কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বন বিটের কর্মকর্তা সাজাদুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যায় জড়িতদের অতিসত্বর আইনের আওয়ায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজ।
রোববার (৩১ মার্চ) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রধান বন সংরক্ষক বরাবর পাঠায় নেতৃবৃন্দ।
চিঠিতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন, দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বন বিটের কর্মকর্তা সাজাদুজ্জামানের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, প্রয়াত সাজাদুজ্জামান শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতাভুক্ত রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় বনের জমি রক্ষা করতে গিয়ে ভূমি দস্যুদের নির্মমতার শিকার হন। উখিয়া রেঞ্জের হরিণমারা অংশ থেকে পাহাড় কেটে বালু সরবরাহ করার সময় একটি মিনি ট্রাক (ডাম্পার) সাজাদুজ্জামানকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। এ ঘটনায় আহত হন আরও এক বন কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সাজাদুজ্জামানের অপহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ও তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে ২০২০ সালের ৭ আগস্ট মো. ইউসুফ উদ্দীন নামে মহেশখালী বন রেঞ্জ কর্মকর্তা পাহাড় ও বনখেকোর হাতে অপহত্যার শিকার হয়েছিল। সে ঘটনারও সঠিক ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। পাহাড় ও বন খেকোদের দমন করতে না পারার ব্যর্থতা এসব অপরাধীকে আরও বেপরোয়া করে তুলেছে। যারই ধারাবাহিকতায় মো. ইউসুফের পর সাজাদুজ্জামানকে আবারও অপহত্যার শিকার হতে হলো।
নেতৃবৃন্দ নির্মম এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
একইসঙ্গে তারা প্রয়াত মো. ইউসুফ ও সাজাদুজ্জামানের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং আহত বন কর্মকর্তার চিকিৎসা দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।
সেইসঙ্গে বনভূমি সুরক্ষায় ভূমিদস্যুদের বাড়তি ঝুঁকিতে থাকা কর্মীদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানানোসহ দেশের বনভূমি রক্ষায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
চিঠিতে সই করেছেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল, নিজেরা করি এর সমন্বয়কারী খুশী কবির, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এর নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ও স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞানবিভাগ ও ডিন, বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
মন্তব্য করুন