দেলাওয়ার হোসাইন দোলন
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম
আপডেট : ২১ মে ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তামাক কোম্পানির লোভাতুর হাতছানিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

গ্রাফিক্স : কালবেলা
গ্রাফিক্স : কালবেলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইবিএ’র শিক্ষার্থী রায়হান (ছদ্মনাম)। চাকরির পেছনে ছুটে যখন ক্লান্ত, এক সহপাঠীর কাছে শুনলেন, তামাক কোম্পানির মেধা যাচাই পরীক্ষার কথা। যেখানে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিশ্চিত মিলবে চাকরি। ঘুচবে বেকারত্বের অভিশাপ। এ ছাড়াও দলগতভাবে বিজয়ী হলে ব্যবসায়িক উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক তহবিল বা সিড ফান্ডিংও পাওয়া যাবে। যদিও বিষয়টি ছিল নিছক প্রতারণা।

এ শিক্ষার্থী প্রতিবেদককে বলেন, ব্যাটেল অব মাইন্ডস নামে এক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে বলা হয়েছিল- চ্যাম্পিয়ন হলে চাকরি দেওয়া হবে। প্রতিযোগিতায় নিজের অবস্থান জানান দিলেও পড়ালেখা শেষ না হওয়ায় চাকরি পাইনি। সনদপত্র হাতে পেয়ে যোগাযোগ করি। তখন বলে- এখন আর সুযোগ নেই। অথচ প্রতিযোগিতার শুরুতে তারা কখনোই বলে না যে পড়ালেখা শেষ না হলে চাকরি দেওয়া হবে না।

এমন একাধিক প্রতিযোগীর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তারা বলছেন, তামাক কোম্পানিগুলো চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডাকে। প্রতিযোগিতা শেষে কিংবা নির্ধারিত অধিবেশন শেষ করলে পড়াশোনা শেষ না হওয়ার অজুহাতে, চাকরি দেয় না।

অন্যদিকে তামাকবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পণ্যের প্রচার চালাতেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে এসব আয়োজন করা হয়। ব্যাপক আয়োজন থাকলেও প্রতিযোগিতা শেষে প্রতিযোগী বা চ্যাম্পিয়ন দলকে চাকরি দেওয়া হয় না। শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে ব্যাটেল অব মাইন্ডস বা এ ধরনের কর্মসূচিগুলো তামাক কোম্পানির প্রচারে এক ধরনের বড় আয়োজন। এ প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য তরুণদের মাঝে তামাক পণ্যের প্রচার। যেখানে সহযোগী হয়ে কোম্পানির স্বার্থে কাজ করছে নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগ। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) নামে অর্থ নয়ছয় করতেই প্রতিযোগিতার নামে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে থাকে তামাক কোম্পানি।

তথ্য বলছে, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) দুই দশক ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যাটেল অব মাইন্ডস প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে। প্রতিযোগিতায় মূল টার্গেট হচ্ছে মার্কেটিং এবং বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষার্থীদের। তাদের দেখানো হয়-মোটা বেতনে চাকরির প্রলোভন। যদিও বিএটিবির নিজস্ব ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে- বর্তমানে বাংলাদেশে তাদের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন মাত্র ১ হাজার ৫০০ জন। সঙ্গতকারণেই প্রশ্ন আসে গত বিশ বছরে ব্যাটেল অব মাইন্ডস প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে? যাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কয়জন কতসময় ধরে বিএটিবিতে কাজ করেছেন?

অন্যদিকে বিদেশি আরেকটি সিগারেট কোম্পানি জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই) তরুণদের আকৃষ্ট করতে আশ্রয় নিচ্ছে নানা কৌশলের। সরাসরি প্রচারে আইনগত বাধা থাকায় কোম্পানিটি কৌশলে অভিজাত এলাকায় নিয়মিত কনসার্টের আয়োজন করে তরুণদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কালবেলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব কনসার্টে তরুণ-তরুণীদের জড়ো করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে স্মার্টফোন অথবা ট্যাব হাতে সুদর্শন ছেলে-মেয়েরা কাজ করে থাকে। যারা সুকৌশলে আড্ডা দিতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কনসার্টে আমন্ত্রণ জানায়। এ সময় তাদের থেকে সংগ্রহ করা হয় মোবাইল নম্বর। সংগৃহীত মোবাইল নম্বরে পরে এসএমএসের মাধ্যমে কনাসার্টের তারিখ ও স্থান জানিয়ে দেওয়া হয়।

ধানমন্ডি লেকপাড়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীকে দেখা যায়, নিজেদের মধ্যে গল্পে মেতেছেন। এ সময় ট্যাব হাতে এক তরুণকে তাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। কিছু সময় পর এ যুবকের সঙ্গে কথা বলেন কালবেলার প্রতিবেদক। যুবকটি জানালেন যে, তিনি রাজধানীর প্রান্থপথে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এক কনসার্টের জন্য ডেলিগেটদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তিনি। প্রতিটি আমন্ত্রণের জন্য জনপ্রতি টাকা পাবেন। বিস্তারিত জানতে চাইলে- কিছু না বলেই স্থান ত্যাগ করেন তিনি।

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুক ঘুরে দেখা যায় তামাক কোম্পানিগুলো- ‘লাইভস্কয়ার রক নেশন, ‘রকন্যাশন, ‘রক সিটি অ্যান্ড অ্যাম্প, ‘রকটাউন মতো নামে কনসার্টের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে তরুণদের। এসব কনসার্ট স্থলের চারদিকে তামাকের রং লগোসমৃদ্ধ বিজ্ঞাপন দিয়ে সাজানো হয়। বসানো হয় সিগারেট বিক্রির বুথ। যেখানে সুন্দরী তরুণীদের বিক্রয়কর্মী হিসেবে নিয়োজিত রাখা হয়। প্রতি প্যাকেট সিগারেটের সঙ্গে দেওয়া হয় নির্ধারিত লোগো সম্বলিত আকর্ষণীয় রং সদৃশ লাইটারসহ নানা ধরনের উপহার।

চলতি বছরের ২০ এপ্রিল শুক্রবার রাজধানীর বসুন্ধরা ক্রিকেট গ্রাউন্ডে কনসার্টে আসেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম। যে অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক (স্পন্সার) ছিল জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই)। এ কনসার্টকে জেটিআই-এর সিগারেটের লোগো দিয়ে সাজাতে দেখা গেছে। ছিল সিগারেট বিক্রির বুথ। ই সিগারেটের বিজ্ঞাপন। গানের তালে তালে কনসার্টস্থলে তরুণ-তরুণীদের দেখা গেছে ধূমপান করতে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক কালবেলাকে বলেন,

বর্তমানে তামাক কোম্পানিগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তরুণ-তরুণীদের চাকরি দেওয়া হবে এমন চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। নিজেদের পণ্যের প্রচার কৌশল হিসেবে এসব বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তরুণদের তামাক সেবনে আকৃষ্ট করছে তারা। অথচ বর্তমানে তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। যার অন্যতম প্রধান কারণ সিগারেট এবং ই-সিগারেটে আসক্তি। তামাক কিংবা ই-সিগারেটে থাকা নিকোটিন পরবর্তী সময়ে তরুণদের নেশায় আসক্ত করে ফেলে। এভাবে তরুণদের আকৃষ্ট করতে পারলে তামাক কোম্পানিগুলো দীর্ঘমেয়াদি ভোক্তা পেয়ে যায়।

তথ্য বলছে- ২০০৪ সালে মাত্র চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ব্যাটেল অব মাইন্ডস প্রতিযোগিতা শুরু হয়। সর্বশেষ ব্যাটেল অব মাইন্ডস-২০২৩ আয়োজনের চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)-এর দল ‘টিম খিচুরি’। এ বছর ২০তম সংস্করণে দেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ হাজার ৮০০ জন এ প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণ করে।

দুই দশক ধরে চলা ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) ব্যাটেল অব মাইন্ডস প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে জানতে কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে থাকা একাধিক নাম্বারে ফোন করা হলেও কেউ ফোন তোলেননি। পরে প্রতিবেদক ৩০ এপ্রিল পাঁচটি প্রশ্ন সম্বলিত একটি মেইল বিএটিবিতে প্রেরণ করলেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রতিউত্তর পাওয়া যায়নি।

অভিযোগ আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং এবং বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষকরা এ প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে উৎসাহিত করে থাকেন। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) যায় প্রতিবেদক। যদিও ব্যাটেল অব মাইন্ডস নিয়ে প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে কেউই রাজি হননি । এ বিষয়ে জানতে শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)-এর অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুল মজিদকে তিন দিনের চেষ্টায় একাধিকবার ফোন করা হলে ফোন তোলেননি তিনি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও উত্তর দেননি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে কর্মসংস্থানের অভাবকে পুঁজি করে তরুণরাও এমন কর্মসূচিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। অসুস্থ এসব প্রতিযোগিতায় হাজার হাজার প্রতিযোগী অংশ নিলেও স্থায়ীভাবে চাকরির সুযোগ পায় হাতে গোনা ২-১ জন। অন্যদিকে সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তরুণদের অন্তর্ভুক্ত করে তামাকের ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে তামাক কোম্পানিগুলো।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, তামাক কোম্পানিগুলো নানা প্রতিযোগিতার নামে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজেদের পণ্যের মোড়ক (তামাক পণ্য) সদৃশ্য বিজ্ঞাপন বুথ ও হেল্পডেক্স তৈরি করে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়। যা পূরণ করতে হলে থাকতে হয় কোম্পানির তামাক পণ্য বিষয়ে ধারণা। শর্ত থাকে নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই আবেদন করতে পারবে। এ পুরো প্রক্রিয়ায় আয়োজকদের একটি বড় অংশ থাকে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী। যারা মূলত তামাক কোম্পানির অ্যাম্বাসাডর হিসেবে কাজ করে থাকে। মূলত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণ-তরুণীদের তামাকের প্রচারের জন্য পার্টটাইম কাজে লাগানো হচ্ছে। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে কোম্পানির প্রতিনিধিরা প্রচারের অংশ হিসেবে কুইজ, বেলুন ফোটানো, বিনামূল্যে টি-শার্ট, লাইটার, ব্যাগ, মানিব্যাগ, ব্যাচলাইট, ফ্রি সিগারেট বিতরণের মতো আইনবহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী ও প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হেলাল আহমেদ কালবেলাকে বলেন,

আইন লঙ্গন করে কোম্পানিগুলো নানা আয়োজন করে আসছে। ব্যাটেল অব মাইন্ডসের মতো আয়োজনের ক্ষেত্রে শুরুতে হাঁকডাক দিয়ে করলেও এখন অনেকটা গোপনে আয়োজন করে থাকে। এসব আয়োজনে তরুণ শিক্ষার্থীরা তামাকের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। ফলে সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা সাংঘাতিকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, চাকরি কিংবা ব্যবসায়িক উদ্যোগ প্রাথমিক তহবিল বা সিড ফান্ডিং দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে বিএটিবি। যা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অংশ। এসব আয়োজনের মাধ্যমে তারা সিএসআর এর অর্থ নয়ছয় করার সুযোগ পায়। শিক্ষার্থীদের অনেকেই প্রথমবারের মতো এমন আয়োজনে গিয়ে তামাকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।

ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান কালবেলাকে বলেন, তামাক কোম্পানিতে সরকারের সামান্য পরিমান শেয়ারের সুযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের নানাভাবে বিভ্রান্ত করছে। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার জরুরি। তরুণদের সুরক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঘিরে তামাক কোম্পানির এ ধরনের কর্মসূচি আইনের লঙ্ঘন। দীর্ঘদিন ধরে আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনকারী কোম্পানিগুলোকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক্ষেত্রে মনিটরিং জোড়ালো করা প্রয়োজন।

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান কালবেলাকে বলেন,

তামাক কোম্পানিগুলোর সহযোগিতায় যেসব কনসার্ট এবং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে, আইন অনুযায়ী তারা এসব করতে পারে না। এক্ষেত্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি এমন আয়োজনে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি। পরে খুঁদে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি তিনি। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (যুগ্ম সচিব) মো. আখতারউজ-জামানের অফিস নাম্বারে ফোন করা হলে তিনি সব প্রশ্ন শুনে জানান, মিটিং আছে। পরবর্তীতে এ প্রসঙ্গে কথা বলবেন। যদিও পরে তাকে আর পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মীদের দাবির মুখে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাটল অব মাইন্ড কর্মসূচি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। সে বছরেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন এ প্রতিযোগিতার গ্রান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনি তা বর্জন করেন। এ ছাড়াও প্রতিবাদের মুখে একাধিকবার এ আয়োজন বন্ধ করতে বাধ্য হয় বিএটিবি। অন্যদিকে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণরূপে তামাক নির্মূল করতে চায় সরকার। যদিও তামাক কোম্পানিগুলোর এমন হস্তক্ষেপ বন্ধ না করা হয় এবং তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১৯ সেপ্টেম্বর : নামাজের সময়সূচি

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রুরা ওত পেতে আছে

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ গ্রেপ্তার

‘গণহত্যায় উসকানিদাতা কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিকদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে’

জাবিতে গণধোলাইয়ের শিকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু ঘিরে রহস্য

বৈদেশিক ঋণ আবার ছাড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক পেলেন নৌবাহিনীর ২শ’ সদস্য

সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

জাহাঙ্গীরনগরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি, হাসপাতালে মৃত্যু

১০

ডিপিডিসি কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতির নতুন কমিটি

১১

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়ে আলী রীয়াজের ফেসবুক স্ট্যাটাস

১২

আলজাজিরার অনুসন্ধান / যুক্তরাজ্যে ৩৬০টি বাড়ি কিনেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী

১৩

রূপপুর পারমাণবিকের প্রথম ইউনিটে ডামি ফুয়েল লোডিং শুরু

১৪

মহেশখালী থেকে অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছে নৌবাহিনী

১৫

নকল সোনার মূর্তি দিয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২

১৬

কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় প্রবাসী যুবক নিহত

১৭

ভুল সংশোধনী ও দুঃখ প্রকাশ

১৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে যানজট নিরসনে পুলিশের অভিযান

১৯

মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হেরে গেলেন গৃহবধূ শারমিন

২০
X