ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আবারও সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। এমন নিপীড়ন ঠেকাতে সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ‘নির্বাচন, সহিংসতা ও মানবাধিকার : উত্তরণের পথ’- শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
শাহরিয়ার কবির বলেন, এই নির্বাচনে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে সংখ্যালঘুবিরোধী, হিন্দুবিরোধী, যারা দুর্নীতি করছেন, নানাভাবে লুটতরাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তারা সহিংসতা করেছেন। এদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও কমিশন গঠন করা ছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব না। আওয়ামী লীগের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপরে হামলা-নিপীড়ন হয়েছে। কিন্তু এর থেকে ভয়াবহভাবে বিএনপি-জামায়াতের আমলে হামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে সংখ্যালঘুরা নির্মম হামলার শিকার হয়েছে। আ.লীগ পাঠ্যপুস্তকে অসাম্প্রদায়িক লেখকদের লেখা বাদ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ মন্দের ভালো। এবারের নির্বাচনে প্রশাসন সতর্ক ছিল তারপরও সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা হয়েছে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বলেন, আমরা একটা সহিংস সমাজের মধ্যে বসবাস করছি। প্রতিটি মানুষ আজকে সহিংসতার শিকার। যার শক্তি কম, তার প্রতিবাদও কম। সে জন্যই তাদের ওপর অত্যাচার অনেক বেশি হয়। কারণ অত্যাচারী জানে, এখানে সহিংসতা করলে সে পার পেয়ে যাবে। তাইতো সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার বেশি হয়।
সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ডক্টর নিজাম ভূইয়া। তিনি বলেন, একটা সময় ছিল যখন আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও পরস্পরের পাশে দাঁড়াতাম কিন্তু আমার দেখা চট্টগ্রামের একটা নির্বাচনে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ভোটের দিন সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট দিতে দেয়নি। এ সংস্কৃতির পরিবর্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া সম্ভব নয়। সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত অভিযোগ করে বলেন, যারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তারা অনেকে ক্ষমতাশীল দলের লোক। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা আইন ও কমিশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতিদ্রুত গঠন করবেন বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিকের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার। এ সময় আরও বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী (মানিক), বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ, নির্বাচনী সহিংসতা শিকার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিকসহ অন্যরা।
মন্তব্য করুন