রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টেুরেন্টে কাচ্চি খেতে এসে প্রাণ গেলো মা পপি রায়সহ মেয়ে আদিতা রায় (১২) এবং ছেলে সান রায় (৮)।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ নিহত তিনজনের স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে। এসময় মৃত পপি রায়ের স্বজনরা জানান, দুই সন্তানকে নিয়ে রেস্টুরেন্টটিতে কাচ্চি খেতে গিয়েছিলেন পপি রায়। ভবনে লাগা আগুনে পুড়ে পপিসহ তার দুই সন্তান মারা গেছে। এখন তারা মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে মূর্ছা যাচ্ছেন আর আহাজারি করছিলেন নিহত পপি রায়ের মা বাসনা রানি। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেলো। আর কিছুই বাকি থাকলো না। কী এমন পাপ করছিলাম যে সৃষ্টিকর্তা আমারে এই শাস্তি দিলো।
নিহত পপি পরিবারসহ রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকায় বসবাস করতেন বলে জানান তার স্বজনরা।
এদিকে, রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনে আগুনের ঘটনায় অন্তত ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্তলাল সেন ৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য জানান। আর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল ফারুক সাংবাদিকদের জানান, এই অগ্নিকাণ্ডে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আরও একজন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সংবাদ পেয়ে আমি দ্রুত চলে এসেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দ্রুত আসতে বললেন। এখানে এসে যা দেখলাম তা ভয়াবহ অবস্থা। বার্ণ ইন্সটিটিউটে এখন পর্যন্ত ১০ জন মারা গেছেন। অপর দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন মারা গেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, যারা এখন পর্যন্ত বেঁচে আছেন। তাদের বেশির ভাগের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখ জনক। যারা বেঁচে আছে তাদের বাঁচি রাখার চেষ্টা। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বার্ণ ইউনিটে ভর্তি আছেন। বাইরে কেউ আছে কি না এখনো তথ্য পাওয়া যায় নি। ঢামেক ১৪ জন ও বার্ণে আহতের সংখ্যা ৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে গুরুত্ব আছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সবাইকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয় ৪২ জনকে। তাদের মধ্যে চার শিশু ও ২১ নারী ছিলেন। বাকিরা পুরুষ। এ ছাড়া জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই ভবনটি সাত তলা। উপরের তলাগুলোতেও রেস্তোরাঁ এবং তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পর তা উপরের তলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত লোকজন উপরের দিকে উঠে যায়। এ সময় ভবন থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা
মন্তব্য করুন