সিআইপিআরবির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. একেএম ফজলুর রহমান বলেছেন, রোড ক্র্যাশবিষয়ক তথ্য শুধু একটি ডেটা নয়, এর সঙ্গে একটি পরিবারের স্বপ্ন, একটি জাতির ভবিষ্যৎ জড়িত। তাই আন্তরিকতা ও মানবিকতার সঙ্গে এই সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও সংরক্ষণ করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যের মানহীনতা ও উপযুক্ত সমন্বয়ের অভাব। তাই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য ও কর্ম-পরিকল্পনার মধ্যে ফলপ্রসূ সমন্বয় জরুরি।
সিআইপিআরবি আয়োজনে সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের রোড ক্র্যাশ তথ্য ব্যবস্থাপনা’- শীর্ষক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সহযোগী প্রতিষ্ঠান ছিল গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মাহজারুল হকের সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশ পুলিশ ডেটা কালেকশন প্রসেস অ্যান্ড সিসট্রেমস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অতিরিক্ত সুপারিন্টেডেন্ট মো. মাহমুদ হাসান।
‘প্ল্যান ফর ইমপ্রুফিং রোড ট্রাফিক ইনজুরি ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিসটেম ইন বাংলাদেশ রোল অব ডিরেক্টোরেট’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কনট্রোল ইউনিটের প্রোগাম ম্যানেজার ড. অসীম চক্রবর্তী। ‘ট্রাফিক অ্যাক্সিডেন্ট রিপোর্ট’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাইকা বিশেষজ্ঞ মো. মাহমুদুর। ‘রোড সেফটি রিপোর্টিং : চ্যালেঞ্জ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিআইপিআরবির পরিচালক সেলিম মাহমুদ।
এ ছাড়া বক্তব্য দেন ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশনের সিনিয়র রোড সেফটি স্পেশালিস্ট ইঞ্জিনিয়ার মামুনুর রশিদ, নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, ডিআরআর-এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন, জাইকা, ভাইটাল স্ট্র্র্যাটেজি এবং জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিটের কর্মকর্তারা।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. মাহজারুল হক বলেন, সমন্বয়ের মাধ্যমে রোড ক্র্যাশ প্রতিরোধ আন্দোলনকে আরও জোরদার করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। সড়ককে জনগণের জন্য নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি-২০২৩’ অনুযায়ী রোড ক্র্যাশে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ১০ লাখের অধিক মানুষ মারা যায়। যা প্রতি মিনিটে ২ জন ও প্রতিদিন ৩ হাজার ২০০ জনের বেশি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, রোড ক্র্যাশ ৫-২৯ বছর বয়সী শিশু এবং যুবকদের মৃত্যুর প্রধান কারণ এবং সকল বয়সী মানুষের মৃত্যুর ১২তম কারণ। রোড ক্র্যাশে সারা বিশ্বের যত মানুষের মৃত্যু হয় তার প্রায় সবই (৯২ শতাংশ) হয় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। বাংলাদেশে মানুষের মৃত্যু এবং ইনজুরির অন্যতম প্রধান কারণ রোড ক্র্যাশ।
মো. মাহমুদ হাসান বলেন, ২০১৮ সাল থেকে সড়ক ক্র্যাশে ডেটা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। এখনো চলমান।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রতিনিধি বলেন, রোড ক্র্যাশ বিষয়ে ডিএমপি বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার। মানসম্মত ও সঠিক তথ্য দিয়ে জাতীয় ডেটাবেজ তৈরি করতে ডিএমপি সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এক্ষেত্রে ডিএমপি'র দক্ষতা বাড়াতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
ডিআরআর এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, জরুরি অবস্থায় রোড ক্র্যাশজনিত ইনজুরির ধরন ও ব্যাপ্তি সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, রোড সেফটি আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ইনজুরির মাত্রা কমিয়ে সড়কে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবদান রাখবে।
মন্তব্য করুন