আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে কতদিন ছুটি মিলবে তা নিয়ে চলছে অনেক হিসাব-নিকাশ। কেউ কেউ বলছেন ২০২৪ সালে এবারের ঈদে পাঁচ দিন ছুটি মিলবে।
আবার কেউ বলছেন ঈদে ছুটি মিলবে ছয় দিন। তবে এটা নিশ্চিত হতে অপেক্ষা করতে হবে রোজার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। তবে, সরকারি চাকরিজীবীরা আপাতত নিশ্চিত, তারা এবারের ঈদে টানা পাঁচ দিন ছুটি পাচ্ছেন।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি ছুটি (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে) আছে আগামী ১০ থেকে ১২ এপ্রিল। সেখানে এই ছুটি আরও এক দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। তবে তা নাকচ করে দেওয়া হয়।
মন্ত্রিসভা জানায়, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ঈদের ছুটি আরও এক দিন বাড়ানোর যে আবেদন করেছিল তা গ্রহণ করা হয়নি। অর্থাৎ ৯ এপ্রিল ঈদের অতিরিক্ত ছুটি পাচ্ছে না সরকারি চাকরিজীবীরা।
এ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী ও সরকারের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ৯ এপ্রিল সরকারি ছুটি থাকছে না। আমরা আইনশৃঙ্খলা কমিটির পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব করেছিলাম তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন করা হয়নি।
সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটি নিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
এবারের ঈদে ঐচ্ছিক ছুটির একটা ব্যবস্থা আছে। নিয়মানুযায়ী সেই ছুটি নেওয়া যাবে। আগামী ৮ ও ৯ এপ্রিল সরকারি অফিস খোলা থাকবে। তবে কেউ চাইলে এই দুদিন ঐচ্ছিক ছুটি নিতে পারেবেন।
তিনি বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এবার রমজান ৩০ দিন হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এ জন্য ১১ এপ্রিলকে ঈদুল ফিতরের দিন ঠিক করে ছুটির তালিকা করেছে সরকার।
অনেক বছর ধরে চলে আসা রীতি অনুযায়ী, ২৯ রমজান থেকে ঈদের তিন দিনের ছুটি শুরু হয় (ঈদের আগে-পরে দুদিন)। তবে রোজা ৩০টি হলে আরও এক দিনের ছুটি স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।
কিন্তু ২০২৪ সালের মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদিত সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ঈদে সরকারি ছুটি থাকছে ১০-১২ এপ্রিল।
এ বছর রমজান মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হবে ধরে এ ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে ২৯ রমজানে (৯ এপ্রিল) সরকারি অফিস খোলা থাকছে। কোনো কারণে ২৯ দিনে রমজান মাস পূর্ণ হলেও এদিন অফিস চলবে।
এর আগে ঈদযাত্রায় মানুষের ‘দুর্ভোগ কমাতে’ ৮ ও ৯ এপ্রিল ছুটি বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির ভাষ্য, এবার রোজার ঈদ ঘিরে রাজধানী ও আশপাশের জেলা থেকে গ্রামে ফিরবে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ।
ঈদের আগে-পরে সাপ্তাহিক ও উৎসবকেন্দ্রিক ছুটির কারণে এবার বেশি মানুষ ঘরমুখো হবে। সে কারণে ঈদের আগে সরকারি ছুটি দুদিন বাড়ালে লম্বা ছুটিতে মানুষ ধীরে-সুস্থে গ্রামে যেতে পারবে। এতে ‘দুর্ঘটনার সঙ্গে ভোগান্তিও’ কমবে।
উল্লেখ্য, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রোজা ২৯টি হলে আগামী ১০ এপ্রিল এবং রোজা ৩০টি হলে ১১ এপ্রিল সারা দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। তবে সরকার রমজান ৩০ দিন ও ঈদুল ফিতর ১১ এপ্রিল হচ্ছে ধরে আগামী ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিল (বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার) ঈদের ছুটি নির্ধারণ করে রেখেছে। এরপর ১৩ এপ্রিল (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১৪ এপ্রিল (রোববার) নববর্ষের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
ঈদের আগে ৭ এপ্রিল (রোববার) শবে কদরের ছুটি রয়েছে। শবে কদরের ছুটির পর ৮ ও ৯ এপ্রিল (সোম ও মঙ্গলবার) দুদিন অফিস খোলা থাকবে। ১১ এপ্রিল ঈদ হলে বাড়ি যেতে মাত্র একদিন (১০ এপ্রিল) সময় পাওয়া যাবে।
কারণ, শবে কদরের আগের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি।
মন্তব্য করুন