তীব্র তাপপ্রবাহে শেষ হয়েছে এপ্রিল। এ সময় এক পশলা বৃষ্টির জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করেছেন দেশবাসী। যার যার ধর্মমত, বিশ্বাস ও সংস্কৃতি অনুসারে অনেকেই করেছেন উপাসনা, আচার-অনুষ্ঠান পালন। তবে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মেলেনি। সদ্য শুরু হওয়া মে মাসেও তাপপ্রবাহের ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। যদিও তাপপ্রবাহের পাশাপাশি বজ্র ও শিলাবৃষ্টির সঙ্গে তীব্র কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রয়েছে ঘূর্ণিঝড়েরও আশঙ্কা।
বৃহস্পতিবার (২ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত একমাস মেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়।
পূর্বাভাসে বলা হয়, মে মাসজুড়ে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। তবে এ মাসে দেশে তিন থেকে পাঁচ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ধরনের কালবৈশাখী ঝড় এবং দুই থেকে তিন দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।
একইসঙ্গে মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে যার মধ্যে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
তবে ঝড়বৃষ্টি হলেও মাসজুড়ে দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে তিনটি মৃদু (৩৬-৩৮°সে.) বা মাঝারি (৩৮-৪০°সে.) এবং এক থেকে দুটি তীব্র (৪২°সে.) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে।
এ ছাড়া দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চালের নদীগুলোর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কতিপয় স্থানে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে।
এদিকে, মাসের শুরুতেই উজানসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যার সতর্কতা জারি করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি)। এ সময় বন্যা মোকাবিলায় কিছু সুপারিশও করেছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর পরিচালিত এফএফডব্লিউসি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছে।
সতর্কতা সংকেতে বলা হয়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোর নদীগুলোতে পানির স্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা বেশ কয়েকটি অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি তৈরি করছে। নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও মৌলভীবাজারসহ ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোর নদীর তীরে পানি ওঠায় দ্রুতই প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে এসব এলাকার বাসিন্দাদের তাৎক্ষণিক সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং সম্ভাব্য সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন