সংসদসহ সকল সরকারি অনুষ্ঠানের সূচনায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পূর্বেকার মতো সকল ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারপ্রধান ও স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) পল্টন টাওয়ারস্থ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। সংগঠনের অন্যতম সভাপতি ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক এতে সভাপতিত্ব করেন।
সভায় বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন রঞ্জন কর্মকার।
সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, গত নির্বাচনে সরকারবিরোধী দলসমূহ নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচনের পূর্বাপর সহিংসতা ‘ব্যাপক’ হয়নি ঠিক, তবে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুরা দেশের বিভিন্ন স্থানে এখনো হামলার শিকার হচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রায় সবাই সরকারি দলের নেতা ছিলেন; তবে পৃথক প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। প্রাথীদের একাংশ নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার এবং ভোট দেওয়া ও না দেওয়ার উছিলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করছেন।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘এবারের পার্লামেন্টে রাজাকার বা স্বাধীনতাবিরোধীরা না থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামাবলি গায়ে দিয়ে ধর্মাশ্রয়ী ও সাম্প্রদায়িকতাপুষ্ট সংসদ সদস্যরা রয়েছেন, যা গভীর উদ্বেগজনক।’
সভায় নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এ মর্মে অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে, কালো টাকা, পেশিশক্তি ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক প্রচারের কারণে ভবিষ্যতে বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদে সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারিত্ব সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে সংসদে সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুক্ত নির্বাচনের ভিত্তিতে পার্লামেন্টে ৬০টি আসন সংরক্ষণের দাবি জোরালোভাবে উত্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় সরকারি দলের এবারকার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় এবং একই সাথে আলোচনা ও আন্দোলনের ভিত্তিতে সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণে ধর্মীয় বৈষম্যবিরোধী মানবাধিকারের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
সভায় সরস্বতী পূজার পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে এ তারিখ পরিবর্তনে জোর দাবি জানানো হয়। অন্যথায় এ ব্যাপারে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত বক্তব্য উত্থাপনের পর এ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, নির্মল রোজারিও, কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, মিলন কান্তি দত্ত, বাবু মার্কোস গোমেজ, অ্যাড. হীরেন্দ্রনাথ সমাজদার, অ্যাড. বিভাষ বিশ্বাস, অ্যাড. প্রিয় রঞ্জন দত্ত, অ্যাড. অজয় চক্রবর্তী, মনীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, অ্যাড. তাপস কুমার পাল, অ্যাড. কিশোর রঞ্জন মণ্ডল, রমেন মণ্ডল, পদ্মাবতী দেবী, রবীন্দ্র নাথ বসু, অ্যাড. বিনয় ঘোষ বিটু, মানিক ঘোষ, ব্যারিস্টার তাপস বল, দিপালী চক্রবর্তী, শিপন বাড়াইক প্রমুখ।