শিক্ষা কারিকুলাম-২০২১ এর মাধ্যমে মুসলমান সন্তানদের ইসলামী শিক্ষা ভুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল আবদুস সবুর।
চরমোনাই পীর বলেন, বর্তমান সরকারের সাথে বাংলাদেশের সিংহভাগ জনগণ নেই। ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনে জনগণ সরকারকে লালকার্ড দেখিয়েছে। শিক্ষা কারিকুলামে ইসলামী শিক্ষা না থাকলে আমরা জান দিয়ে তা প্রতিরোধ করব। এই শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে দেশ ও সমাজ গঠন করা তো দূরের কথা পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস হবে। এতে শান্তি আসবে না। এই শিক্ষা কারিকুলাম শিক্ষক ও অভিভাবকরা মানে না ও প্রত্যাখ্যান করে।
ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানী বলেন, সরকার রাজনীতি ও ক্ষমতার জন্য ইসলামের কথা বলে। এই পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ বসে থাকবে না। সেক্যুলারিজম বিশ্বাস করলে মুসলমান থাকতে পারে না।
দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, বর্তমান কারিকুলাম দেখে মনে হয় তারা মানুষকে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট বানাতে চায়।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. ইয়াকুব হোসেন বলেন, ২০১৯ পর্যন্ত শিক্ষানীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা তা দেইনি। তিনি চরমোনাই পীরের উদ্দেশে বলেন, আজকেই আন্দোলনের খসড়া কর্মসূচি দিন। আমি ৩৭টি শিক্ষা কমিশন পড়েছি কিন্তু আলোর মুখ দেখেছে ২০১০ এ। সাধারণ ও মাদরাসা শিক্ষকদের সমন্বয়ে শিক্ষা কমিশন ও শক্তিশালী কারিকুলাম কমিটি করে দিন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দীন খান। আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস, ড. আরিফুল ইসলাম, কলামিস্ট মুসা আল হাফিজ, ড. সরোয়ার হোসেন, আসিফ মাহতাব, সাংবাদিক নেতা মুন্সী আবদুল মান্নান, ড. হাফেজ মাবরুক বিল্লাহ, মাহমুদুল হাসান রায়হান, ড. শহীদুল হক, ড. মোস্তফা মনজু, আহমদ আবদুল কাইয়ুম, আবুল কাশেম, এবিএম জাকারিয়া, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনে সভাপতি নুরুল বশর আজিজী, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কাউন্সিল সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম-২০২১ বাতিলের দাবিতে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের উদ্যোগে ২৫ জানুয়ারি জেলা ও মহানগরে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন