সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়াকে ডেসটিনি-২০০০ এর পরিচালনা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান করার আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এর আগের চেয়ারম্যান ফখরুদ্দিন আহমেদের (এফসিএ) পদত্যাগের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর একক কোম্পানি বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ মে) ডেসটিনির পরিচালনা বোর্ডের আইনজীবী ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ডেসটিনির পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান থেকে ফখরুদ্দিন আহমেদ (এফসিএ) পদত্যাগ করায় বোর্ডের সদস্যদের মতামত নিয়ে ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়াকে চেয়ারম্যান হিসেবে অনুমোদন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ফখরুদ্দিন আহমেদের পদত্যাগপত্র মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে ২০১২ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত এজিএম করার জন্য ডেসটিনির পরিচালনা পর্ষদের ১৬ জন অংশীদার আদালতে আবেদন করেছিলেন। হাইকোর্টে আবেদনকারীরা হলেন- ডেসটিনির পরিচালক বিপ্লব বিকাশ শীল, মোহম্মদ জাকির হোসেন, মো. শাহিনুর হাওলাদার শাহীন, সাইফুল আলম রতন, জিএম গোলাম রাব্বানী, শামনুন এহসান শামীম, মাসুদা ইসমত আরা, জাহাঙ্গীর আলম, মহিউদ্দিন আহমেদ, জহিরুল ইসলাম, খায়রুন নেসা, সৈয়দ মোহাম্মদ ইকবাল, শাহজাদা আল মাহমুদ, হোসাইন আজাদ, কামরুল হাসান ও মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তাদের আবেদনের ভিত্তিতে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতের সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের পরিচালনা বোর্ড পুনর্গঠন করে দেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এই বোর্ডকে কম্পানিটির বার্ষিক সাধারণসভা করার অনুমতি দেওয়া হয়। বোর্ডে আগের ৯ জনকে রেখে ১৭ সদস্যের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে পুনর্গঠিত পরিচালনা পরিষদে চেয়ারম্যান ছাড়া নতুন সদস্য রাখতে বলা হয়, সাবেক জেলা জজ হাসান শহীদ ফেরদৌস, আইনজীবী মারগুব কবির, ফখরুদ্দিন আহমেদ এফসিএ ও ব্যবসায়ী ইকবাল জামানকে।
গত বছরের ১৪ জুন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ব্যারিস্টার মারগুব কবির। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তারা হাইকোর্টে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরে গত বছরের ২৫ জুলাই ডেসটিনি-২০০০ এর পরিচালনা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান হন ফখরুদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি ফখরুদ্দিন আহমেদও পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগ পত্র গ্রহণের জন্য এবং নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের জন্য ডেসটিনির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। হাইকোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিবন্ধন পাওয়া ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের মোট অংশীদার ৪৯ জন। দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড ২০১২ সাল থেকে কার্যত বন্ধ। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রায় এক হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় অভিযুক্ত ৪৬ আসামির সবাই দোষী উল্লেখ করে গত ১২ মে রায় দেন ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম। রায়ে ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনসহ ৪৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং তাদের দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করেন বিচারিক আদালত।
মন্তব্য করুন