দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বক্তব্যের সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিজ্ঞজনরা বলছেন- বিএনপিসহ যারা নির্বাচন বর্জন করেছে, প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এখনও প্রয়াস চালাচ্ছে তাদের মুখে অস্ত্র তুলে দেওয়ার জন্যই টিআইবি এমন প্রতিবেদন দিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী সাহেব প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে যে কথাগুলো বলেন সেগুলোকে একটু পরিশীলিতভাবে টিআইবি পরিবেশন করেছে। বিএনপি আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে সে কারণে টিআইবি’র এই রিপোর্ট আসলে কারও পক্ষের হয়ে দেওয়া কি না সেই প্রশ্ন রেখেছে অনেকে।
মন্ত্রী বলেন, টিআইবি’র একটি রিপোর্ট গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। টিআইবি সবসময় গবেষণালব্ধ রিপোর্ট বলে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে টিআইবি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো গবেষণা না করে কিছু ‘শ্যালো’ বিষয়, কিছু পত্রিকার রিপোর্ট এবং তড়িঘড়ি করে কিছু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রেস ব্রিফিং করে। গতকালেরটাও আমার কাছে সে রকম মনে হয়েছে।
টিআইবি’র রিপোর্টকে একপেশে ও পক্ষপাতদুষ্ট উল্লেখ করে নির্বাচন নয়ে এতে তোলা অভিযোগ খণ্ডন করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি আসনেই অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলিষ্ঠভাবে তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, আইনকানুন প্রয়োগ করেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আসা পর্যবেক্ষক, ওআইসি, সার্ক, কমনওয়েলথভুক্ত দেশ থেকে যারা এসেছিল সবাই যখন নির্বাচনের প্রশংসা করেছে এবং নির্বাচনের পর সবাই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বিভিন্ন দেশ নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে, সেটিকে ম্লান করার জন্যই টিআইবির এই প্রতিবেদন।
টিআইবির সমালোচনা করলেও এ ধরনের সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রতিষ্ঠান সরকারের ভুলত্রুটি উপস্থাপন করে। সরকারের সমালোচনা করে আমরা সেগুলোকে সমাদৃত করার সংস্কৃতিটাই লালন করি। কিন্তু যখন রিপোর্ট কারও পক্ষ হয়ে যায় বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয় তখন সেটি রাষ্ট্র, সমাজ ও সরকার কারও উপকারে আসে না। সেটি বিশেষ গোষ্ঠীর মুখপাত্র হয়ে দাঁড়ায়।
মতবিনিময়কালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লি সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর হবে।
মন্তব্য করুন