কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:১৩ পিএম
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন জরুরি ছিল : এডিবি

বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং অভিনন্দন বার্তা হস্তান্তর করেন। ছবি : সংগৃহীত
বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং অভিনন্দন বার্তা হস্তান্তর করেন। ছবি : সংগৃহীত

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরের বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তার (শেখ হাসিনা) প্রত্যাবর্তন খুবই প্রয়োজন ছিল।’

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৈঠককালে তিনি এসব কথা বলেন।

শাখাওয়াত মুন বলেন, এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘এডিবি খুবই খুশি।’

গিনটিং উল্লেখ করেন, এডিবি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আগামী দিনগুলোতেও আমরা একই সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। আমরা বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে সবসময় প্রস্তুত।’

তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে জ্বালানি খাত ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর আরও বলেন, তারা কক্সবাজারে জলবায়ু পুনর্বাসন প্রকল্পে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে চান। প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য জেলাগুলোতেও তাদের একই কাজ করার অনুরোধ জানান।

তিনি বাংলাদেশের জন্য এডিবির সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে বলেন, ‘আশা করি আপনারা সমর্থন অব্যাহত রাখবেন।’

শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক খাতে মূল্য সংযোজন প্রকল্প গ্রহণের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় ক্রমাগত সহায়তা করার জন্য এডিবিকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি এডিবিকে গত বছরে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতিতে পৌঁছানোর জন্যও ধন্যবাদ জানান।

বর্তমানে, এডিবি বাংলাদেশের অর্থনীতির ৭টি প্রধান খাতে ৬১টি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এরমধ্যে পরিবহন, পানি ও শহুরে অবকাঠামো এবং সেবা, জ্বালানি, মানব ও সামাজিক উন্নয়ন, কৃষি, খাদ্য, প্রাকৃতিক ও গ্রামীণ উন্নয়ন, অর্থ, সরকারি খাত ব্যবস্থাপনা এবং শাসন খাত রয়েছে।

শেখ হাসিনা এডিবিকে বাংলাদেশের অর্থনীতির গ্রাজুয়েশন চ্যালেঞ্জের চাহিদা পূরণে প্রকল্প হাতে নেওয়ার অনুরোধ করেন, যেখানে লজিস্টিক অবকাঠামোর উন্নতি এবং পরিষেবা সরবরাহকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি এবং জলবায়ু জরুরি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এডিবি’র জলবায়ু অর্থায়নের একটি বড় অংশ পাবে বলে আশা করে।

তিনি ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ২০২২-২০৪১’ তে উদ্ভাসিত জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ‘জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা’ এবং ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ এর সঙ্গে একইসাথে জলবায়ু ফলাফলকে সমর্থন করার জন্য উচ্চমানের জলবায়ু প্রকল্প এবং কর্মসূচিগুলোর একটি পাইপলাইন বিকাশে বাংলাদেশের জন্য তার অনুদান এবং রেয়াতমূলক জলবায়ু অর্থায়ন বাড়াতে এডিবিকে অনুরোধ করেন।’

তিনি এডিবি’র সাম্প্রতিক ৪০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

তিনি এডিবিকে অবহিত করেন যে ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য পাইপলাইনে বেশ কয়েকটি বাজেট সহায়তা রয়েছে যার উপর এডিবি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তাদের অনুমোদন নিশ্চিত করতে আগেই আলোচনা শুরু করতে পারে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এডিবি বাংলাদেশের অগ্রাধিকার খাতগুলোতে অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে যাতে দেশের প্রবৃদ্ধির গতি বজায় থাকে এবং একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ ভবিষ্যত রূপকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করা যায়।

তিনি বলেন, ‘এডিবি তাদের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতে প্রকল্পে অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেহেতু উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে অগ্রসর হচ্ছে, তাই এটা আকাঙ্খিত যে এডিবি এমন প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য বড় ধরনের সহযোগিতা দেবে যা ডিজিটাল গ্যাপ কমিয়ে দেবে, বাণিজ্য প্রতিযোগিতা ত্বরান্বিত করবে, উন্নত ও কম কার্বন প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে, সবুজ শক্তি উৎপাদন করবে, জলবায়ু-সহনশীল কৃষির সম্প্রসারণ ঘটাবে, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, স্মার্ট সিটি গড়ে তোলা এবং দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাবগুলোর সার্বিক এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের অতিরিক্ত আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।

এই প্রসঙ্গে, তিনি আশা করেন যে এডিবি তার পাইপলাইনে অতিরিক্ত কাউন্টারসাইক্লিক্যাল এবং পলিসি ভিত্তিক ঋণদান (পিবিএল) সহায়তা ব্যবস্থা রাখবে যাতে বাংলাদেশ প্রয়োজনের ক্ষেত্রে অবিলম্বে সেগুলো ব্যবহার করতে পারে।

অ্যাম্বাসেডর এ্যাট লার্জ মো. জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন সহযোগী।

১৯৭৩ সাল থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতি এডিবি’র প্রতিশ্রুতি ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে; যার মধ্যে ঋণের পরিমাণ ৩১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং অনুদানের পরিমাণ ৫৭১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সময়ের মধ্যে, এডিবি এর মোট প্রদেয় ছিল ২৩.২ বিলিয়ন ডলার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশে নজর জিনপিংয়ের

‘উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে আ.লীগ সরকার’

২৩ নভেম্বর: ইতিহাসের আজকের এই দিনে

ঢাকার যেসব এলাকায় আজ মার্কেট বন্ধ

আজকের নামাজের সময়সূচি

প্রথম দিনে উইন্ডিজ তুলল ২৫০ রান

গাঁজা-জাল নোটসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ

উইন্ডিজের প্রতিরোধ ভেঙে বাংলাদেশের স্বস্তি

টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস / ট্রাম্প ব্যবসায়ী, আমরাও একজন ব্যবসায়িক অংশীদার চাই

১০

২০২৪ সালের হাইয়েস্ট কালেকশন দরদের : শাকিব 

১১

নায়িকা পরীমনির প্রথম স্বামী নিহত

১২

রাজনীতিতে আ.লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে হবে: নুর

১৩

নির্বাচন যত দ্রুত হবে, সমস্যা তত কমে আসবে : মির্জা ফখরুল

১৪

খাসজমির দখল নিয়ে সংঘর্ষে দুজন নিহত

১৫

মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ক্রীড়াঙ্গন অন্যতম একটি মাধ্যম : আমিনুল হক 

১৬

তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল

১৭

আহত রানার পাশে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’

১৮

ফেসবুকে দাবি ‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, যা বলছে ফ্যাক্ট চেক

১৯

একদিকে প্রশান্তি, অশান্তিও বিরাজ করছে: শামা ওবায়েদ

২০
X