যাত্রা শুরুর দুই বছরে পদ্মা সেতু থেকে এক হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা টোল আদায় করা হয়েছে। এই সময়ে সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল করেছে এক কোটি ২৭ লাখ।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১১৪তম বোর্ড সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পদ্মা সেতুর দুই বছরপূর্তি উপলক্ষে এ সভার আহ্বান করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর জন্য সুফল ভোগ করছে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় তিন কোটি মানুষ। যান চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ২৭ লাখ যানবাহন পারাপার হয়েছে। মোট টোল আদায় হয়েছে প্রায় এক হাজার ৬৪৮ কোটি টাকারও বেশি। অর্থ বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ঋণ চুক্তি অনুযায়ী ছয় কিস্তিতে অর্থ বিভাগকে ৯৪৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। আগামী ২৭ জুন সপ্তম ও অষ্টম কিস্তি বাবদ ৩১৪ কোটি টাকার চেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে অর্থ বিভাগকে হস্তান্তর করা হবে।
গত বছর ৩ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যান চলাচলে জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ইতোমধ্যে ওঠানামার জন্য মোট ১৬টি র্যাম্প (এয়ারপোর্ট দুটি, কুড়িলে ৩টি, বনানীতে ৪টি, মহাখালীতে ৩টি, বিজয় সরণিতে দুটি, ফার্মগেটে একটি ও এফডিসি গেট সংলগ্ন একটি) যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা আপাতত প্রতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৭৪ দশমিক ৮১ ভাগ।
এ ছাড়া ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট ইমপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি)। প্রকল্পটি হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর হতে শুরু হয়ে ঢাকা-ইপিজেড পর্যন্ত যাবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েটির অ্যালাইনমেন্টের মধ্যে ২১ কিলোমিটারে নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৪৪ ভাগ।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পর দিন সাধারণ যানবাহন চলাচল শুরু করে। গত বছর ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন। অবশ্য যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয় গত বছর ১ নভেম্বর।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ জুন। এর মধ্যে নদী শাসনের কাজ করা চীনা ঠিকাদার চুক্তির বাড়তি এক হাজার কোটি টাকা দাবি করে। এই বাড়তি টাকা দেওয়ার বিষয়টি সেতু বিভাগের বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এ বিষয়ে সরকার ইতিবাচক বলেও বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।
মন্তব্য করুন