বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন করে আস্থা তৈরি করতেই বাংলাদেশ সফরে এসেছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে আস্থার জায়গা পুনর্নির্মাণ করতে চাই। একই সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চাই। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে চাই।
বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডোনাল্ড লু।
ডোনাল্ড লু বলেন, আমাদের লোকজনের মধ্যে বিশ্বাস পুনর্নির্মাণের জন্য আমি গত দুইদিন ধরে বাংলাদেশ সফর করছি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশনের কথা বলেছিলাম। যে চাওয়াটা ছিল দুই দেশেরই। কিন্তু তখন এক ধরনের টেনশন তৈরি হয়েছিল। এখন আমরা সামনে এগোতে চাই, পেছনের দিকে নয়।
মার্কিন এই প্রতিনিধি বলেন, আমাদের সম্পর্ককে মজবুত করার জন্য উপায় বের করতে চাই। এজন্য আজ আমি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের দুই দেশের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আছে। যেমন র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রম আইনের সংস্কার, মানবাধিকার এবং ব্যবসায়ীক পরিবেশ সংস্কার। অস্বস্তিকর বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে আমরা ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে সহযোগিতা বাড়াতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা নতুন বিনিয়োগের কথা বলেছি। অধিক সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করবে, এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। ক্লিন এনার্জি নিয়ে কথা বলেছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কীভাবে একসঙ্গে লড়াই করতে পারি, মন্ত্রীর সঙ্গে সে বিষয়ে আমি আলাপ করেছি। আমরা সেটা করতে পারি সরকারের স্বচ্ছতা, সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার মাধ্যমে। আমরা করসীমা বাড়ানোর কথা বলেছি, যাতে বাংলাদেশ সেখান থেকে উপকৃত হতে পারে।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। তৈরি পোশাকখাতে জিএসপি সুবিধা তারা ফিরিয়ে দিতে চায়। এজন্য শ্রমআইন সংশোধন করতে বলেছে তারা। শুল্ক ফাঁকি দিতে না পারে এজন্য সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধু খুনী রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে বিচার বিভাগকে বলবে বলে জানিয়েছে।
তিনি বলেন, র্যাবের কয়েকজন ব্যক্তিবিশেষের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার প্রক্রিয়া অনেক লম্বা এ নিয়ে সম্পর্কে কোনো প্রভাব পরবে না।
এর আগে দুপুরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
এ ছাড়াও সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গেও বৈঠক করেন লু। বৈঠক শেষে পরিবেশমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সামনের দিকে সম্পর্ককে কীভাবে আরও সুদৃঢ় করব সেটা নিয়ে ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও সেটার অভিঘাত মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও আমেরিকা আরও কীভাবে কাজ করতে পারে তা নিয়ে আলাপ করেছি।
মন্তব্য করুন