জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসন ও মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে সবচেয়ে ফলপ্রসূ প্রক্রিয়া প্রত্যাবাসন। দ্রুত নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ জোর দিয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো উচিত। সময়ের সঙ্গে বহুমাত্রিক সংকট তীব্র হচ্ছে এবং মানবিক অবস্থার অবনতি ঘটেই চলছে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ফর্টিফাই রাইটসের পরিচালক জন কুইনলি কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।
আলাপকালে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, রোহিঙ্গারা বর্বরোচিত আক্রমণ, সহিংসতা ও গণহত্যার শিকার হয়ে নিজেদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে। বৃহৎ পরিসরে হত্যা, যৌন নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়ছে তারা। সহিংসতার ব্যাপক শারীরিক ও মানসিক প্রভাব এখনো রয়েছে। তাদের অধিকার সুরক্ষা করে ফিরিয়ে দেওয়াই আমাদের কাজ।
সাক্ষাৎকালে জন কুইনলি ‘মাই টিয়ারস কুড মেক এ সি’– ‘দ্য ইনফ্লিকশন অব মেন্টাল হার্মস এস জেনোসাইড এগেইনস্ট রোহিঙ্গা’ শীর্ষক একটি প্রকাশনা উপহার দেন এবং সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতার জন্য কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রকাশনাটিতে সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শারীরিক ও মানসিক প্রভাব এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ রয়েছে। প্রকাশনাটি মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস এবং ইয়েল ল’কলেজের ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটিস ক্লিনিক যৌথভাবে প্রকাশ করেছে। বইটিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুপারিশ রয়েছে এবং রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষণা এবং তথ্য সংগ্রহে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বইটি।
কমিশনের চেয়ারম্যান আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশ সরকার মানবিক বিবেচনায় দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা সংকটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকাকে ইতিবাচকভাবে দেখে থাকে। তবে রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা ও বাহ্যিক সুযোগ-সুবিধা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য একার পক্ষে রোহিঙ্গাদের সার্বিক বিষয় দেখভাল করা অনেকটাই গুরুভার।
মন্তব্য করুন