একাত্তরের ৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা জানালেন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’। ৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে সম্মাননা অর্থাৎ জাতীয় পতাকা সংবলিত ক্রেস্ট তুলে দেন তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দেন একটি জাতীয় পতাকা।
শনিবার (৮ জুন) সকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ‘একাত্তরের প্রেরণায় জাগো, জাগাও’- প্রতিপাদ্যে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন আমরা একাত্তর-এর ১ম জাতীয় সম্মেলন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়।
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে হয়ে গেল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তরুণ প্রজন্মের মিলনমেলা। এই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ কেউ অসুস্থ শরীরেও অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন।
৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে রয়েছেন কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, দিল অফরোজ বেগম, সৈয়দ জামান, ম. হামিদ, হারুন অর রশীদ, পরিমল চন্দ্র শীল, মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, অজয় দাশগুপ্ত, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, রোকেয়া কবীর, দীপা ইসলাম, রুনু দাশ, বোরহান উদ্দীন মিঠু, কার্তিক চ্যাটার্জি, মাহফুজা খানম প্রমুখ। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রয়েছেন গবেষক ও ভ্রমণপিয়াসী মহুয়া রউফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামান, এভারেস্ট জয়ী নিশাত মজুমদার, সংস্কৃতি কর্মী পূজা সেনগুপ্ত, শহীদ বুদ্ধিজীবী সন্তান ও সাংবাদিক জাহিদ রেজা নূর, ড. সায়কা হক, আয়রনম্যান ইমতিয়াজ এলাহী, নিশাত জাহেন রহমান, অণুজীব বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা, ভ্রমণকন্যা মানসী সাহা, সাংবাদিক আবু সালেহ রনি, তামান্না প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারপারসন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান। সংগঠকের কার্যক্রম তুলে ধরেন তানজিম সিদ্দিক স্পন্দন ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং সাংবাদিক মাহফুজা জেসমিন।
মৃনালের সঞ্চালনায় একাত্তরের প্রধান সমন্বয়ক হিলাল ফয়েজী বলেছেন, অন্ধকারের শক্তি মাথা উঁচু করে আছে, তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা বাধা দিয়েছিল তাদের চিহ্নিত করে রাষ্ট্র অবশ্যই শাস্তি দিবে। সব অর্জনকে আমরা সাধুবাদ জানাই। নবপ্রজন্মকে বিকাশ করার লক্ষ্যে ‘আমরা একাত্তর’ বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রেখেছে।
মহুয়া রউফ বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি।
জাহিদ রেজা নূর বলেছেন, বাংলাদেশের জেনোসাইডের স্বীকৃতিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ চলছে। জেনোসাইড শুধু গণহত্যা নয়, এর মধ্যে অনেক কিছু রয়েছে।
সেঁজুতি সাহা বলেছেন, এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, এখানে যে কোনো কেউ বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারবে। সেটা ছেলে হোক বা মেয়ে হোক। তিনি নারী হোক বা পুরুষ হোক।
নিশাত মজুমদার বলেছেন, হিমালয় পর্বতমালার জন্য বাংলাদেশের জন্ম। সেই হিমালয় পর্বতমালার আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে বাংলাদেশের কেউ হিমালয় পর্বতে যাবে না, এভারেস্টকে ছোঁবে না তা হয় না। দুর্লভ্যকে লঙ্ঘন করাই আমাদের প্রবৃত্তি। সুতরাং বাংলাদেশ মানে সম্প্রীতি।
মাহফুজা জেসমিন বলেছেন, ২০২২-২৩ থেকে আমরা ১৯৭১ সালের বাংলাদেশে সংগঠিত জেনোসাইডের স্বীকৃতি আদায়ে দেশ-বিদেশে প্রচারাভিযান জোরদার করে তুলছি। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে একাত্তরের বাংলাদেশ জেনোসাইড ইস্যুকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়াসে প্রবাসী দেশবাসিদের মহতি উদ্যোগে সংযুক্ত হই। নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর বাংলাদেশি প্রবাসীদের সম্মেলনে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বৃহত্তম জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে ‘আমরা একাত্তর’ আয়োজন করে এক আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান।
মন্তব্য করুন