত্রেও সকল বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।

সংসদ সদস্য এম এ মান্নান বলেন, আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বলব, নতুন ডাক্তার গ্রামে যেতে চায় না বহু পুরোনো ই্স্যু। তাদেরকে যখন নতুন বিসিএস দিয়ে যোগদান করবে অন্তব্য দুই বছর যাতে বাধ্যতামূলক গ্রামে তারা চাকরি করে এ বিধান করা প্রয়োজন। না হলে তাদেরকে বিসিএস দিয়ে চাকরি দেওয়া হবে না। দলীয় নেতাকর্মীদের দুর্নীতিতে ছাড় দেওয়া হয় না দাবি করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ইদানিং যেসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, আমি বিশ্বাস করি, এগুলো একটা ষড়যন্ত্রের অংশ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হঠাৎ করে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রচার–প্রোপাগাণ্ডা করা হচ্ছে। দেশের মানুষের সন্দেহ হয়, আজকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এসেছে। কিন্তু এ কথা স্বীকার করতে হবে, যাদের বিরুদ্ধে আজকে অভিযোগ, তারা কেন আইনকে ভয় পায়? আইনকে ভয় পেয়ে বিদেশে কেন চলে যায়?

কামরুল ইসলাম বলেন, আজকে বেনজীর সাহেব, ছাগলকাণ্ডের কর্মকর্তা কেন আইনকে ভয় পায়? আইনকে ভয় পায় মানে হচ্ছে, তারা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, সেগুলো সত্য।

বাংলাদেশ কোনো অবস্থায় দুর্নীতিগ্রস্ত বা দুর্নীতিবাজদের সহ্য করতে পারে না বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‍বিএনপি কখনো তাদের দুর্নীতিবাজদের শায়েস্তা করতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময় মন্ত্রী-এমপিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। কিছুদিন আগে ক্যাসিনোকাণ্ডে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন।

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হঠাৎ করে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রচার-প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। এটা ষড়যন্ত্রের অংশ, কিন্তু তারপরও এগুলো সত্য। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আইনকে ভয় পেয়ে বিদেশে কেন চলে যান এ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আইনকে ভয় পান মানে হচ্ছে তারা দুর্নীতিগ্রস্ত।

দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের অন্যতম সৎ রাষ্ট্রনায়ক আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের ব্যাংক লুটেরা, অর্থ পাচারকারীরা এবং এই দুর্নীতিবাজেরা আমাদের গায়ে চুনকালি মাখতে পারে না। ক্যাসিনোকাণ্ডে যেমনভাবে বিচার করা হয়েছিল, তেমনি তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য আরমা দত্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সনীতি গ্রহণ করে আসছেন। কিন্তু কিছু সুবিধাবাদী মানুষ দুর্নীতি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এটাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।

বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হুছামুদ্দীন চৌধুরী বলেন, যারা পুকুর চুরি করে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এর যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে। এ সুযোগে যেন দুর্নীতিবাজেরা উৎসাহিত না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

আরেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে। অর্থমন্ত্রী এ জন্য পরিকল্পনা নিয়েছেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যে মডেল নিয়েছেন, একই মডেল যুক্তরাষ্ট্র অনুসরণ করে পাঁচ বছরেও সফল হয়নি। তিনি অর্থমন্ত্রীকে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে আবার বসার আহ্বান জানান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৪ ম্যাচে এক গোল করেই কোয়ার্টারে ফ্রান্স!

প্যারিস অলিম্পিকে স্প্রিন্টার ইমরানুর

আত্মঘাতী গোলে ইউরো থেকে বিদায় বেলজিয়ামের

সিগন্যাল ত্রুটি, লাকসামে দাঁড়িয়ে গেল বিরতিহীন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস

সিলেটে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ১

কারাগারে উপজেলা চেয়ারম্যান, প্রতিবাদে সড়কে অগ্নিসংযোগ ও হরতাল ঘোষণা

আংশিক দায়মুক্তি পেলেন ট্রাম্প

মঙ্গলবার বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন

ডিসেম্বরেই বিপিএল, সূচি চূড়ান্ত

বালুবোঝাই ট্রাক কেড়ে নিল খালা-ভাগ্নির প্রাণ 

১০

ট্রাক-প্রাইভেটকারের সংঘর্ষ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ আহত ৬

১১

কোটা বাতিল না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

১২

ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি

১৩

শিশুসহ নারীকে থানায় আটক / পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল মানবাধিকার কমিশন

১৪

চবির আবাসিক হলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

১৫

সাভার থেকে নিখোঁজ যুবকের মরদেহ নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার

১৬

মুক্তিযুদ্ধে চালু থাকা ঢাবি মেডিকেল সেবা আজ কেন বন্ধ?

১৭

কোটা বাতিলের দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

১৮

সংযুক্তির আদেশ বাতিল, সবাইকে মাঠপর্যায়ে পাঠানোর নির্দেশ পলকের

১৯

সিলেটে ট্রাক-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী নিহত

২০
X