নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ও বগুড়ার ধুনটের গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের ছোটদিয়ার গ্রামে দুটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
রোববার (২৩ জুন) মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এক তরুণী পোশাককর্মীকে প্রেমিক শপিং করার প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। বগুড়ার ধুনটের গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের ছোটদিয়ার গ্রামে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ফেরার পথে এক গৃহবধূকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ দুটি ঘটনায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার তরুণী ও অভিযুক্ত আবু হাসান একই গার্মেন্টেসে চাকরি করেন। গত ৩০ মার্চ আবু হাসান ওই তরুণীকে শপিং করে দেওয়ার কথা বলে ফতুল্লার পঞ্চবটি ডেকে নেয়। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা আবু হাসানের দুই বন্ধু শিবলু ও শাকিল ওই তরুণীকে চাষাঢ়ায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে শিবলু ও শাকিল তাকে ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে।
শিবলুর পঞ্চবটির গুলশান রোডের বাসায় নিয়ে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে আবু হাসান, শিবলু ও শাকিল ওই তরুণীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। তারা ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে। তার কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ছাড়া বগুড়ায় গত ২১ জুন (শুক্রবারঘ) গৃহবধূ পারিবারিক কাজে প্রতিবেশীর বাড়িতে যান। নিজের বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা ওই গৃহবধূকে ফাঁকা রাস্তা থেকে তুলে বাঁশ বাগানে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। গৃহবধূর চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নারী ও কন্যারা বিভিন্ন প্রলোভনের শিকার হয়ে ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের মতো নৃশংস সহিংসতার শিকার হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার প্রতিবেশী ও দুর্বৃত্তদের দ্বারাও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাস্তাঘাটে চলাচলের পথে এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলেছে। সংঘটিত এসব ঘটনা নারী ও কন্যাদের যেমন স্বাধীন চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি করছে, তেমনি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে যুক্ত করে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
মন্তব্য করুন