সর্বশেষ আবহাওয়ার সতর্কবার্তার তথ্যমতে সাগরের নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বর্তমানে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে আজ শনিবার (২৫ মে) ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’ পরিণত হতে পারে। আর ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ৫ থেকে ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবার মধ্যরাতে (২৪ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যমতে, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. আজিজুর রহমান জানান, রোববার (২৬ মে) রেমাল খুলনা থেকে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝামাঝি স্থানে আঘাত হানতে পারে। অপেক্ষাকৃত বেশি এলাকা ধরে ঘূর্ণিঝড়টির বিস্তৃতি থাকতে পারে। সমুদ্র উপকূলের সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, সামুদ্রিক ঝড়ে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে ‘ঘূর্ণিঝড়’ বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়। আর গতিবেগ যদি ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার হয়, তখন সেটি হয় ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’। আর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ২১৯ কিলোমিটার হলে তখন সেটিকে ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়। গতিবেগ ২২০ কিলোমিটার বা এর বেশি হলে তা হয় ‘সুপার সাইক্লোন’।
এদিকে ভারতী আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় ‘রেমাল’ নাম নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। ওই সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। যে কারণে বলা চলে রেমাল অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই আঘাত হানতে যাচ্ছে।
এদিকে রেমাল যদি অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় সেক্ষেত্রে ৫-১০ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তবে এটি জোয়ার-ভাটার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।
পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শনিবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুর হবে। রোববার থেকে বৃষ্টি আরও বাড়বে, ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে উপকূলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
মন্তব্য করুন