ছেলের ছাগলকাণ্ডে আলোচিত এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তাকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ৮টি ব্যাংক হিসাব ও বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এ সংক্রান্ত একটি চিঠি শেয়ারবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস এবং ব্যাংকগুলোতে পাঠিয়েছে বিএফআইইউ। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ক্ষমতাবলে আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ এ নির্দেশ দিয়েছে।
মো. মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, প্রথম স্ত্রীর মেয়ে ফারজানা রহমান (ইপসিতা) ও ছেলে আহাম্মেদ তৌফিকুর রহমান, দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী, দ্বিতীয় স্ত্রীর মেয়ে ইফতিমা রহমান মাধুরী, দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মুশফিকুর রহমান ইফাত ও ইরফানুর রহমান ইরফানের আটটি ব্যাংক হিসাব ও বিও হিসাব স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে এসব ব্যাংক হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এনবিআরের বড় কর্মকর্তা হলেও ২০০৮ সাল থেকে সক্রিয়ভাবে শেয়ারবাজারে জড়িত ছিলেন মতিউর রহমান। দুভাবে তিনি বাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। সেগুলো হলো- প্লেসমেন্ট বাণিজ্য এবং কারসাজির আগাম তথ্য জেনে দুর্বল কোম্পানির শেয়ার কিনে বেশি দামে বিক্রি করতেন। সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুসারে এ ধরনের কাজ বেআইনি এবং অনৈতিক।
বিশ্লেষকদের মতে, একই সঙ্গে মো. মতিউর রহমান বেশ কয়েকটি অপরাধ করেছেন। প্রথমত, তিনি সরকারি বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। দ্বিতীয়ত, বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন। তৃতীয়ত, তিনি সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন করেছেন। চতুর্থত, তিনি শেয়ার লেনদেন করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ছাগলকাণ্ডের পর মতিউর রহমানকে কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে প্রত্যাহার করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও অপসারণ করা হয়। এ ছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে তদন্ত টিম গঠন করেছে।
মন্তব্য করুন